অল্প খরচেই ওজন কমবে? ছবি: শাটারস্টক।
ওজন বেশি হলেই হাজারটা রোগ শরীরে বাসা বাঁধে। অনেকেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডায়েট শুরু করেছেন। ডায়েট করার সময় অনেকে পুষ্টিবিদের পরামর্শ মেনে করেন, অনেকে আবার নেটমাধ্যম থেকে কিংবা বলিউড বা টলিউডের কোনও নায়ক-নায়িকাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ডায়েট করতে শুরু করেন।
অনেকের ধারণা, পুষ্টিবিদদের কাছে যাওয়া মানেই হরেক রকম দামি দামি খাবার, ফল রোজের খাদ্যতালিকায় রাখতে হবে। পকেটে টান পড়ার ভয়েও অনেকে পুষ্টিবিদদের কাছে যেতে চান না। পুষ্টিবিদ পম্পিতা বন্দোপাধ্যায় বললেন, ‘‘ডায়েট করলেই আপনার প্রচুর টাকা খরচ হয়ে যাবে, সবার আগে এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে আমাদের। সাধারণ বাড়িতে যা খাবার খাওয়া হয়, সেই ভাত, ডাল, মাছ খেয়েও কিন্তু ডায়েট করা যায়। তবে কতটা খাচ্ছেন, কখন খাচ্ছেন আর কী ভাবে খাচ্ছেন, তা নজরে রাখতে হবে। ক্যালোরি মেপে খাওয়াটাই ডায়েটের মূলমন্ত্র। এ ক্ষেত্রে বাইরের খাওয়াদাওয়া বন্ধ রেখে বাড়িতে বানানো খাবার খেলেই কিন্তু অনেকটা কাজ হয়ে যায়।’’
সাদা ভাত নয়, ডায়েট করছি মনেই ব্রাউন রাইস খেতে হবে— এমন কিন্তু নয়। ব্রাউন রাইস শরীরের পক্ষে বেশি ভাল, তবে সাদা ভাত খেয়েও ওজন ঝরানো যায়। মেপে খেলেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। যাঁদের ওজন প্রায়শই অনেকটা বেড়ে যায়, তাঁদের মাঝেমাঝে ভাত খাওয়া কিছু দিনের জন্য বন্ধ রাখতে বলা হয় বটে, তবে ব্রাউন রাইস না খেলে ওজন কমবে না, এমন নয়।
স্বাস্থ্যকর খাবার মানেই তার দাম আকাশছোঁয়া, মধ্যবিত্তের ধরাছোঁয়ার বাইরে— এমন ভেবে থাকেন অনেকেই। কিন্তু পুষ্টিবিদরা বলছেন, এ ধারণা ভুল। শরীরের জন্য উপকারী কিছু খাবার হয়তো সত্যিই তুলনামূলক ভাবে দামি, কিন্তু সব নয়। এমন অনেক সাধারণ খাবারও রয়েছে, যেগুলি অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। ওজন ঝরানোর জন্য ডায়েট করলে যে খুব বেশি বাজেটের কথা মাথায় রাখতে হয়, তা নয়। বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে পরিকল্পনা করলে স্বল্প বাজেটেও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া সম্ভব। জেনে নিন, পকেটের উপর বাড়তি বোঝা না চাপিয়ে কী ভাবে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস করবেন।
আগে থেকে পরিকল্পনা: ডায়েট করার সময় নিজেদের ইচ্ছামতো খাবার খাদ্যতালিকায় রাখলে চলবে না। চাই পুষ্টিবিদের পরামর্শ। পুষ্টিবিদকে আগে থেকেই বলে রাখুন বাজেটের কথা মাথায় রেখে খাদ্যতালিকা প্রস্তুত করে দিতে।
মরসুমি শাকসব্জি,ফল খান: মরসুমি শাকসব্জি সস্তা, তাজা ও পুষ্টিকর হয়। অনলাইনে মরসুমি ফল, শাকসব্জির উপর প্রায়শই ছাড় দেওয়া হয়। চাইলে অনলাইনে বরাত দিতেই পারেন।
একসঙ্গে অনেকটা কেনাকাটা করুন: বাজারে গিয়ে একসঙ্গে অনেকটা ফল-শাকসব্জি কিনলে দাম কম পড়ে। তবে শাকসব্জি, ফল ফ্রিজে যেন ভাল করে মজুত করা হয়, সে দিকে নজর রাখতে হবে। নইলে পচে যেতে পারে।
নামীদামি সংস্থার জিনিস নয়: আঞ্চলিক বাজার বা অনলাইন থেকে কেনাকাটা করাই শ্রেয়। নামীদামি শপিং মল থেকে খাবার জিনিস কিনলে দাম অনেকখানি বেশি পড়ে। আঞ্চলিক বাজারে কোনও দ্রব্যের মুদ্রিত দামের উপরেও ছাড় দেওয়া হয়, মল-এ গিয়ে কেনাকাটা করলে সেই সুযোগ থাকে না।
স্বাস্থ্যকর জলখাবারের দিকে নজর: ডায়েট করার সময় সবচেয়ে বেশি মুশকিলে পড়তে হয় হালকা খিদে পেলে কী খাবেন, সেই ভেবে। সে ক্ষেত্রে নামীদামি সংস্থার প্রোটিন বার, আমন্ড থাকে অনেকের পছন্দের তালিকায়। তবে একটা নির্দিষ্ট বাজেটে চলতে হলে মাখানা, ফল, ছোলা, অঙ্কুরিত মুগ রাখতে পারেন সন্ধ্যার জলখাবারে।