Fennel Seed and Misri Water Benefits

পেট ঠান্ডা করবে মৌরি-মিছরির জল, চিরন্তন ভাবনা কতটা সঠিক? সকলেই কি খেতে পারেন?

বদহজম, পেট ফাঁপলে আগেকার দিনে মা, ঠাকুরমারা শিশুদের মৌরি-মিছরি ভেজানো জল খাওয়াতেন। বলতেন, এতে শরীর ঠান্ডা হয়।পুষ্টিবিদেরাও কি একই কথা বলেন?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২৫ ১০:০৬
Share:

মৌরির সঙ্গে মিছরির জল মিশিয়ে খেলে পেট ঠান্ডা হয়। ছবি: সংগৃহীত।

পেট গরম হয়েছে? হজমের সমস্যা? সকালে উঠলেই ঢক করে খাইয়ে দেওয়া হত মৌরি ভেজানো জল। মিছরি থাকায় মিষ্টি মিষ্টি জল খেতে খুদেরাও আপত্তি জানাত না। ঘরে ঘরে তখন কথায় কথায় ওষুধ খাওয়ার চল ছিল না। বরং ছোটখাটো সমস্যায় এমন অনেক চিরাচরিত পন্থাই প্রয়োগ করতেন বড়রা। আগে তালমিছরি খাওয়ার চল ছিল। কাশি হলে শিশুদের মুখে দেওয়া হত মিছরি। এখন আর সে সব প্রথা প্রায় নেই। কিন্তু চিরাচরিত পন্থায় কি শরীর সুস্থ রাখা যায়? পুষ্টিবিদ শম্পা চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘মৌরি-মিছরির জল খাওয়ার যে পুরনো প্রথা, তা মোটেই অস্বাস্থ্যকর নয়। বরং এতে শরীরের অনেক উপকার হয়। পেট ঠান্ডা থাকে। শরীরে বিপাকজাত ক্রিয়ার ফলে যে দূষিত পদার্থ তৈরি হয়, তা বার করে দিতে সাহায্য করে মৌরি-মিছরির জল। তবে সকলের জন্য যে তা ভাল, এমন নয়। বিশেষত ডায়াবিটিস থাকলে মৌরির জল খাওয়া গেলেও, মিছরি তাতে দেওয়া যাবে না।’’

Advertisement

কী কী উপকারিতা?

· মৌরিতে রয়েছে অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান, যা পেটের সমস্যা কমাতে সহায়তা করে। এমনকি, পেটে কোনও সংক্রমণ দেখা দিলেও তা থেকে বাঁচাতে পারে মৌরি। মৌরির সঙ্গে মিছরির জল মিশিয়ে খেলে পেট ঠান্ডা হয়।

Advertisement

· মৌরিতে মেলে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। এতে ফাইবার থাকে। এই পানীয় বিপাকহার বৃদ্ধিতে বেশ সাহায্য করে। মূলত, গ্যাস-অম্বল, বদহজমের সমস্যায় মৌরির জল খুব উপকারী।

· ভিটামিন সি, আয়রনে পূর্ণ মৌরি পেটফাঁপার মতো সমস্যায় বিশেষ কার্যকর। শিশুরা অনেক সময় এমনি জল খেতে চায় না। মিষ্টি মিষ্টি মৌরি-মিছরির জল কিন্তু তারা সহজেই খেয়ে নেবে।

· পুষ্টিবিদ অনন্যা ভৌমিক জানাচ্ছেন, চিনির মিছরি বা তাল মিছরি কোনওটাতেই পুষ্টিগুণ তেমন মেলে না।তবে খাঁটি তাল মিছরিতে খুব স্বল্প পরিমাণে হলেও, পটাশিয়াম, আয়রণ, ক্যালশিয়াম থাকে।চিনির তুলনায় তাল মিছরির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। ফলে চিনি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা যত দ্রুত বৃদ্ধি পাবে, এতে নয়। এ ছাড়াও এতে থাকে কার্বোহাইড্রেট এবং শর্করা।

কারা খাবেন, কারা নয়?

পুষ্টিবিদ শম্পা বলছেন, ‘‘ডায়াবিটিস না থাকলে বা ওজন বশে থাকলে মৌরি-মিছরির জল খাওয়াই যায়। তবে যিনি ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন তাঁকে মিছরি বাদ দিতে হবে। শিশু, বয়স্ক মানুষ, যাঁদের শরীর দুর্বল, তাঁদের জন্য মৌরি-মিছরির জল ভাল। কারণ, মৌরির গুণাগুণের পাশাপাশি মিছরির শর্করা এবং কার্বোহাইড্রেট দ্রুত শক্তি জোগাতে সাহায্য করবে। তা ছাড়া, গরমে ঘেমে-নেয়ে ক্লান্ত হয়ে গেলেও এই জল শরীর ঠান্ডা রাখার পাশাপাশি দ্রুত ক্যালোরির ঘাটতি পূরণ করবে।’’

একই সঙ্গে শম্পা মনে করাচ্ছেন, শুধুই যে মৌরি-মিছরির জল শরীর ঠান্ডা রাখতে পারবে, এমন নয়। এক জন সারা দিনে কী খাচ্ছেন, কী করছেন, তার উপরেও দৈহিক তাপমাত্রার বিষয়টি নির্ভরশীল। যেমন শারীরিক কসরত করলে দৈহিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে।

আবার পিসিওস, কিডনির সমস্যা থাকলে, সুক্রোজ খাওয়া বারণ থাকলে মিছরি বাদ দিয়ে মৌরির জল খাওয়া যাবে।আগেকার দিনে যে শিশুদের তালমিছরি খাওয়ানো হত তা নিয়ে পুষ্টিবিদের মত, শিশুদের গলা খুসখুসানি কমানোর জন্যই তা দেওয়া হত।উপকারিতা তেমন নেই।মুখে লজেন্স রাখলেও অবশ্য গলা খুসখুস করার সমস্যা কমতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement