স্বাস্থ্যকর প্রাতরাশ। ছবি: সংগৃহীত।
রুটি মানেই নরম, গরম, ধোঁয়া ওঠা, সদ্য বানানো। ভারতের উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম স্বাদে ভিন্নতা থাকলেও এই বিশেষণগুলি সদা প্রযোজ্য। কিন্তু ঠান্ডা, বাসি রুটি যে স্বাস্থ্য সচেতনদের প্রিয়, তা কি জানতেন? এখন না হয় সমাজমাধ্যমের প্রভাবে সে কথা জেনেছেন অনেকে। কিন্তু চিরকালই গরম, সদ্য বানানো রুটিকে টেক্কা দিতে মাঠে প্রস্তুত ছিল বাসি রুটি। তবে লাইমলাইটের বাইরে। সম্প্রতি, আবার নানা দিকে বাসি রুটির স্বাস্থ্যকর দিকগুলি নিয়ে কথাবার্তা শুরু হয়েছে।
অনেকেই সকালের জলখাবারে আগের দিন করে রাখা বাসি রুটি খান। সঙ্গে পাতে থাকে টক দই। এই দিয়ে জমে যায় প্রতরাশ। আর এই যুগলবন্দি শরীরের নানাবিধ রোগব্যাধি দূর করতে সক্ষম।
সকাল সকাল বাসি রুটি আর দই থাকুক পাতে। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
বাসি রুটি আর টক দই কেন খাবেন?
১. মজানো খাবারের উপকারিতা অঢেল। তা সে পান্তা ভাত হোক বা কাঞ্জি। অন্ত্রের উপকারী ব্যাক্টেরিয়াকে পুষ্টি জোগানোর জন্য মজিয়ে রাখা খাবার খাওয়া উচিত। বাসি রুটি মজানো খাবারের তালিকাভুক্ত না হলেও টাটকা অবস্থার থেকে অবশ্যই অল্প মজে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অন্য দিকে টকদইও মজানো খাবার। এই দুইয়ের মিলমিশে বিপাকক্রিয়া উন্নত হয়।
২. টাটকা রুটির চেয়ে বাসি রুটির গ্লাইসেমিক ইনডেস্ক কম। তা ছাড়া, বাসি রুটি গরম করলে কার্বোহাইড্রেটের গঠনেও পরিবর্তন আসে। ফলে রক্তে গ্লুকোজ় মেশার গতিও শ্লথ হয়ে যায়। ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে বাসি রুটি বিশেষ ভাবে সাহায্য করে। মুম্বইয়ের পুষ্টিবিদ দীপশিখা জৈন ইনস্টাগ্রামে একটি ভিডিয়ো করে বলছেন, ‘‘টাটকা রুটির চেয়ে বাসি রুটি বেশি স্বাস্থ্যকর। ঠান্ডা জায়গায় অন্তত ১২ ঘণ্টা রেখে দিলে তার মধ্যে যৌগগুলির পরিবর্তন হতে থাকে। রুটির স্টার্চ বদলে গিয়ে রেজ়িস্ট্যান্ট স্টার্চে পরিণত হবে। যা পেটের ভাল ব্যাক্টেরিয়াগুলির জন্য উপকারী। ফলে পেটের স্বাস্থ্য এবং হজমের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। রেজ়িস্ট্যান্ট স্টার্চে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার থাকে। এতে ক্যালোরির পরিমাণ কম থাকে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার কাজ সহজ হয়ে যায়।’’ এ বার টক দইয়ের সঙ্গে মিশিয়ে খেলে এর সঙ্গে শরীরে প্রোটিন, প্রোবায়োটিক, ক্যালশিয়াম, ভিটামিন বি ১২-এর জোগান থাকে শরীরে। এই খাবার হজম করাও সহজ।
৩. গোটা দানাশস্য দিয়ে বানানো, কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট পরিপূর্ণ, ডায়েটারি ফাইবার, বি ভিটামিন এবং খনিজের উৎস রুটির সঙ্গে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ টক দই খেলে শরীরে একাধিক পুষ্টি উপাদানের সরবরাহ হয়। হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি থেকে সামগ্রিক ভাবে স্বাস্থ্যের যত্নের জন্য বাসি রুটি-টক দই উপযুক্ত বিকল্প।