কলা খেলেও বাড়বে না সুগার! ছবি: এআই।
কলার স্বাস্থ্যগুণ অনেক। হৃদ্যন্ত্র ভাল রাখা থাকে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ— সবেতেই কলার ভূমিকা অনেক। মানসিক অবসাদে ভুগলেও রোজ কলা খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। কলায় কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো সমস্যা কমে। কলায় থাকা আয়রন রক্তাল্পতার মতো রোগের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে। ট্রিপটোফ্যান, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন বি-র মতো একাধিক স্বাস্থ্যগুণ সমৃদ্ধ এই ফল শরীরের যত্ন নেয়। গুণ আছে অনেক, তবে কোন ধরনের কলা কারা খেলে বেশি উপকার পাবেন, সে খবর রাখেন কি?
কাঁচকলা: এই ধরনের কলা প্রিবায়োটিকের ভাল উৎস। প্রিবায়োটিক হল এক ধরনের ফাইবার জাতীয় উপাদান। এটি পাচিত হয় না, তবে অন্ত্রে ভাল ব্যাক্টেরিয়ার সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে। হজম ক্ষমতা বৃদ্ধিতে এবং পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। ফাইবারে ভরপুর এই কলা। কাঁচকলায় চিনির পরিমাণ খুবই কম থাকে। যাঁরা পেটের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের ডায়েটে এই কলা রাখা যেতেই পারে।
হালকা সবুজ কলা: পুষ্টিবিদদের মতে, এই ধরনের কলা খাওয়া সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর। অনেকেই সুগার বেড়ে যাওয়ার ভয়ে কলা খান না। তাঁরা এই ধরনের কলা খেতেই পারেন। এই কলা যে কেবল পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখে তা নয়, রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। এই কলা ফাইবারেরও ভাল উৎস।
পাকা কলা: এই ধরনের কলায় রেজিস্ট্যান্স স্টার্চের মাত্রা কম থাকে। তাই সুগারের রোগীদের জন্য এই কলা না খাওয়াই ভাল। তবে এই ধরনের কলায় ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের মাত্রা অনেকটাই বেশি থাকে। এই কলা হজম করা সহজ। শরীরচর্চার আগে প্রি-ওয়ার্কআউট স্ন্যাক্স হিসাবে এই কলা খাওয়া যেতে পারে।
অতিরিক্ত পাকা কলা: কলা বেশি পেকে গেলে খোসার গা জুড়ে বাদামি রঙের ছোপ পড়ে। এই কলা অতিরিক্ত মিষ্টি হয়। স্মুদি বানানোর জন্য বা বেকিংয়ের কাজে এই কলা ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ধরনের কলায় অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের মাত্রা অনেকটাই বেশি। তবে কলা পেকে গেলে ফাইবারের মাত্রা অনেকটাই কমে যায়। সুগারের রোগীদের এই কলা না খাওয়াই ভাল।
কলায় পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং ফাইবারের পরিমাণ অনেক বেশি। এগুলি শরীরের জন্য নিঃসন্দেহে উপকারী। তবে খালি পেটে এই ফল খেলে কিন্তু উপকারের চেয়ে অপকারের সভাবনা বেশি। পাকা কলায় চিনির পরিমাণও অনেক বেশি। অনেক ক্ষণ উপোস থাকার পর কলা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। ফলে দিনের শুরুতে কলা খাওয়ার অভ্যাস ডায়াবিটিসের কারণ হতে পারে। কলা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও কমায়। পাশাপাশি, খালি পেটে কলা খেলে কিন্তু এই সমস্যা উল্টে বেড়ে যেতে পারে। পুষ্টিবিদেরা জানাচ্ছেন, সকালে কলা খেতে পারেন। তবে অবশ্যই খালি পেটে নয়। কিছু না খেয়ে প্রথমেই কলা খেলে অ্যাসিড হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ও্টস, পাউরুটি বা অন্য কোনও খাবার খাওয়ার পর কলা খেতে পারেন। তা হলে সমস্যা নেই। কিংবা কলা, ওটস, বেরি, মেপল সিরাপ, কাঠবাদাম দিয়ে একটি স্মুদিও বানিয়ে নিতে পারেন। শরীর ভিতর থেকে সুস্থ থাকবে।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। ডায়াবিটিস, হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপের মতো ক্রনিক অসুখ থাকলে ডায়েটে বদল আনার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।