Bread Omelette

ডিম-পাউরুটি খেয়ে সকাল শুরু হয়, এমন প্রাতরাশ কি আদৌ স্বাস্থ্যকর? রোজ খেলে কী হতে পারে শরীরে

পাউরুটি আর অমলেট। সহজ, সুস্বাদু, আরামদায়ক। কিন্তু নিয়ম করে প্রতি দিন এই খাবার খেতে হলে জেনে নিতে হবে, শরীরের উপর তার প্রভাব কেমন। আপনি কোন পাউরুটি বেছে নিচ্ছেন, অমলেট কী ভাবে বানাচ্ছেন, কোন তেলে রাঁধছেন, তার উপর নির্ভর করছে এই খাবার স্বাস্থ্যকর কি না।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২৫ ১২:৪৬
Share:

পাউরুটি আর অমলেটের যুগলবন্দি। ছবি: সংগৃহীত।

দু’টি পাউরুটি আগুনে সেঁকে নিলেন। সঙ্গে একখানি অমলেট বানিয়ে নিলেন। পাউরুটিতে মাখন বা জ্যাম মাখাতেও পারেন। অনেকে আবার শুকনোই পছন্দ করেন। বিলিতি প্রাতরাশের এমন ভারতীয় সংস্করণ এখন বাঙালির ঘরে ঘরে। সহজ, সুস্বাদু, আরামদায়ক। কিন্তু নিয়ম করে প্রতি দিন এই খাবার খেতে হলে জেনে নিতে হবে, শরীরের উপর তার প্রভাব কেমন। আপনি কোন পাউরুটি বেছে নিচ্ছেন, অমলেট কী ভাবে বানাচ্ছেন, আর কোন তেলে রাঁধছেন,— সব কিছু খতিয়ে দেখে স্বাস্থ্যকর বা অস্বাস্থ্যকর তকমা দিতে হবে এই প্রাতরাশকে। রক্তে গ্লুকোজ়ের ভারসাম্য বজায় রাখা, লিপিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা এবং শক্তির বৃদ্ধি ও হ্রাস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করে নিতে হবে।

Advertisement

পাউরুটির গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কত, তা নির্ভর করে তার ধরনের উপর। যদি পাউরুটি গোটাশস্যের হয়, তা হলে তাতে ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজ বেশি থাকে। এতে দীর্ঘ ক্ষণ পেট ভরা থাকে এবং রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায় সহজে। হোলগ্রেন পাউরুটি খেলে পেট বেশি ক্ষণ ভরা থাকে। অন্য দিকে মাল্টিগ্রেন পাউরুটি বিভিন্ন শস্য মিলিয়ে বানানো হয় বলে পুষ্টিগুণ আরও বেশি। আর পরিশোধিত সাদা পাউরুটি বানানো হয় দানাশস্যের খোসা ছাড়িয়ে। এটি খেলে রক্তে গ্লুকোজ় দ্রুত শোষিত হয়। সাদা পাউরুটি সাধারণত ময়দা দিয়ে তৈরি বলে এতে ফাইবার কম থাকে এবং প্রিজ়ারভেটিভ বেশি থাকে। এতে হজমের সমস্যা বাড়তে পারে, রক্তে সুগার হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে, এবং দীর্ঘ দিন ধরে খেলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। পুষ্টিগুণ তুলনামূলক ভাবে কম এই সাদা পাউরুটিগুলিতে।

এ বার অমলেটের প্রসঙ্গে আসা যাক। ডিম, অর্থাৎ উৎকৃষ্ট মানের প্রোটিনের উৎস দিয়ে তৈরি করা হয় অমলেট। নিয়মিত অমলেট খেলে শরীরে শক্তি বাড়ে, পেশি গঠনে সাহায্য করে এবং বিপাকক্রিয়া সক্রিয় রাখে। তাই পাউরুটি আর অমলেটের যুগলবন্দি অনেকেরই পছন্দের। অমলেটে যদি টম্যাটো, পেঁয়াজ, শাকসব্জি যোগ করেন, তা হলে এই জলখাবার আরও বেশি পুষ্টিকর হয়। ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট যুক্ত করার জন্য এই পদ্ধতিতে অমলেট বানাতে পারেন।

Advertisement

কোন তেলে অমলেট বানাচ্ছেন, সেটিও এ ক্ষেত্রে জরুরি। অমলেট বানাতে অতিরিক্ত তেল বা মাখন ব্যবহার করে ফেলেন অনেকে। এতে জলখাবার অকারণে বেশি ভারী হয়ে যায়। তাতে হজমের সমস্যা, ওজন বৃদ্ধি পাওয়া, পেটফাঁপার সমস্যা দেখা দেয়। অনেকে তেলের কথা ভাবেন না, অথচ স্বাস্থ্যে এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি। অলিভ অয়েলে মনো-আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা হৃদ্‌স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকায় প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। অন্য দিকে সর্ষের তেল ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে পূর্ণ, সেটিও হৃদ্‌স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল ও প্রদাহনাশী গুণাগুণ রয়েছে। সূর্যমুখীর তেল ভিটামিন ই সমৃদ্ধ, তাই ত্বক ও কোষের সুরক্ষায় সহায়ক। হালকা বলে রোজের রান্নার জন্য উপযুক্ত। মাখন বা ঘি স্বাদ বাড়ায় বটে, কিন্তু স্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি, যা নিয়মিত বেশি খেলে কোলেস্টেরল বাড়াতে পারে। মাঝে মধ্যে অল্প ব্যবহার করা যায়, তবে প্রতি দিন নয়। অতিরিক্ত তেলে ভাজা অমলেট নিয়মিত খেলে ওজন বাড়তে পারে। ব্লাডসুগারের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। দীর্ঘ মেয়াদে হার্টের উপর প্রভাব পড়তে পারে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement