গ্যাসের ব্যথা বা হার্টের সমস্যা বোঝার সহজ উপায় কী? ফাইল চিত্র।
ভারী খাবার খাওয়ার পরেই পেট ভার, বুকে ব্যথা হয় অনেকেরই। অম্বলের ধাত থাকলে এমন হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে বুকে ব্যথা বা অস্বস্তি মানেই যে তা গ্যাস বা অম্বলের কারণে হচ্ছে, তেমনটা না-ও হতে পারে। হয়তো তলে তলে বাসা বেঁধেছে হার্টের রোগ, আপনিই বুঝতেই পারছেন না। অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা আছে যাঁদের, অর্থাৎ, কিছু খেলেই গলা-বুক জ্বালা করে এবং ডায়াবিটিসের রোগীদের এই ভুলটা বেশি হয়। গ্যাসের ব্যথা না হার্টের সমস্যা, তা বুঝতেই অনেকটা সময় পেরিয়ে যায়। কী থেকে ব্যথা হচ্ছে, তা বোঝার উপায় কী?
ব্যাপারটা যেহেতু হার্টের, তাই আগে থেকে সতর্ক হতে হবে। বুকে ব্যথা হলে সঙ্গে সঙ্গেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে, এমনটাই জানালেন হার্টের চিকিৎসক দিলীপ কুমার। তাঁর মতে, হার্ট অ্যাটাক বা হার্টের সমস্যার কারণে ব্যথা নিজে থেকে বোঝা সম্ভব নয়। শুধু কিছু লক্ষণ দেখে সতর্ক হওয়া যেতে পারে। যেমন, হার্টের সমস্যা হলে বুকের মাঝখানে চাপ চাপ ব্যথা হবে। মনে হবে বুকের মধ্যে উপর ভারী পাথর চাপানো হয়েছে। ব্যথাটা ধীরে ধীরে চোয়াল, ঘাড় বা পিঠের দিকে যেতে পারে। একে বলে ‘অ্যানজাইনাল পেন’। ২০ থেকে ২৫ মিনিট এই ব্যথা থাকবে। সঙ্গে প্রচণ্ড ঘাম হবে। শ্বাসকষ্ট হতে পারে। মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যেতে পারে। হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসবে। এই রকম উপসর্গ হলে বুঝতে হবে, ব্যাপারটা হার্ট অ্যাটাকের দিকে গড়াচ্ছে।
আরও এটি বিষয় খেয়াল করতে হবে। বয়স যদি চল্লিশের বেশি হয়, এবং দেখেন যখন তখন নাড়ির গতি বাড়ছে, হালকা শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, গ্যাসের ওষুধ খেয়েও বুকে ব্যথার উপশম হচ্ছে না, ব্যথা মাঝেমধ্যেই ফিরে আসছে, তা হলেও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
কী করণীয়?
হার্টের রোগ যাঁদের আগে থেকেই আছে, তাঁদের সাবধানতা মেনে চলতেই হবে। আর যাঁদের আগে থেকে হার্টের কোনও সমস্যা নেই, অথচ এই ধরনের উপসর্গ দেখা দিয়েছে, তাঁদের দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। যদি বুকে ব্যথা ও সেই সঙ্গে ঘাম হতে শুরু করে, তা হলে সেই মুহূর্তে চারটে ডিসপ্রিন ট্যাবলেট জলে গুলে বা চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে হবে। এতে হার্ট অ্যাটাক থেকে মৃত্যুর আশঙ্কা অন্তত ৪০ শতাংশ কমে যাবে। জিভের তলায় একটা সরবিট্রেট দিয়ে কাছাকাছি কোনও হাসপাতালে যেতে হবে। বাড়িতে চিকিৎসক ডেকে বা অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য সময় নষ্ট করবেন না। হার্ট অ্যাটাক হলে ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে হাসপাতালে ঢুকতে পারলে রোগীকে বাঁচানো সম্ভব। তবে এমন হাসপাতালেই যেতে হবে, যেখানে ক্যাথল্যাব আছে বা চিকিৎসককে সঙ্গে সঙ্গেই পাওয়া যাবে।
ডায়াবেটিকেরা ‘অ্যানজাইনাল পেন’ বুঝতে পারেন না। ব্যথাটাকে গ্যাসের ব্যথার সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া ছাড়া গতি নেই।