Fasting blood test rules

খালি পেটে সুগার মাপার আগে কি কফি খাওয়া উচিত? লিকার চা খেলে কী হবে?

খালি পেটে রক্ত পরীক্ষার আগে অনেকেই লিকার চা খেয়ে নেন। যাঁদের সকালে কফি খাওয়ার অভ্যাস আছে, তাঁরা ভাবেন এক কাপ কফিতে আর কী ক্ষতি হবে। কিন্তু রক্ত পরীক্ষার আগে চা বা কফি খাওয়া কি ঠিক?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৫ ১৫:৩০
Share:

রক্ত পরীক্ষার আগে চা-কফি খেলে কী হবে? প্রতীকী ছবি।

সকালে খালি পেটে রক্ত পরীক্ষা করতে হলে তার আগে জল ছাড়া কিছু খেতে বারণই করা হয়। কিন্তু সকালে উঠে চা বা কফি খাওয়ার ইচ্ছা জাগেই। অনেকেই ভাবেন, এক চাপ লিকার চা বা নিদেনপক্ষে কালো কফি খেয়ে নিলে কোনও সমস্যা হবে না। কিন্তু তা কি ঠিক? খালি পেটে সুগার টেস্ট হোক বা অন্য যে কোনও রক্ত পরীক্ষা, তার আগে চা বা কফির মতো পানীয় খাওয়া ভাল না খারাপ?

Advertisement

এ নিয়ে নানা রকম মত রয়েছে। অনেক চিকিৎসকই বলেন, কালো কফিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট আছে, এটি খেলে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি কমে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। তা এক দিক দিয়ে ঠিকই। কিন্তু কী পরিমাণে কফি খাচ্ছেন, তার উপরে সবটাই নির্ভর করছে। যখন আপনি ‘ফাস্টিং ব্লাড সুগার টেস্ট’ করাবেন বলে ভাবেন, তার আধ ঘণ্টা বা এক ঘণ্টা আগে যদি এক কাপ কড়া করে কালো কফি বা হালকা চিনি দিয়ে লিকার চা খেয়ে নেন, তা হলে কী কী হতে পারে সে নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র একটি রিপোর্ট রয়েছে।

প্রথমত, সুগার মাপার ৩০ মিনিট আগে যদি কেউ দুধ-চিনি দিয়ে কফি খান, তা হলে প্রতি ডেসিলিটারে শর্করার মাত্রা ১০০ থেকে ১২৫ মিলিগ্রাম দেখাতে পারে। অর্থাৎ দেখাবে, আপনি প্রি-ডায়াবেটিক। রক্তে শর্করার মাত্রা আচমকা বেড়ে যাবে এবং টেস্টের রিপোর্ট ভুল আসবে। এখানে উল্লেখ্য, রক্তে শর্করার মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ১০০ মিলিগ্রাম বা তার কম হওয়ার মানে হল সুগার নেই, সেই পরিমাপই ১০০-১২৫ মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার হলে তা প্রি-ডায়াবেটিক এবং ১২৬ মিলিগ্রামের বেশি হলে ডায়াবেটিক।

Advertisement

দ্বিতীয়ত, যদি কালো কফি বা লিকার চা খান, তা হলেও টেস্টের রিপোর্টে ভুলভ্রান্তি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে। কারণ, ক্যাফিন সাময়িক ভাবে ট্রাইগ্লিসারাইড ও লাইপোপ্রোটিনের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। সে ক্ষেত্রেও রিপোর্ট ভুল আসতে পারে।

তৃতীয়ত, কফি বা চায়ে পলিফেনল থাকে, যা আয়রন শোষণে বাধা দেয়। যদি খালি পেটে সুগার, আয়রন ও লিপিড প্রোফাইল টেস্ট করাতে চান, তা হলে কফি বা চা কোনও কিছুই খাওয়া ঠিক হবে না।

আরও একটি সমস্যা হতে পারে। কফি বা চা বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেললে তা ভিটামিন বি১২ শোষণেও বাধা দেবে। আর ভিটামিন বি১২-এর ঘাটতি হলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। ফলে টেস্টের রিপোর্ট ঠিকমতো আসবে না।

ক্যাফিন কেবল কফিতে নয়, চায়েও কিন্তু থাকে। ১০০ গ্রাম কালো কফিতে যদি ক্যাফিনের মাত্রা ৯৫-২০০ মিলিগ্রাম হয়, তা হলে কালো চায়ে তার পরিমাণ হবে ১৪-৭০ মিলিগ্রামের মতো। আর ক্যাফিন শরীরে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে রক্তে মিশে যায়। ৩৫ মিনিটের মধ্যে তা রক্তের মাধ্যমে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। ক্যাফিন শরীর থেকে সম্পূর্ণ ভাবে বেরিয়ে যেতে ৮-১০ ঘণ্টা সময় লাগে। তাই কফি বা চা যদি খেতেই হয়, তা হলে রক্ত পরীক্ষার ১২ ঘণ্টা আগে খেতে হবে। তার পরে নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement