ঘাড়ের ব্যথা কমছে না, ওষুধ ছাড়াই নিরাময়ের উপায় জেনে নিন। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ঘাড়, কাঁধের যন্ত্রণা এক বার শুরু হলে সারার নাম করে না। কম্পিউটার বা ল্যাপটপে একটানা কাজ করেন যাঁরা অথবা দীর্ঘ সময় ধরে ঘাড় নিচু করে মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করেন, তাঁরা এমন ব্য়থার সঙ্গে পরিচিত। ব্য়থাও সামান্য নয়। ঘাড় ঘোরাতে গেলেই মনে হয় কেউ কশাঘাত করল। ঘুম থেকে ওঠার সময়ে ঘাড় শক্ত হয়ে যায় যখন তখন। সেই ব্যথা ঘাড় থেকে কাঁধেও নামে। ফলে কাঁধের পেশিতেও টান ধরতে থাকে। অনেকেই ভাবেন, ব্য়থানাশক ওষুধ খেলেই ব্যথা কমে যাবে। আদতে তা হয় না। সাময়িক ভাবে যন্ত্রণা কমলেও, কিছু দিন পরে তা আবার ফিরে আসে। এমন ব্যথা সারানোর উপায় কী?
ঘাড়ে ব্যথার কারণ অনেক
যদি ভাবেন, ঘাড়-কাঁধে এমন অসহ্য ব্যথা কেন হচ্ছে, তা হলে বুঝতে হবে এর সঙ্গে রোজের কিছু অভ্যাস জড়িত। যেমন—
১) ঘুমের ভঙ্গি, বসার ভঙ্গি হতে পারে ব্যথার কারণ।
২) দীর্ঘ ক্ষণ কম্পিউটারের সামনে বসে কাজ করা।
৩) ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাড় নিচু করে মোবাইল দেখা।
৪) খুব ভারী জিনিস তোলা বা বহন করা।
৫) হঠাৎ করে খুব কঠিন ব্যায়াম অভ্যাস করতে যাওয়া, এতে পেশিতে টান ধরতে পারে।
৬) খেলাধুলো করার সময় বা কোনও দুর্ঘটনার কারণে ঘাড়ে আঘাত লাগলে তার থেকে ব্যথা হবে।
৭) অনেক সময়ে দেখা যায়, ঘাড়ের হাড়ের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হলে বা স্পাইনাল স্টেনোসিসের কারণে মেরুদণ্ডের ভিতরের ক্যানাল সরু হয়ে গেলে স্নায়ুর উপর চাপ বাড়ে, তখন ব্যথা হতে পারে।
ব্যথা কমবে কী উপায়ে?
১) সঠিক পদ্ধতিতে বসে কম্পিউটার দেখা, সঠিক ভঙ্গিমায় ঘুমনো জরুরি।
২) গরম ও ঠান্ডা সেঁক দিলে ব্যথা নিরাময় হতে পারে। প্রথম ১০-১৫ মিনিট ঠান্ডা সেঁক দিতে হবে। একটি পরিষ্কার রুমালে কয়েকটি বরফকুচি মুড়ে নিয়ে ব্য়থার জায়গায় আলতো করে চেপে রাখুন। এর পরের ১৫ মিনিট গরম সেঁক দিতে হবে। এই ভাবে পর্যায়ক্রমে করলে ব্যথা কমতে পারে।
৩) ঘুমনোর সময়ে কাঁধের নীচে আরামদায়ক বালিশ রাখুন, এতে ব্যথা অনেক কমে যাবে।
৪) ল্যাভেন্ডার বা পেপারমিন্ট তেলের মতো এসেনশিয়াল তেল দিয়ে হালকা হাতে ঘাড় ও কাঁধে মালিশ করতে পারেন।
৫) কিছু ব্যায়ামেও ব্যথা কমতে পারে, যেমন— বালাসন। হাঁটু মুড়ে গোড়ালির উপর বসুন। এ বার সামনের দিকে ঝুঁকে যান। এমন ভাবে সামনে ঝুঁকতে হবে, যাতে বুক গিয়ে উরুতে ঠেকে। মাথা মেঝেতে রাখুন। আর হাত দুটো সামনের দিকে প্রসারিত করে রাখুন। ঘাড় ও পিঠের ব্যথা কমাতেও এই আসনের জুড়ি নেই।
অনেক ক্ষণ এক দিকে তাকিয়ে থাকলে ঘাড়ের পেশিগুলি নমনীয়তা হারায়। তাই দীর্ঘ সময় এক দিকে তাকিয়ে থাকলেও মাঝে মাঝে মাথা দু’দিকে ঘুরিয়ে নিন। ৫-৭ সেকেন্ড এই অনুশীলন করতে পারেন।
ঘাড় এক বার ঘড়ির কাঁটার দিকে ৩৬০ ডিগ্রি ও বিপরীতে একই ভাবে ঘোরান। এতে ঘাড়ের পেশি নমনীয় হবে, ব্যথা কমবে।