Cuddling Therapy 

প্রিয়জনের বুকে মাথা রাখুন, দিন শুরুর আগেই তাঁকে জড়িয়ে ধরুন, তাতে লাভ নিজেরই!

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঘুম থেকে ওঠার পর কাছের মানুষ বা পোষ্যকে জড়িয়ে ধরার মধ্যে যে সুখ বা মানসিক শান্তি পাওয়া যায়, তা অন্য কিছুর মাধ্যমে সম্ভব নয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:০০
Share:

দিন শুরু করার আগেই জড়িয়ে ধরুন প্রিয়জনকে। ছবি: সংগৃহীত।

সারা দিন ঘরে-বাইরে নানান ঝড়ঝাপটা সামলাতে হয়। দিনের শেষে বিছানায় পিঠ ঠেকালে দু’চোখে হয়তো ঘুম নেমে আসবে। কিন্তু মনের আরাম হবে কি? মনোবিদেরা বলছেন, এই সমস্যার সমাধান রয়েছে নিজেদের হাতেই। দিন শুরু করার আগেই জড়িয়ে ধরুন প্রিয়জনকে। প্রিয়জনের কাঁধে বা বুকে মাথা রাখা শুধু লোকদেখানো বা ছবি তোলার জন্য নয়। এই স্পর্শের অন্তর্নিহিত গুণ রয়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ঘুম থেকে ওঠার পর কাছের মানুষ বা পোষ্যকে জড়িয়ে ধরার মধ্যে যে সুখ বা মানসিক শান্তি পাওয়া যায়, তা অন্য কিছুর মাধ্যমে সম্ভব নয়। মানসিক চাপ, উদ্বেগ সামাল দিতে প্রিয়জনের স্পর্শ ওষুধের মতো কাজ করে। তবে, যে কোনও মানুষের স্পর্শ হলে হবে না। ২০২০ সালে এই বিষয়টি নিয়ে প্রায় ৪০ হাজার মানুষের উপর একটি সমীক্ষা করেন লন্ডনের গোল্ডস্মিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনস্তত্ত্ব বিভাগের একদল গবেষক। এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন মাইকেল ব্যানিসি এবং ইউনিভার্সিটি অফ গ্রিনউইচের নাতালি বাওলিং। ব্যক্তিগত কিছু প্রশ্নোত্তর পর্বের মাধ্যমে প্রায় ৭৯ শতাংশই জানিয়েছেন, উল্টো দিকে থাকা তাঁদের প্রিয়জনের থেকে যৌনতা নয়, স্নেহের ছোঁয়া বা আদর পছন্দ করেন। ইংরেজিতে যাকে বলা হয় ‘কাডলিং’। এই কাডলিংয়ের অর্থ কিন্তু শুধু জড়িয়ে ধরা নয়। তার চেয়েও বেশি কিছু।

Advertisement

এই আদর বা স্নেহের স্পর্শ কি শুধু সঙ্গীর থেকেই পাওয়া সম্ভব?

মনোবিদেরা বলছেন, এ ক্ষেত্রে নিজের পরিধি একটু বড় করে রাখাই ভাল। শুধু স্বামী-স্ত্রী বা সঙ্গীর থেকেই যে স্নেহের ছোঁয়া পাওয়া যায় এমন নয়। কাছের মানুষ যেমন— মা-বাবা, ভাই-বোন, দাদু-ঠাকুমা, প্রিয় বন্ধু এমনকি বাড়ির পোষ্যকেও এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যাবে না। বিদেশে কিন্তু বৈধ লাইসেন্সধারী পেশাদার ‘কাডলিং থেরাপিস্ট’ও রয়েছেন। প্রয়োজনে তাঁদেরও সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

Advertisement

১) মানসিক চাপ কমবে:

কিছুই ভাল লাগছে না, অকারণেই মনখারাপ গ্রাস করছে? বাড়িতে যদি প্রিয় কেউ থাকেন, চট করে তাঁকে জড়িয়ে ধরুন। তা সে মানুষ হোক বা পোষ্য। শরীরে ‘হ্যাপি’ হরমোনের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে এবং মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে এই থেরাপি।

বাড়ির পোষ্যকেও জড়িয়ে ধরতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।

২) হার্ট ভাল থাকে:

সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছু ক্ষণ প্রিয়জনকে জড়িয়ে থাকলে, আদর করলে অক্সিটোসিন হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এবং শরীরের ক্ষতি করে এমন হরমোন, যেমন— কর্টিজ়ল, তার ক্ষরণও নিয়ন্ত্রণ করে।

৩) ঘুম ভাল হয়:

রাতে ঘুমোনোর সময়ে পাশে কেউ থাকলে নিশ্চিন্ত বোধ করেন? ঘুম ভাল হয়? এ ক্ষেত্রেও প্রিয় মানুষের স্পর্শ দারুণ কাজ করে। কিন্তু, পাশে কেউ না থাকলে কী করবেন? চিকিৎসকেরা বলছেন, মানসিক চাপ, উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হলে রাতে ঘুমোনোর সময়ে আবহাওয়া বুঝে মোটা কম্বল গায়ে দিয়ে নিতে পারেন। কম্বলের উষ্ণতা, উত্তাপ একই রকম ভাবে কাজ করবে।

৪) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে:

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা নিয়মিত কাছের মানুষ বা প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরেন, আদর করেন, তাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অন্যান্যদের তুলনায় অনেক বেশি।

৫) ব্যথা-যন্ত্রণা কমে:

সারা দিন প্রচুর খাটাখাটনি করেছেন। কায়িক পরিশ্রম লাঘব করতে পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি। প্রিয় মানুষের কাছাকাছি থাকলে কিংবা পোষ্যের ছোঁয়া পেলে সেই যন্ত্রণা লাঘব করা সম্ভব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন