Slightly Green vs Ripe Banana

কলা কি সামান্য কাঁচা অবস্থায় খেলে বেশি উপকার? সবুজাভ, হলুদ, না কি খয়েরি, কোনটি বাছবেন?

ঈষৎ কাঁচা অবস্থায় থাকা বা হালকা সবুজ ভাব থাকা কলা মানেই ভাল আর পুরোপুরি পেকে যাওয়া কলা খাওয়া খারাপ? না কি প্রত্যেক ধরনেরই আলাদা আলাদা দোষ এবং গুণ আছে!

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৫ ১৪:৫৮
Share:

ঈষৎ সবুজ ভাব থাকা কি ভাল? ছবি : সংগৃহীত।

উজ্জ্বল হলুদ রং। গায়ে বড়জোর সামান্য বাদামি ছিটে দাগ। বাজারে গেলে দেখে শুনে এমন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কলাই কিনে আনা হয় সচরাচর। ঈষৎ সবুজ ভাব থাকলে দোকানি বলে দেন, এক দিন রেখে খেতে। আবার বেশি বাদামি হলে জানান ‘স্বাদে মিষ্টি হবে’। সত্যি বলতে কী, কলার রং নিয়ে এত ভাবনাচিন্তা করেননি মানুষজন। কিন্তু ইদানীং কিছু পুষ্টিবিদকে বলতে শোনা যাচ্ছে, কলা ঈষৎ কাঁচা অবস্থায় খাওয়াই স্বাস্থ্যের জন্য ভাল! কিন্তু কেন?

Advertisement

এমস প্রশিক্ষিত আমেরিকা নিবাসী অন্ত্রের চিকিৎসক সৌরভ শেট্টি জানাচ্ছেন, ঈষৎ কাঁচা ভাব থাকা অবস্থায় কলা খেলে তা অন্ত্রের জন্য ভাল। কারণ, তাতে রেজ়িস্ট্যান্ট স্টার্চ থাকে বেশি। এই রেজ়িস্ট্যান্ট স্টার্চ হল এক ধরনের ফাইবার, যা প্রিবায়োটিক হিসাবে কাজ করে। আর প্রিবায়োটিক অন্ত্রের উপকারী ব্যাক্টেরিয়াকে সুস্থ রাখে। একই সঙ্গে রক্তে শর্করার মাত্রাও খুব বেশি বাড়তে দেয় না। অন্ত্র চিকিৎসকের এই বক্তব্য শুনলে মনে হতে পারে, অল্প কাঁচা অবস্থায় থাকা কলাই খাওয়া শরীরের জন্য সবচেয়ে ভাল। কিন্তু বিষয়টি আদৌ তা নয়।

ঈষৎ কাঁচা অবস্থায় থাকা বা হালকা সবুজাভ কলা মানেই ভাল আর পুরোপুরি পেকে যাওয়া কলা খাওয়া খারাপ— তা নয় মোটেই। ইন্টারনেটে আচমকাই ‘স্লাইটলি র বানানা’ বা অল্প কাঁচা কলার জনপ্রিয়তা বাড়তে দেখে বিষয়টি স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করেছেন কর্ণ রাজন নামে ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস নথিভু্ক্ত এক সার্জন। লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজ প্রশিক্ষিত চিকিৎসক কর্ণ বলছেন, কাঁচা হোক বা পাকা— প্রত্যেক ধরনের কলারই আলাদা আলাদা গুণ রয়েছে। কে কোনটি বাছবেন, তা তাঁদের ব্যক্তিগত প্রয়োজনের উপর নির্ভর করবে।

Advertisement

কাঁচকলা : কাঁচকলায় রেজিস্ট্যান্ট স্টার্চ রয়েছে সবচেয়ে বেশি। উপকারী ফাইবারে ভরপুর এই কলা দীর্ঘ ক্ষণ আপনার পেট ভরিয়ে রাখে। হজম থেকে শুরু করে পেটের সমস্যা দূরে রাখে। অন্ত্রে থাকা উপকারী ব্যাক্টেরিয়াকে সুস্থ রাখে। ফলে অন্ত্রের স্বাস্থ্যের পাশাপাশি, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও ভাল থাকে। এ ছাড়া কাঁচকলায় যেহেতু শর্করা অত্যন্ত কম পরিমাণে থাকে, তাই এটি ডায়াবিটিসের রোগীদের জন্যও ভাল। কিন্তু এই কলা খাওয়ার জন্য রান্না করতে হয় কিংবা সেদ্ধ করে খেতে হয়।

ঈষৎ সবুজাভ কলা: কর্ণ বলছেন, ‘‘অল্প কাঁচা ভাব থাকা কলা তুলনায় অনেক বেশি ব্যালান্সড। অর্থাৎ স্বাদ-স্বাস্থ্য দু’দিকই বজায় রাখতে পারে।’’ এই ধরনের কলায় ফাইবারের মাত্রা থাকে বেশি। হালকা মিষ্টি স্বাদও আসে। পাশাপাশি, এতে পটাশিয়ামও পাওয়া যায়। যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।

সম্পূর্ণ পেকে যাওয়া কলা: অর্থাৎ সম্পূর্ণ হলুদ। তাতে অল্প বাদামি ছিটে থাকতেও পারে। এতে ফাইবারের মাত্রা কিছুটা কম। তবে মিষ্টত্ব বেশি। হজম করা সহজ। যাঁরা শরীরচর্চা করেন, তাঁদের শক্তি সঞ্চয়ের জন্য অত্যন্ত ভাল খাবার। এটি থেকে তৈরি হতে থাকে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট ক্যাটেশিন। যা গ্রিন টি-তে পাওয়া যায়। এতে পটাশিয়ামের মাত্রাও কিছুটা বাড়ে।

খোলা বাদামি হয়ে গিয়েছে, এমন কলা: ফাইবারের মাত্রা সবচেয়ে কম। তবে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টের পরিমাণে সবচেয়ে এগিয়ে। এতে ক্যাটেসিন থাকে প্রচুর পরিমাণে। এই কলা বেকিংয়ের জন্য অত্যন্ত ভাল। বাড়িতে কেক বা পাউরুটি বানানো যেতে পারে এই কলা দিয়ে। যা স্বাস্থ্যকরও হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement