প্রয়াত অভিনেত্রী শেফালী জরীওয়ালা। ছবি: সংগৃহীত।
শেফালী জরীওয়ালার মৃত্যুর কারণ উদ্ঘাটনের প্রক্রিয়া শেষ হল না এখনও। মাত্র ৪২ বছর বয়সে আকস্মিক ভাবে প্রাণ হারালেন কেন বলিউড তারকা, তা নিয়ে সকলের মনে ধন্দ, আতঙ্ক। ময়নাতদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট এখনও প্রকাশ পায়নি। তবে প্রাথমিক অনুমানের তালিকায় অনেক কারণ একজোট হয়েছে। বার্ধক্য ঠেকানোর চিকিৎসা করিয়ে, পরামর্শ ছাড়া নানাবিধ ওষুধ খেয়ে, খাবারে বিষক্রিয়া হয়ে, অথবা উপবাসের ফলে রক্তচাপ নেমে যাওয়ার ফলে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে, এগুলির মধ্যেই কোনও কারণে মৃত্যু হয় বলে জানা যাচ্ছে।
ফরেন্সিক দলের বয়ান অনুযায়ী, বার্ধক্যরোধক ওষুধ হিসেবে গ্লুটাথিয়ন (ত্বক ফর্সা করা, ডিটক্সিফিকেশন ইত্যাদিতে কার্যকরী), ভিটামিন সি-র ইঞ্জেকশন, অম্বল কমানোর ওষুধ, ইত্যাদি প্রচুর ওষুধ পাওয়া গিয়েছে। আর তার পরই শেফালীর এক বান্ধবী পূজা ঘাই জানিয়েছেন, ঘটনার দিন সত্যনারায়ণ পুজো উপলক্ষে উপবাস করার পর ভিটামিন সি-র ওষুধ নিয়েছিলেন আইভি (ইন্টারভেনাস, যা শিরা দিয়ে বাহিত হয়) ড্রিপের মাধ্যমে।
ভিটামিন সি আইভি ড্রিপ কি প্রাণঘাতী?
মধুমেহ চিকিৎসক অভিজ্ঞান মাঝি বলছেন, ‘‘উচ্চ মাত্রাতেও ভিটামিন সি নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কারণ, এটি ‘ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ দ্বারা অনুমোদিত। বেশ কিছু রোগের ক্ষেত্রে এটিকে সুপারিশ করা হয়। সুতরাং ভিটামিন সি নিয়ে কারও মৃত্যু হওয়াটা খুবই বিরল ঘটনা। তবে মারাত্মক অ্যালার্জি থেকে অ্যানাফাইল্যাক্সিস হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মৃত্যু ঘটতেই পারে। আমরা চিকিৎসকেরা মারিক প্রোটোকল মেনে ভিটামিন সি সুপারিশ করি। যা সেপসিসের মতো রোগ সারাতে ব্যবহৃত হয়। আসলে ভিটামিন সি ফ্রি র্যাডিক্যালগুলিকে মেরে দেয়। তাই এর অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট বৈশিষ্ট্য বার্ধক্য, সেপসিস এবং স্কার্ভির মতো রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।’’
চিকিৎসকের মতে, যা ঘটতে পারে তা হল, ভিটামিন সি অ্যানাফাইল্যাক্টিক প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে। অথবা শিরায় ভিটামিন সি ইঞ্জেকশন নেওয়ার সময়ে বিষাক্ত পদার্থ শরীরে প্রবেশ করেছিল। কিংবা হাইপোগ্লাইসেমিয়া (রক্তে শর্করার মাত্রা কমে যাওয়া), বা কার্ডিয়াক অ্যারিদমিয়া (হার্টের অনিয়মিত স্পন্দন) শেফালীর মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ হতে পারে। কিন্তু বাড়িতে যে কোনও আইভি থেরাপিই ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এটি অ্যানাফাইল্যাক্সিস সৃষ্টি করতে পারে। তাই যদি হাসপাতালের সেটআপে আইভি ভিটামিন সি নিতেন, তা হলে এর কারণে তাঁর প্রাণের ঝুঁকি থাকত না। অ্যানাফাইল্যাক্সিস হলে বাড়িতে চিকিৎসা করা সম্ভব নয়।