ছবি : সংগৃহীত।
বিছানার আরামকে গায়ে মেখে উপুড় হয়ে শোওয়ার সুখ আলাদাই। অনেকে রাতে ও ভাবেই ঘুমোন। তাতে কারও শ্বাস নেওয়ার সুবিধা হয়। কারও নাকডাকার সমস্যা দূরে থাকে। কিন্তু যদি সার্বিক স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রাখতে হয়, তবে ও ভাবে না ঘুমোনোই ভাল! বলছে একটি গবেষণা।
রাতের ঘুম সাধারণত ঘণ্টা ৭-৮-এর হয়েই থাকে। আর ঘুমোনোর সময় শরীরের উপর মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণও থাকে না। মস্তিষ্ক সেই সময়ে থাকে বিশ্রামে। তাই ভুল ভাবে ঘুমোলে শরীরে যদি কিছু সমস্যা হয়, তবে তা শুধরে নেওয়ার উপায় থাকে না। উপুড় হয়ে ঘুমোনোর ক্ষেত্রে তেমন সম্ভাবনা প্রভূত। কারণ, ওই ভাবে ঘুমোলে মেরুদণ্ড বেঁকে থাকে। ঘাড়ে, পিঠে এবং কোমরে অস্বাভাবিক চাপ পড়ে। রক্ত চলাচলেও সমস্যা হতে পারে। পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার বেন্টলির কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বলছে, এই সব ক’টি সমস্যা এবং তা থেকে জাত নানা শারীরিক অসুস্থতার কারণ হতে পারে উপুড় হয়ে ঘুমোনোর অভ্যাস।
গবেষকেরা জানার চেষ্টা করছিলেন, ঘুমোনোর ধরনের সঙ্গে শারীরিক সুস্থতার কোনও যোগসূত্র রয়েছে কি না। তার খোঁজ করতে গিয়েই প্রকাশ্যে এসেছে নানা তথ্য। গবেষকেরা জানিয়েছেন, পেটের উপর চাপ দিয়ে উপুড় হয়ে শোয়া ঘুমোনোর সব থেকে খারাপ ‘ধরন’গুলির মধ্যে একটি। তা থেকে নানা শারীরিক সমস্যা হতে পারে।
১ । ঘাড়ে এবং পিঠে ব্যথা: কারণ, উপুড় হয়ে শুলে নিঃশ্বাস নেওয়ার সুবিধার জন্য কোনও এক দিকে মাথা ঘুরিয়ে রাখতে হয়। সে ক্ষেত্রে পিঠ সোজা থাকে আর ঘাড় এক দিকে বেঁকে থাকে। গবেষণা বলছে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা একই অবস্থায় মাথা একটা দিকে ঘুরিয়ে উপুড় হয়ে শুলে তার চাপ পড়ে মেরুদণ্ডের উপর। যা থেকে ঘাড় এবং পিঠে ব্যথার দীর্ঘমেয়াদি ব্যথার সমস্যায় ভুগতে হতে পারে।
২। স্নায়ুর সমস্যা: উপুড় হয়ে শুলে পিঠ সোজা থাকে কিন্তু কোমর এবং ঘাড় থাকে বেঁকে। মেরুদণ্ড অদ্ভুত ভাবে দু’ দিকে মুচ়ড়ে থাকে। যার প্রভাব পড়ে স্নায়ুতেও। গবেষণা বলছে, এর পরে স্নায়ুতে চাপ পড়ে, পায়ে ঝিঁঝিঁ ধরা বা পা অসাড় হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা তৈরি হতে পারে।
৩। ত্বকে বলিরেখা: উপুড় হয়ে শুলে মুখের উপর চাপ পড়ে বেশি। সে ক্ষেত্রে মুখের চামড়া ঝুলে পড়ার বা ত্বকে বয়সের ছাপ বা বলিরেখা পড়ার আশঙ্কা বাড়বে।
৪। অন্তঃসত্ত্বা হলে: সন্তানসম্ভবা মহিলাদেরও ওই ভাবে শোয়া উচিত নয় বলে জানাচ্ছে গবেষণা। কারণ তা শরীরে রক্ত চলাচলে বাধা দিতে পারে। যা অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করতে পারে।