প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
দাঁড়িয়ে থাকার সময়ে সাধারণত দু'টি পা-ই ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এক পায়ে দেহের ভারসাম্য রক্ষা করাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই অভ্যাস শরীরের একাধিক ইতিবাচক বিষয়ের দিকনির্দেশ করতে পারে।
হাঁটা বা সিঁড়ি ভাঙার সময়ে ক্ষণিকের জন্য হলেও দেহ এক পায়ে ভর করে থাকে। কিন্তু কেউ যদি এক পায়ে ভর করে দাঁড়াতে না পারেন, তা হলে তাঁর সিঁড়ি ভাঙা বা হাঁটার ক্ষেত্রেও সমস্যা হতে পারে। কেউ সতর্ক না হলে পড়ে যেতে পারেন। চিকিৎসকদের মতে, বার বার পড়ে যাওয়ার ফলে মানুষের আয়ু কমতে পারে। কারণ, বিভিন্ন বয়সে মাটিতে পড়ে গিয়ে চোট-আঘাতের সম্ভাবনাও বৃদ্ধি পায়। চিকিৎসকদের মতে, সুগার, প্রেশার অস্টিয়োআর্থ্রাইটিসের মতো কয়েকটি রোগের ক্ষেত্রে এক পায়ে দেহের ভারসাম্য রাখা কঠিন হতে পারে।
ফিজ়িয়োথেরাপিস্ট কৌশক দে জানালেন, কোনও ব্যক্তি এক পায়ে কত ক্ষণ ভর করে দাঁড়াতে পারছেন, তা দেহের ‘ফল টেস্ট’-এর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পরীক্ষাটি করতে চিকিৎসকের দেড় থেকে দু’ঘণ্টা সময় প্রয়োজন। তিনি বললেন, ‘‘সারা বিশ্বে এখন এই বিষয়টি নিয়ে কাজ হচ্ছে। প্রতি দিন নতুন কোনও তথ্য আমরা জানতে পারছি। এক জন ব্যক্তি কেন ঘন ঘন পড়ে যান, তাঁর শারীরিক ভারসাম্য সে দিকে নির্দেশ করে।’’
কত ক্ষণ ভারসাম্য
এক পায়ে কে কত ক্ষণ দাঁঢ়িয়ে থাকতে পারবেন তা ব্যক্তির বয়স, পরিপার্শ্ব ছাড়াও শারীরিক পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে। তবে দেখা গিয়েছে, যাঁরা ১০ সেকেন্ডের কম সময় এক পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না, তাঁদের ক্ষেত্রে মাটিতে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। কোনও কোনও ক্ষেত্রে এ রকম ব্যক্তিদের পরবর্তী ১০ বছরে মৃত্যুও হয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু প্রাপ্তবয়স্কেরা যদি ১৫ সেকেন্ড পর্যন্ত এক পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াতে পারেন, সে ক্ষেত্রে বলা যায়, তাঁর কোনও ভয়ের কারণ নেই।
আবার অল্পবয়সিরা আরও বেশি ক্ষণ এক পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবেন, তা অনুমেয়। বয়স ৩০ বছরের কম হলে তাঁদের ক্ষেত্রে এই লক্ষ্যমাত্রা ৪০ থেক ৪৫ সেকেন্ড হওয়া উচিত। আবার ৩০ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে বয়স হলে, তাঁরা যেন ৩০ সেকেন্ড পর্যন্ত এক পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন, তা নজরে রাখা দরকার।
সতর্কতা
কৌশিক জানালেন, সময় এবং বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে দেহের ভারসাম্য উন্নত করা সম্ভব। তার জন্য রোগীকে নানা ধরনের পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে অগ্রসর হতে হয়। কিন্তু বাড়িতে নিজে অভ্যাস করতে গেলে চোট-আঘাতের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। কৌশিকের কথায়, ‘‘কারও হয়তো আর্থ্রাইটিস আছে। কারও ওজন বেশি। তাঁরা পরামর্শ ছাড়া এক পায়ে দাঁড়াতে গেলে হিতে বিপরীত হতে পারে।’’