৪০-এও নির্মেদ চেহারা কী ভাবে মেলে, পরামর্শ দিলেন টেলিভিশন সিরিয়ালের ‘অনীতা ভাবি’ সৌম্যা টন্ডন। ছবি: সংগৃহীত।
একসময় অনীতা ভাবির রূপে শুধু সিরিয়ালের মনমোহন তিওয়ারি নন, মজেছিলেন বাস্তবের অনেকেই। ২০১৫ সালের জনপ্রিয় রোম্যান্টিক কমেডি সিরিয়াল ‘ভাবিজি ঘর পর হ্যায়’-এর সেই অনীতা ভাবি ১০ বছর পরেও সকলের মনে রয়ে গিয়েছেন।
মডেলিং, অভিনয়জগতের সঙ্গে যুক্ত সৌম্যা টন্ডন সদ্য চল্লিশ পার করেছেন। ‘জব উই মেট’-এ নায়িকার বোন রূপ ধিলোঁর চরিত্রেও অভিনয় করেছিলেন তিনি। চলচ্চিত্রে তেমন না দেখা গেলেও ‘ভাবিজি’ সৌম্যাকে মনে রেখেছেন অনেকেই। নির্মেদ শরীর, গমরঙা গাত্রবর্ণ, মুখে জুড়ে লালিত্য— তাঁকে সকলের চাইতে আলাদা রেখেছে।
কিন্তু চল্লিশের কোঠায় পৌঁছেও কী ভাবে এমন সুন্দর তিনি। এই বয়সে বলিরেখা পড়া, মেদ বেড়ে যাওয়া যেখানে খুব সাধারণ ব্যাপার, সেখানে কী ভাবে এত ফিট অভিনেত্রী?
সকলেই মনে করেন, ছিপছপে চেহারার নেপথ্যে থাকে কড়া ডায়েট। তবে সেই পথে কোনও দিনই হাঁটেননি সৌম্যা। ডায়েট তাঁর অপছন্দের। অভিনেত্রী ইনস্টাগ্রামে জানিয়েছেন, ‘‘পাঁচ বিষয় তাঁকে সাহায্য করেছে। দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় পাঁচটি জিনিস তিনি রেখেছেন নিয়ম মেনে।’’
সৌম্যার রোজনামচা
· অনেকেই দিন শুরু করেন লেবুর জল খেয়ে বা ডিটক্স পানীয় খেয়ে। তবে টেলি সিরিয়ালের ভাবিজির দিন শুরু হয় এক চা-চামচ ঘি দিয়ে। তাতে এক চিমটে হলুদ এবং একটু গোলমরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে নেন তিনি। সৌম্যা বলছেন, ঘি একটু গরম করে নেওয়া যায়। প্রদাহ কমাতে এই পথ্য খুবই কাজের।
· ওজন বশে রাখাও কি মুখের কথা! যাঁদের বাড়ে তাঁরা জানেন, মেদ ঝরানো কতটা কঠিন। তবে অভিনেত্রী তাঁর ডায়েট থেকে দীর্ঘ দিনই চিনি বাদ দিয়েছেন। ‘ভাবিজি’-র কথায়, চল্লিশে পৌঁছে সুস্থ থাকার অন্যতম শর্তই হল, শর্করা বাদ দেওয়া। সাদা চিনি শুধু নয়, মধু এবং গুড়ও খান না তিনি।
· এ ছাড়া দিনে এক বার মিহি করে কুচোনো আদা জলে ফুটিয়ে, ঈষদুষ্ণ সেই জল এক গ্লাস খান তিনি। অভিনেত্রীর কথায়, অ্যালক্যালাইন জল পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে।
· শরীরচর্চাও সৌম্যার দৈনন্দিন অভ্যাসের একটি। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, রোজের খাবারে প্রোটিন রাখা জরুরি বিশেষত শরীরচর্চা করলে প্রোটিন খাওয়া একান্ত প্রয়োজন। নিরামিষাশী অভিনেত্রীর খাদ্যতালিকায় থাকে প্রোটিন সমৃদ্ধ নানা খাবার। প্রতি দিন জলে ভেজানো ৫টি করে কাঠবাদাম, আখরোট এবং পেস্তা খান তিনি। তালিকায় থাকে ব্রাজিলিয়ান বাদামও। প্রোটিন, খনিজ, ভিটামিন এবং স্বাস্থ্যকর ফ্যাটে পূর্ণ প্রতিটি খাবারই।
· পঞ্চম যে বিষয়টি তিনি মানেন, প্রতি দিন সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে নৈশভোজ। সৌম্যার মতে, রাতের খাবার দ্রুত সারলে বদহজমের সমস্যাও কমে।
সৌম্যার দিনলিপি কি অন্যরাও অনুসরণ করতে পারেন?
সকালে উঠে ঘি খান সৌম্যা। কিন্তু এই অভ্যাস কতটা স্বাস্থ্যকর? ফরিদাবাদের পুষ্টিবিদ গরিমা গয়ালের কথায়, ঘি, হলুদ এবং গোলমরিচের গুঁড়ো প্রদাহনাশক উপাদান হিসাবে কাজ করে। তা ছাড়া, চিনি বাদ দিলে যেমন বাড়তি ক্যালোরি ছাঁটা যায়, তেমনই রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক থাকে। বাদাম এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবারও সুস্থ থাকার জন্য জরুরি। বিশেষ কোনও শারীরিক সমস্যা না থাকলে সকলেই এই শর্তগুলি মেনে চলতে পারেন।