প্রতীকী চিত্র। ছবি: সংগৃহীত।
মাঝবয়সে অনেকেই কাঁধের ব্যথায় কাবু হতে পারেন। অনেক সমসয় দেখা যায়, ব্যথার পাশাপাশি ব্যক্তি হাত নাড়াতে পারেন না। এই পরিস্থিতিকে বলা হয় ‘ফ্রোজ়েন শোলডার’। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে ফ্রোজ়েন শোলডারের সমস্যা বাড়তে থাকে। তবে সহজেই কয়েকটি লক্ষণে সমস্যাটিকে চিনে নেওয়া সম্ভব।
কারণ কী
ফ্রোজ়েন শোলডার কী কী কারণ হতে পারে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বরং কারণ বোঝার জন্য কাঁধ কী ভাবে কাজ করে তা বোঝা উচিত। কাঁধের শেষে একটি গোলাকার বলের সঙ্গে হাত যুক্ত থাকে। কোনও কারণে সেখানকার পেশি প্রদাহের কারণে ফুলে গেলে, তখন অস্থিসন্ধি শক্ত হয়ে যায়। পেশির নমনীয়তা কমে যায়। ফলে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বের পর ব্যক্তির পক্ষে হাত আর নাড়ানো সম্ভব হয় না (মূলত কাঁধের উপরের দিকে হাত তোলার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়)। শুরু হয় ব্যথা।
কী কী পর্যায়
১) প্রাথমিক পর্যায়ে কাঁধে ব্যথা হয়। তার পর ধীরে ধীরে কাঁধের নড়াচড়া কঠিন হয়ে ওঠে।
২) দ্বিতীয় পর্যায়ে ব্যথা কমলেও কাঁধের পেশির নমনীয়তা কমে যায়। সংশ্লিষ্টি পেশিগুলি শক্ত হয়ে যায়। এই পর্যায়টি ৪ থেকে ১২ মাস পর্যন্ত থাকতে পারে।
৩) এই পর্যায়ে ব্যক্তি চিকিৎসার পর ধীরে ধীরে সেরে ওঠেন। কাঁধের ব্যথা কমে এবম নয়মীয়তা বৃদ্ধি পায়। ফলে হাত আগের মতো ধীরে ধীরে নাড়ানো সম্ভব হয়। পুরোপুরি সেরে উঠতে ব্যক্তির ৬ মাস থেকে ২ বছর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
ফ্রোজ়েন শোলডার-এর নেপথ্যে
১) যাঁদের সুগার রয়েছে, তাঁরা ফ্রোজ়েন শোলডারের সমস্যা হতে পারে। দেখা গিয়েছে প্রায় ২০ শতাংশ সুগারের রোগী কোনও না কোনও সময়ে এই সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছেন।
২) থাইরয়েডের মাত্রা বেশি বা কম হলেও ব্যক্তির ফ্রোজ়েন শোলডার হতে পারে।
৩) হার্টের রোগ যাঁদের রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রেও অনেক সময়ে ফ্রোজ়েন শোলডারের সমস্যা দেখা যেতে পারে।
৪) পার্কিনসন্স রোগ থেকেও অনেক সময়ে ব্যক্তির ফ্রোজ়েন শোলডার হতে পারে।
৫) অনেক সময়ে দেখা গিয়েছে, স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর ব্যক্তির ফ্রোজ়েন শোলডারের সমস্যা শুরু হয়েছে।
চিকিৎসা পদ্ধতি
সাধারণত ফ্রোজ়েন শোলডারের ক্ষেত্রে কোনও অস্থিরোগ চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা যায়। ব্যথার ক্ষেত্রে ঠান্ডা সেঁকে উপকার মেলে। আবার অনেক সময়ে ফিজ়িওথেরাপি করার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। ব্যথা বা প্রদাহ যদি বাড়ে এবং পরিস্থিতি জটিল হলে অনেক সময় ব্যক্তিকে কাঁধে স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন নিতে হতে পারে।