Chia Seeds Vs Flax Seed

চিয়া এবং তিসি, উপকারিতায় কেউ কম যায় না, আপনার জন্য ভাল কোনটি, কী ভাবে বুঝবেন?

স্বাস্থ্যসচেতন মানুষজনের মধ্যে তিসি এবং চিয়া বীজ খাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। দুই বীজই উপকারী বলে এত কদর। কিন্তু দু’টির মধ্যে আপনার জন্য ভাল কোনটি, কী ভাবে বুঝবেন?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২৫ ১৬:৩৮
Share:

চিয়া না তিসির বীজ, শরীর ভাল রাখতে বেছে নেবেন কোনটি? ছবি: সংগৃহীত।

গত কয়েক বছরে চর্চিত দুই নাম, চিয়া এবং তিসির বীজ। বছর দুই আগেও ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ছাড়া যে বীজ পাওয়াই যেত না, সেই বীজ এখন মেলে পাড়ার মুদিখানার দোকানেও।

Advertisement

তার কারণ একটাই, পুষ্টিগুণ। চিয়া এবং তিসি বা ফ্ল্যাক্স সিডের পুষ্টিগুণের কথা যতই চাউর হচ্ছে, ততই এ নিয়ে উৎসাহ বাড়ছে। মেদ ঝরাতে, সুস্থ থাকতে অনেকেই সকাল শুরু করছেন চিয়া ভেজানো জল বা তিসির বীজ স্মুদিতে মিশিয়ে খেয়ে। উপকারী দু’টিই, কিন্তু পুষ্টিগুণে এগিয়ে কে? দু’টি বীজের মধ্যে একটি বাছতে হলে কোনটি খাবেন?

পুষ্টিগুণে কে, কাকে টেক্কা দেয়?

Advertisement

১০০ গ্রাম চিয়া বীজে শক্তির পরিমাণ ৪৮৬ কিলোক্যালোরি, ফ্যাট ৩০.৭ গ্রাম, প্রোটিন ১৬.৫ গ্রাম, ৩৪.৪ গ্রাম ফাইবার, ম্যাগনেশিয়াম ২৯০-৩৩৫ মিলিগ্রাম, ক্যালশিয়াম ৫০০-৬৩১ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৬০০ মিলিগ্রাম, ১৬.৫ গ্রাম প্রোটিন। এ ছাড়াও থাকে আয়রন, জ়িঙ্ক, কপার, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ই এবং সি।

১০০ গ্রাম তিসি বীজে ক্যালোরির পরিমাণ ৫৩৪ কিলোক্যালোরি, ফ্যাট ৪২ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট ২৯ গ্রাম, ১৮ গ্রাম প্রোটিন, ২৭.৩ গ্রাম ফাইবার। এ ছাড়া থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, ভিটামিন বি।

পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন, পুষ্টিগুণ দুই বীজেই যথেষ্ট। মাত্রায় সামান্য একটু তারতম্য আছে। চিয়াবীজে ফাইবার বেশি, তিসিতে প্রোটিন মেলে খানিক বেশি। তা ছাড়া, চিয়া বীজে ভিটামিন, কয়েক প্রকার খনিজের মাত্রাও একটু বেশি থাকে। তিসির বীজে ভিটামিন বি১, কপার, আয়রন ইত্যাদি একটু বেশি রয়েছে। কিন্তু তফাত এতই কম যে, সেগুলিকে তেমন ভাবে ধরা যায় না।

চিয়া বীজের উপকারিতা

ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড, নানা রকম প্রোটিন, ভিটামিন এবং খনিজে ভরপুর এই বীজ। ফাইবার যথেষ্ট থাকায় নিয়মিত চিয়া খেলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়। এ ছাড়াও এই বীজের মধ্যে থাকে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। চিয়া বীজ রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতেও পারে এই বীজ।

তিসি বীজের উপকারিতা

তিসি বীজে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খেলে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমবে। তিসি বা ফ্ল্যাক্সসিড হল ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের উৎস। এ ছাড়া তিসির বীজে রয়েছে আলফা লিনোলেনিক অ্যাসিড। যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে সামগ্রিক ভাবে হৃদ্‌যন্ত্র ভাল রাখে। এমনকি, ক্যানসারের ঝুঁকিও কমে এই বীজে। এতেও ফাইবার থাকে, যা হজমের জন্য ভাল। অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভাল রাখে।

আপনার জন্য উপযুক্ত কোনটি?

শম্পা বলছেন, ওজন কমাতে চাইলে চিয়া বীজ ভাল। এতে ফাইবার বেশি। এই বীজ বেসাল মেটাবলিক রেট বা বিএমআর বাড়িয়ে দেয়। ফলে ওজন ঝরে দ্রুত। তা ছাড়া এতে ভিটামিন এবং খনিজও যথেষ্ট পরিমাণে মেলে। বীজে অ্যালার্জি না থাকলে চিয়া বীজ খেতে কোনও সমস্যা নেই। তবে খেতে হবে পরিমিত। ১ থেকে ২ চা-চামচই যথেষ্ট।

অন্য দিকে, তিসির বীজের প্রোটিনের মাত্রা বেশি। এটিও শরীর ভাল রাখতে উপকারী। যে কোনও প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ মানুষই এটি খেতে পারেন। তবে অনেকের বীজ সহ্য হয় না, তাঁরা এড়িয়ে যাবেন।

এ ছাড়া কিডনির সমস্যা থাকলে, অন্তঃসত্ত্বা মহিলা এবং ক্যানসারের রোগীরা তিসি বীজ ইচ্ছামতো খেতে পারেন না। খেতে হলেও চিকিৎসকের মতামত জরুরি। অন্য দিকে, রক্তচাপ কম থাকলে বা কেউ রক্ত তরল করার ওষুধ খেলে চিয়া বীজ খাওয়া যায় না। খেতে হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement