কোন উপায়ে উধাও হবে অ্যাসিডিটি? ছবি : সংগৃহীত।
রাতে একটু ভারী খাওয়াদাওয়া হলেই আগেভাগে একটু এনজ়াইম জাতীয় ওষুধ খেয়ে নেন। কারণ আপনার বিশ্বাস, আপনার পেটের পক্ষে ভারী খাবার হজম করা সম্ভব নয়। তার সাহায্য দরকার।
আবার এমনও অনেকে রয়েছেন, যাঁরা সামান্য তেল-মশলাদার খাবার খেলেই অ্যাসিডিটির সমস্যায় ভোগেন। তখন তাঁদের সহায় হয় নানা ধরনের অ্যান্টাসিড বা প্রাজ়ল জাতীয় ওষুধ। কিন্তু ওষুধ তো এমন সমস্যার স্থায়ী সমাধান হতে পারে না। এর জন্য সমস্যা মূল থেকেই দূর করা। আর তারই একটি উপায় জানিয়েছেন স্নায়ুর চিকিৎসক কল্লোল দে।
নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা একটি ভিডিয়োয় তাঁকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘পেটের সমস্যায় ভোগেন? অ্যাসিডিটির জন্য নানা ধরনের ‘প্রাজ়ল’ জাতীয় ওষুধ খান? তবে একটি প্রাচীন কালের সমাধান মেনে দেখতে পারেন। যাতে পেটের সমস্যা উধাও হবে।’’
কী ভাবে বানাবেন?
চিকিৎসক জানাচ্ছেন এক কাপ হালকা গরম জলে চার পাঁচটি লবঙ্গ ফেলে ভিজতে দিন মিনিট দশেক। এর সঙ্গে এক টুকরো আদাও দিয়ে দিতে পারেন। দশ মিনিট পরে ওই পানীয়টিতে লবঙ্গ আর আদার গুণাগুণ চলে আসবে। চিকিৎসক বলছেন ‘‘এর পরে ওই জল আস্তে আস্তে চুমুক দিয়ে খান। নিয়মিত খেলে হজম-অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর হবে।’’
কী ভাবে এটি সাহায্য করবে?
১। লবঙ্গে আছে ইউজেনল। চিকিৎসক জানাচ্ছেন ওই ইউজেনল হল অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটারি এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। তাই এটি পেটের পক্ষে ভাল। অন্ত্র ভাল রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া লবঙ্গে অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল উপাদানও রয়েছে। যা অন্ত্রে সংক্রমণের ঝুঁকিও কমায়। ফলে হজমের সমস্যা কমে।
২। আদার প্রদাহ নাশক গুণ প্রবল। যা খাদ্যনালীতে হওয়া প্রদাহ কমায়। এই প্রদাহই অধিকাংশ ক্ষেত্রে অ্যাসিডিটির কারণ। ফলে প্রদাহ কমলে অম্বলের সমস্যাও কমে।
৩। লবঙ্গে রয়েছে কারমিনেটিভ উপাদান। এই কারমিনেটিভ উপাদানে থাকে এক ধরনের তেল যা ক্ষুদ্রান্ত্র এবং বৃহদন্ত্রের পেশি সংকোচন প্রসারণে সাহায্য করে। অন্ত্রের পেশি সক্রিয় হলে তা অন্ত্রের ভিতরে জমে থাকা গ্যাস এবং টক্সিন জাতীয় পদার্থকে ঠেলে বাইরে বার করে দিতে সাহায্য করে। ফলে গ্যাস, পেট ফাঁপার সমস্যাও কমে।
৪। আদা এবং লবঙ্গ— উভয়ই হজমকারক উৎসেচক বা এনজ়াইম নিঃসরণে সাহায্য করে। যা খাবার ভেঙে শরীরে যথাযথ পুষ্টি পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি হজমে সাহায্য করে।
৫। গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, গা গুলোনো ভাব কমাতেও আদা আর লবঙ্গের এই জল উপকারী।
৬। চিকিৎসক কল্লোল জানাচ্ছেন, পেট ভাল থাকলে তা মস্তিষ্ককেও ভাল রাখতে সাহায্য করে। তাই প্রতি দিন এই পানীয় খেলে তার প্রভাবে মস্তিষ্কও সক্রিয় থাকবে। তবে তিনি এই পানীয় খালি পেটে খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। আর নির্দিষ্ট পরিমণের থেকে বেশি খেতেও বারণ করছেন।