—প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
শরীরকে সচল রাখতে নিত্য দিনের খাবারে প্রোটিন রাখতেই হবে। কিন্তু অনেক সময়েই দেখা যায়, ব্যস্ততা বা খাদ্যাভাসের কারণে নির্ধারিত প্রোটিনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা হয়ে ওঠে না। অনেকেই সে ক্ষেত্রে বিভিন্ন ওষুধ এবং সাপ্লিমেন্টের শরণাপন্ন হন। কিন্তু পরিকল্পনা করে খাবার খেলে প্রতি দিন শরীরের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের মাত্রা বজায় রাখা যেতে পারে।
কতটা প্রোটিন?
পুষ্টিবিদদের একাংশের মতে, প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ এবং মহিলাদের ডায়েটে প্রতি কিলোগ্রাম দেহের ওজন পিছু ০.৮ গ্রাম প্রোটিন থাকা উচিত। অর্থাৎ, সারা দিনে তাঁদের খাবারে যেন ৪৬ থেকে ৫৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে। অন্য দিকে, প্রাপ্তবয়স্ক অতিসক্ষম কোনও ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রতি কিলোগ্রামের জন্য ২ গ্রাম প্রোটিন থাকা উচিত। অর্থাৎ, সে ক্ষেত্রে সারা দিনে খাবার থেকে প্রাপ্ত প্রোটিনের পরিমাণ হবে ৬০ থেকে ১০০ গ্রামের মতো।
সাপ্লিমেন্টের সমস্যা
যাঁরা জিমে যান বা শরীরচর্চা করেন, তাঁদের মধ্যে প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট ব্যবহারের প্রবণতা দেখা যায়। কিন্তু এই ধরনের গুঁড়ো সকলের জন্য নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তা প্রক্রিয়াজাত হয়। অনেকে আবার গন্ধের কারণে প্রোটিন পাউডার খেতে পারেন না। আবার চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘ দিন প্রোটিন পাউডার খেলে পেটের জটিল সমস্যা হতে পারে।
প্রাতরাশে প্রোটিনের অভাব
ব্যস্ততার কারণে অনেকেই পেট ভরে প্রাতরাশ করেন না। কেউ আবার প্রাতরাশ বাদ রেখে সরাসরি দুপুরের খাবার খান। চটজলদি মাখন-পাউরুটির সঙ্গে এক কাপ চা বা কফি খেলে প্রাতরাশে প্রোটিনের ঘাটতি মেটে না। অথচ তিনটে ডিম খেতে পারলেই ১৮ গ্রাম প্রোটিন শরীরে প্রবেশ করে। এর সঙ্গে আটার তৈরি পাউরুটি এবং এক গ্লাস দুধ পান করতে পারলে ৩০ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যেতে পারে। ইয়োগার্ট, ওট্স এবং বিভিন্ন বীজের মধ্যেও প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে।
দুপুরের খাবারে বেশি প্রোটিন
দুপুরের খাবারে যাতে বেশি প্রোটিন থাকে, সে দিকে খেয়াল রাখা উচিত। ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম মুরগির মাংসের মধ্যে ৩০ থেকে ৪৫ গ্রাম প্রোটিন থাকে। দুপুরে অল্প ভাতের সঙ্গে পরিমাণমতো সব্জি খাওয়া যেতে পারে। ডাল প্রোটিনের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। তাই দুপুরের খাবারে এক বাটি ডাল রাখতেই হবে। এক বাটি ডাল এবং ১০০ গ্রাম টক দই থেকে প্রায় ৩০ গ্রামের মতো প্রোটিন পাওয়া যেতে পারে।
ভাজাভুজিতে প্রোটিন!
সারা দিনে অনেকেই বাইরের খাবার খান। ‘ফাস্ট ফুড’-এর গুণগত মান নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। অথচ এই ধরনের খাবার খেয়ে পেট ভরলেও প্রয়োজনীয় প্রোটিনের অভাব মেটে না। চিপ্স, কুকিজ় বা বিস্কুটের মধ্যে প্রচুর কার্বোহাইড্রেট থাকে। খিদে পেলে এর পরিবর্তে রোস্টেড ছোলা বা বাদাম খাওযা যেতে পারে। খিদে পেলে অল্প পরিমাণে সব্জি সেদ্ধও শরীরে পক্ষে উপকারী।
রাতের খাবারে প্রোটিন
রাতের খাবারের পর ঘুমোতে যাওয়ার সময়। ঘুমোনোর সময় আমাদের শরীরে সাত থেকে আট ঘণ্টা কোনও খাবার প্রবেশ করে না। তাই এই সময় শরীরকে চালনা করার প্রয়োজনীয় প্রোটিন রাতের খাবারেই রাখা উচিত। মুরগির মাংস বা মাছের গ্রিল জাতীয় কোনও পদের সঙ্গে সব্জি সেদ্ধ প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করতে পারে। কেউ নিরামিষাশী হলে এক বাটি মুগ ডালের সঙ্গে পনিরের কোনও তরকারি খেতে পারেন। সঙ্গে রুটি চলতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে, রাতের খাবার থেকে যেন ২৫-৩০ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।
(এই প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। প্রোটিন ডায়েট পরিকল্পনার আগে পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।)