প্রতীকী চিত্র। ছবি: সংগৃহীত।
দৈনন্দিন জীবনে কাজের ব্যস্ততায় অনেক সময়েই নিজের জন্য আলাদা করে সময় বার করা যায় না। ফলে একঘেয়ে জীবনে ভিড় করে মনখারাপ। মনে হয়, জীবন থেকে সুখানুভূতিগুলি হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু মনোবিদদের দাবি, জীবনে খুশি থাকা বা আনন্দ উপভোগ করার জন্য পাহাড় ভাঙার প্রয়োজন নেই।
সম্প্রতি একটি গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, বিজ্ঞানভিত্তিক দৈনন্দিন কয়েকটি ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে জীবনে আনন্দ উপভোগ করা সম্ভব। এই গবেষণায় ১৬৯ দেশের ১৭ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। তাঁরা ইমেলের মাধ্যমে তাঁদের দৈনন্দিন পছন্দের বিভিন্ন কাজের খতিয়ান গবেষকদের জানিয়েছিলেন। কাজগুলি করতে তাঁদের ১০ মিনিটের বেশি সময় লাগেনি।
গবেষকেরা ওই আনন্দদায়ক কাজগুলির আগে এবং পরে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। সকলেই জানিয়েছেন যে, কাজগুলি করার পর তাঁরা আরও বেশি খুশি হয়েছেন। কেউ আরও বেশি আনন্দ উপভোগ করেছেন। তার ফলে তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যেরও উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটেছে। অন্যতম গবেষক মায়ামি ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ডারউইন গেভারার কথায়, ‘‘দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোট পরিবর্তনের মাধ্যমে ব্যক্তি কোনও বড় লক্ষ্যপূরণ করতে পারেন।’’
কয়েকটি পরামর্শ
১) ধীরে চলো: ব্যস্ত জীবনে কখনও কখনও ধীরে পদক্ষেপ করতে হয়। তার ফলে অনেক সমস্যা দূর হতে পারে। তাই কোনও জিনিস বা ঘটনার প্রতি একাগ্রতা তৈরি হওয়া প্রয়োজন। অপেক্ষা করে তার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। পাশাপাশি, অনুভূতিগুলিকে খোলা মনে ব্যক্ত করা উচিত। যেমন, এই সমীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের একটি সুন্দর পর্বতের ভিডিয়ো দেখে তাঁদের মনের অনুভূতি লিখতে বলা হয়।
২) কৃতজ্ঞতাবোধ: দেখা গিয়েছে, কতৃজ্ঞতাবোধ বা ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে মানসিক প্রশান্তি আসে। কারণ, কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করলে বিপরীত ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া মনের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করে। এই পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের ৮টি বিষয় লিখতে বলা হয়, যার জন্য তাঁরা কাউকে কৃতজ্ঞতা জানাতে ইচ্ছুক।
৩) পরোপকার: দুঃস্থকে কোনও কিছু দান করা বা কারও উপকার করার মাধ্যমে মনের মধ্যে সস্তুষ্টি তৈরি হয়, যা পরোক্ষে আনন্দ দেয়। অংশগ্রহণকারীদের এমন ৫ জন ব্যক্তির কথা লিখতে বলা হয়, যাঁদের তাঁরা উপকার করতে ইচ্ছুক।
৪) আনন্দের ভাগীদার: বর্তমান সময়ে হিংসা এবং বিদ্বেষের পরিমাণ বেড়েছে। কিন্তু দেখা গিয়েছে, অন্যের আনন্দ ভাগ করে নিতে পারলে বা তার মধ্য শামিল হলে মন ভাল থাকে। এই গবেষণার ক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারীদের তাঁদের পছন্দের কোনও ব্যক্তির সঙ্গে মজার কথোপকথন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
৫) নেতিবাচক ঘটনা: জীবনে আনন্দ বা সুখ অনুভব করতে চাইলে যাবতীয় নেতিবাচক ঘটনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া উচিত। আবার কোনও খারাপ ঘটনা থেকেও অনেক সময়ে জীবন সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে যেমন অংশগ্রহণকারীদের সাম্প্রতিক হতাশা বা অবসাদে পরিপূর্ণ কোনও ঘটনা লিপিবদ্ধ করতে বলা হয়। পাশাপাশি, তার থেকে তিনটি ইতিবাচক শিক্ষাও জানাতে বলা হয়।