প্রতীকী চিত্র। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
হাসির সঙ্গে সুখ, আনন্দ সবই জড়িত। কিন্তু মানুষ নাকি এখন হাসতে ভুলে যাচ্ছে। তাই বিশ্ব জুড়ে ‘লাফিং ক্লাব’গুলি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। কারণ ব্যস্ত জীবনে শরীর এবং মন ভাল রাখতে হাসি জরুরি। কিন্তু হাসিও যে প্রাণঘাতী হতে পারে! অন্তত সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় এ রকমই দাবি করা হয়েছে।
সম্প্রতি ‘দ্য ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল’-এ একটি গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। তাতে জানানো হয়েছে, কয়েকটি ক্ষেত্রে জোরে জোরে হাসির অভ্যাসে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। জ্ঞান হারানো, হৃৎস্পন্দনের তারতম্য এবং কণ্ঠনালিতে ছিদ্র তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। ইংল্যান্ডের বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক ১৯৪৬ সাল থেকে পরবর্তী ৭০ বছর পর্যন্ত রোগীদের তথ্য সংগ্রহ করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। জোরে হাসার ফলে দেহের একাধিক পেশীর উপর চাপ তৈরি হয়।
হাসির কুপ্রভাব
১) খুব জোরে বেশি ক্ষণ হাসলে রক্তচাপ হঠাৎ করে কমে যেতে পারে। তার ফলে কেউ অল্প সময়ের জন্য সংজ্ঞা হারাতে পারেন। আবার কারও কারও ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় জোরে হাসার ফলে বুকে চাপ ধরে স্ট্রোক হতে পারে। যদিও এই ধরনের হার্ট অ্যাটাক কমই হয়।
২) যাঁরা হার্টের রোগী, তাঁদের ক্ষেত্রে জোরে জোরে হাসা ক্ষতিকারক হতে পারে। কখনও কখনও হাসির জন্য তাঁদের হৃৎস্পন্দনের ছন্দে পরিবর্তন ঘটতে পারে। আবার জোরে হাসার ফলে হৃৎপিণ্ডের ভাল্ব দুর্বল হতে পারে।
৩) জোরে হাসার ফলে ইসোফেগাস (খাদ্যনালির সম্মুখভাগ) ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিশেষ পরিস্থিতিতে খাদ্যনালিতে ছিদ্র হতে পারে। এ রকম পরিস্থিতিতে অবিলম্বে ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত। আবার অনেক সময়ে জোরে হাসির ফলে স্বরযন্ত্রের ক্ষতিও হতে পারে।
৪) জোরে জোরে হাসার ফলে কারও কারও ক্ষেত্রে দেহে দমবন্ধ করা চাপ তৈরি হয়, যা ক্ষেত্রবিশেষে স্নায়ুর ক্ষতি করতে পারে।
৫) যাঁদের শরীরের নীচের ভাগের পেশি দুর্বল, তাঁদের ক্ষেত্রে জোরে হাসির প্রভাব অনেক সময়ে অজান্তে মল-মূত্রের বেগ তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে বয়স্কদের ক্ষেত্রে এ রকম সমস্যা দেখা যায়।
৬) অনেক সময়ে জোরে হাসার ফলে চোখের উপর চাপ তৈরি হয়। তার ফলে চোখে লাল ভাব দেখা যেতে পারে। ব্যতিক্রমী কয়েকটি পরিস্থিতিতে হাসির চাপে চোখের স্নায়ু ছিঁড়ে রক্তপাত পর্যন্ত হতে পারে।