স্তন ক্যানসারের সঙ্গে স্তন্যপানের যোগ। ছবি: সংগৃহীত।
শিশুদের জন্য মায়ের স্তন্যপান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, দাবি করেন সিংহভাগ চিকিৎসক। শিশুদের সুস্বাস্থ্যের জন্য মাতৃদুগ্ধের ভূমিকা অঢেল। কিন্তু স্তন্যপান করানোর এই প্রক্রিয়ায় উপকার মেলে মায়েদেরও। ঝুঁকি কমে স্তন ক্যানসারের। সে কথা অনেকেই জানেন না। কারণ, সচেতনতা তৈরি হয়েছে অনেক পরে। একাধিক গবেষণায় স্তন্যপান করানো এবং স্তনের ক্যানসারের মধ্যে এই সম্পর্ক দেখানো হয়েছে। কিন্তু কী ভাবে এই দুই ঘটনা একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত? কী ভাবেই বা ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে পারে স্তন্যপানের প্রক্রিয়া?
স্তন্যপান করালে মায়েদেরও স্বাস্থ্যরক্ষা হয়। ছবি: সংগৃহীত।
ল্যাক্টেশনের সময়ে অর্থাৎ যখন দুগ্ধ উৎপাদন হচ্ছে, তখন স্তনের প্রকৃতি বদলাতে থাকে দ্রুত। আর মায়েরাও সেই সময়েই তাঁদের স্তনের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সঠিক ভাবে অবগত হন। জীবনের অন্যান্য সময়ে হয়তো সে বিষয়ে বিন্দুমাত্র ভাবেন না তাঁরা। কিন্তু এই বিষয়ে অনেক আগে থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত মেয়েদের। সেই বিষয়ে অবগত করার জন্যই ক্যানসার চিকিৎসক সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘সদ্যোজাত শিশুদের স্তন্যপান করানোর ফলে ভবিষ্যতে তাঁদের সংক্রমণের ঝুঁকি কমে যায়। তা ছাড়া স্তন্যপানের ফলে শিশুর বৃদ্ধি এবং মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে। কিন্তু অনেকেই জানেন না, এতে মায়েদেরও অনেক উপকার হয়। স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায়। যার ফলে স্তন্যপান করানোর জন্য সুপারিশ করা হয়।’’
প্রতি মাসে ঋতুস্রাব হওয়ার সময়ে ইস্ট্রোজনের মাত্রা বেড়ে যায় শরীরে। তার পর আবার কমে যায়। চক্রাকারে এই একই ঘটনা ঘটতে থাকে। এই হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধির কারণে স্তন ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমাতে পারলে সেই ঝুঁকি কমে যাবে স্বাভাবিক ভাবেই। সদ্যোজাতকে স্তন্যপান করানো মানেই ঋতুস্রাবের সময়কালকে আরও একটু বিলম্বিত করা। ফলে সামগ্রিক ভাবে সারা জীবনে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা শরীরে স্বাভাবিক ভাবেই কমে যায়। তাই স্তন ক্যানসার না হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে থাকে। চিকিৎসকের কথায়, ‘‘একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যাঁরা স্তন্যপান করান, তাঁদের তুলনায় স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি সেই সব মেয়েদের বেশি, যাঁরা করান না। গবেষণাগুলিতে বলা হয়েছে, স্তন্যপান করালে স্তন ক্যানসারের থেকে দ্বিগুণ সুরক্ষা মিলতে পারে।’’