Heart Attack while sleeping

গভীর ঘুমের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক? শরীর সঙ্কেত দেয় আগেই, সে লক্ষণগুলি চেনা থাকলে বিপদ এড়ানো যাবে

ঘুমের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক খুবই বিপজ্জনক। কাদের বেশি হয়? লক্ষণ জানা থাকলে আগে থেকেই সতর্ক হওয়া যাবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০২৫ ১৪:২১
Share:

ঘুমের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক, বিপদ এড়াতে কিছু লক্ষণ চিনে রাখুন। ফাইল চিত্র।

ঘুমের মধ্যে কি হার্ট অ্যাটাক হয়? অনেককেই বলতে শুনবেন, ঘুমের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক হয়ে মৃত্যু হয়েছে। বয়স্কদের বেশি হয়। তবে কমবয়সিরাও আজকাল বাদ যাচ্ছেন না। ঘুমোবার সময়ে হৃৎস্পন্দনের হার এমনিও কম থাকে, আচমকা যদি তা থেমে যায়, তখনই হার্ট অ্যাটাক হবে। চিকিৎসকেরা বলেন, ঘুমের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক সাধারণ সমস্যা নয়। একে বিরলই বলা যায়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক’, যা নীরবে আসে ও তছনছ করে দিয়ে চলে যায়। তবে যতই নীরবে হার্টে ধাক্কা আসুক না কেন, তার কিছু লক্ষণ কিন্তু অনেক আগে থেকেই দেখা দিতে থাকে। শরীর সঙ্কেত দিয়ে সতর্ক করে আগেই। শুধু লক্ষণ চেনা না থাকায়, বিপদ এড়ানো যায় না।

Advertisement

ঘুমের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক কাদের বেশি হয়?

স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা থাকলে ঘুমের মধ্যে হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যেতে পারে। হার্টের চিকিৎসক সুশান মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, স্লিপ অ্যাপনিয়া এমন একটি অবস্থা, যেখানে ঘুমের সময় বারবার শ্বাসপ্রশ্বাস সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায় এবং রক্তচাপ বেড়ে যায়। প্রতি বার অক্সিজেনের মাত্রা কমে গেলে হৃৎপিণ্ডের উপর চাপ বাড়ে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।

Advertisement

৮ ঘণ্টার কম ঘুমোন যাঁরা, তাঁদেরও ঝুঁকি বেশি। অনিয়মিত ঘুম বা অনিদ্রার সমস্যা থাকলে, হৃদ্‌পেশির সঙ্কোচন এবং প্রসারণ অনিয়মিত হয়, ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে।

বেশি ঘুমও কিন্তু ভাল নয়। কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, রোজ ৯ থেকে ১১ ঘণ্টার বেশি যাঁরা ঘুমোন, তাঁদেরও হৃদ্‌রোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

ডায়াবিটিস থাকলেও ঝুঁকি বেশি। ঘুমের মধ্যে রক্তচাপ কমে বা বেড়ে যেতে পারে। রক্তে শর্করার মাত্রাও ওঠানামা করতে পারে। ফলে বিপদ ঘটতে পারে যখন- তখন।

স্থূলত্ব বা ওবেসিটি থাকলে ঘুমের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। যাঁদের ওজন বেশি, থাইরয়েডের সমস্যা আছে, আবার স্লিপ অ্যাপনিয়াতেও ভুগছেন, তাঁদের অনেক বেশি সতর্ক থাকতে হবে।

বিপদ এড়াতে লক্ষণ চিনুন

বুকে মিনিট খানেক ধরে ব্যথা

ঘুমনোর সময়ে বুকে চাপ চাপ ব্যথা, বা বুকের বাঁ দিকে হালকা ব্যথা অনুভব করলে সতর্ক হতে হবে। এই ব্যথা মিনিট খানেক ধরে চলবে। গ্যাস-অম্বলের ব্যথা হলে চোঁয়া ঢেকুর উঠবে, গলার কাছে জ্বালার মতো অনুভূতি হবে। তবে হার্ট অ্যাটাকের ব্যথা বুকের একই জায়গায় মিনিট খানেক ধরে চলবে। পরে ছড়িয়ে পড়বে চোয়াল ও হাতে।

ঘুমের মধ্যে দমবন্ধ

শোয়ার পরেই শ্বাস নিতে সমস্যা হবে। দমবন্ধ হয়ে আসবে। দিন কয়েক আগে থেকেই দেখা দেবে এই লক্ষণ। তখন সতর্ক হতে হবে।

রাতে শুয়ে ঘাম

ঠান্ডা ঘরে শুয়েও যদি ঘাম হয়, তা হলে বুঝতে হবে লক্ষণ মোটেই সুবিধার নয়। এই উপসর্গও কিন্তু আগে থেকেই দেখা দিতে পারে। রোজই যদি দেখেন, ঘুমোনোর সময়ে সারা শরীর ঘামে ভিজে যাচ্ছে, অথচ ঘরের তাপমাত্রা কম, তা হলে সাবধান হতে হবে।

অতিরিক্ত ক্লান্তি

মনে হবে শরীরে আর কোনও শক্তিই নেই। ক্লান্তি এতটাই বৃদ্ধি পাবে, যে হাত-পা নাড়াতেও কষ্ট হবে। রোজই যদি এমন হয়, তা হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

হার্টের রোগ তলে তলে মাথাচাড়া দিচ্ছে কি না, তা নির্ণয় করার অনেকগুলি পরীক্ষা আছে। কিন্তু সেই সব পরীক্ষা, যেমন অ্যাঞ্জিয়োগ্রাম, ইলেক্ট্রোকার্ডিয়োগ্রাম, ইকোকার্ডিয়োগ্রাম, স্ট্রেস টেস্ট, কার্ডিয়াক এমআরআই করিয়ে রাখলে ভাল হয়। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement