Mango for diabetic patient

ডায়াবিটিসের সঙ্গে ‘আম-আদমির’ বিরোধ আছে কি? শর্করা নিয়ন্ত্রণে রেখেই বিনা দ্বিধায় আম খান

যাঁরা ডায়াবিটিসের রোগী, যাঁদের সারা দিনের খাওয়াদাওয়া নিয়মে বাঁধা, শারীরিক নানা কারণে ক্যালোরির এ দিক-ও দিক হওয়ার জো নেই, তাঁদের কাছে আম হল বিলাসিতা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০২৫ ১২:১৫
Share:

ছবি: শাটারস্টক।

আমের ভরা মরসুম। গ্রীষ্ম শেষ হলে আবার এই স্বাদু সময় ফিরবে এক বছর পার করে। গ্রীষ্মের ক’টা মাস তাই আম খাওয়ার সুযোগ নষ্ট করতে চান না ‘আম-আদমি’রা। অর্থাৎ যাঁরা আম প্রেমী। প্রকৃত আমভক্ত। সুযোগ পেলেই হিমসাগর, ল্যাংড়া, গোলাপখাস, চৌসা বাজারের ব্যাগে ভরে হাজির হন। তার পরে আম কেটে, তার রসালো, মিষ্টি শাঁসে কামড় দিয়ে তবে তৃপ্তি! কিন্তু এই তৃপ্তি আবার কারও কারও কপালে জোটেও না।

Advertisement

যাঁরা ডায়াবিটিসের রোগী, যাঁদের সারা দিনের খাওয়াদাওয়া নিয়মে বাঁধা, শারীরিক নানা কারণে ক্যালোরির এ দিক-ও দিক হওয়ার জো নেই, তাঁদের কাছে আম হল বিলাসিতা। ইচ্ছে হলেও প্রিয় ফল দূর থেকে দেখতে হয়। কিন্তু চাইলে ডায়াবিটিসের রোগীরাও আম খেতে পারেন, তার জন্য তাঁদের কিছু নিয়ম মানতে হবে।

ছবি: সংগৃহীত।

কেন আম খেলে ডায়াবিটিস রোগীদের সমস্যা হবে?

Advertisement

আমে প্রাকৃতিক চিনি, যেমন সুক্রোজ়, ফ্রুকটোজ়ের পরিমাণ থাকে অনেক বেশি। ফলে ক্যালোরিও থাকে অনেক বেশি। এক ফালি আমে থাকে ৪৫-৫০ কিলো ক্যালোরি। তা হলে ভাবুন একটি গোটা আমে কত ক্যালোরি থাকতে পারে! তা ছাড়া আমের গ্লাইসেমিক লোডও বেশি। এই গ্লাইসেমিক লোডের মাত্রা ঠিক করে দেয় খাবার খাওয়ার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা কত দ্রুত বাড়তে পারে। আমে এর পরিমাণ ৫১-৬০। যা একটু চড়ার দিকেই। অর্থাৎ, আম খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়তে পারে। যাকে বলা হয় ‘ব্লাড সুগার স্পাইক’। যেটি ডায়াবিটিসের রোগীর জন্য ক্ষতিকর।

তা হলে কী ভাবে আম খেয়েও ভাল থাকবেন ডায়াবিটিস রোগী?

এক চিকিৎসক এ ব্যাপারে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা লিখেছেন। রিচা চতুর্বেদী নামের এন্ডোক্রোনোলজিস্ট লিখছেন, ‘‘আমার এক পেশেন্ট অত্যন্ত আমভক্ত। অথচ তাঁর ডায়াবিটিসের মাত্রাও বেশি। তিনি এক দিন বায়না করে বসলেন, তাঁকে আম খেতে দিতে হবে। একজন চিকিৎসক হিসাবে এটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু তার পরে ওঁর আগ্রহ দেখে ভাবলাম বিষয়টি কী ভাবে সম্ভব করা যেতে পারে! সেই অনুযায়ী একটি পরিকল্পনা স্থির করলাম।’’

ছবি: সংগৃহীত।

আমে থাকা চিনির মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করার একটি পদ্ধতি কথা জানিয়েছেন ওই চিকিৎসক। তিনি জানাচ্ছেন, যেহেতু আমে থাকা চিনি বা কার্বোহাইড্রেট প্রক্রিয়াজাত ময়দা বা চিনির মতো ক্ষতিকর নয়, তাতে শর্করার পাশাপাশি ফাইবারও থাকে। তাই আম ময়দা বা চিনি দিয়ে তৈরি খাবারের মতো ততটা ব্লাড সুগার স্পাইক ঘটাবে না। আর যদি কয়েকটি বিষয় মাথায় রেখে খাওয়া যায়, তা হলে আমকে এক জন ডায়াবিটিক রোগীর জীবন থেকে পুরোপুরি বিদায় জানাতেও হবে না।

কী ভাবে আম খাবেন এক জন ডায়াবিটিসের রোগী?

১। প্রথমত সকালে উঠেই খালি পেটে বা নামমাত্র খাবার খেয়ে আম খাবেন না। তাতে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।

২। আম খাওয়ার আগে সব রকম পুষ্টিগুণ বজায় রাখা খাবার খেতে হবে। সেই হিসাবে প্রথমে প্রোটিন, তার পরে ফাইবার, তার পরে উপকারী ফ্যাট খেয়ে তার পরে আম খেতে হবে।

৩। সে ক্ষেত্রে প্রাতরাশে আম খাওয়ার ঘণ্টাখানেক পরে, অর্থাৎ বেলার দিকে কিংবা দুপুরের খাবার খাওয়ার ঘণ্টাখানেক পরে খাওয়া যেতে পারে।

ছবি: সংগৃহীত।

৪। তার পরেও যথেচ্ছ আম খাওয়া যাবে না। মনে রাখতে হবে একটি মাঝারি মাপের আমে ১৫০ কিলোক্যালোরি থাকে। তাই ডায়াবিটিস রোগীদের দিনে আধ কাপ বা ৭৫ গ্রামের বেশি আম না খাওয়াই ভাল।

৫। ডায়াবিটিস কতটা বেশি বা কম তার উপরেও নির্ভর করবে অনেক কিছু। বেশি হলে সপ্তাহের ৭ দিনই আম খেলে সমস্যা হতে পারে। তবে সপ্তাহে ৩ দিন খাওয়া যেতে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement