উৎসবের দিনে শরীর সুস্থ রাখার পাঁচ উপায়। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
সামনেই কালীপুজো, তার পরেই ভাইফোঁটা। উৎসবের মরসুম মানেই রকমারি মিষ্টি, ভাজাভুজি, ভূরিভোজ থাকবেই। টানা কয়েক দিন এমন সব খাবার খাওয়া মানেই শরীরে বাড়তি ক্যালোরির প্রবেশ। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা বেড়ে যাওয়া।
শুভ অনুষ্ঠানে মিষ্টিমুখ করতেই হয়। কিন্তু বিপদ লুকিয়ে তাতেই। পুষ্টিবিদেরা বলেন, চিনি হল ‘এম্পটি ক্যালোরি’। অর্থাৎ চিনিতে ক্যালোরি ছাড়া কোনও খাদ্যগুণই মেলে না। মিষ্টিও কার্যত তেমনই। খাওয়া মানেই প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি শরীরে যাওয়া। ডায়েট করে দিনভর যে ক্যালোরি খাওয়ার কথা, দুটো মিষ্টি খাওয়া মানে দিনের বরাদ্দ ক্যালোরির অর্ধেক তাতেই চলে যায়। আর এর ফল পাওয়া যায় উৎসব শেষের পর। ওজনবৃদ্ধির পাশাপাশি গ্যাস, অম্বলের সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। এমন সময় বাড়তি ক্যালোরি ঝরিয়ে নিজেকে কী ভাবে ফিট রাখবেন?
জল: উৎসব-অনুষ্ঠানে নিয়ম করে জল খাওয়ার কথা মাথায় না থাকাটাই স্বাভাবিক। জল শুধু শারীরবৃত্তীয় কাজ সুষ্ঠু ভাবে সম্পাদনে সাহায্য করে না, শরীর থেকে টক্সিন বার করে দিতেও সাহায্য করে। সারা দিনে যতটা সম্ভব জল খাওয়া দরকার। সকালে উঠে ঈষদুষ্ণ জলে পাতিলেবুর রস মিশিয়ে খেলে, আদা চা, পুদিনা চা খেলেও শরীর ভাল থাকবে। তবে আদা বা পুদিনা চায়ে চা পাতা দেওয়া যাবে না। জিরে-আদা ফুটিয়ে সেই জল খেতে হবে। এতে গ্যাসের সমস্যা যেমন কমবে, তেমনই ভেষজ চা ডিটক্স পানীয়ের কাজও করবে। ওজন ঝরানো এবং সুস্থ থাকার জন্য শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বার করে দেওয়া খুব জরুরি।
হালকা খাবার: উৎসবে ভূরিভোজের পরেও, বেঁচে যাওয়া খাবার ফ্রিজে রেখে ২-৩ দিন ধরে খাওয়ার চল আছে। মিষ্টি থেকে মাংস, তরকারি সব কিছুই রেখে খাওয়া হয়। এতেও পেটের সমস্যা বাড়তে পারে। বরং একবেলা ভূরিভোজ হলে, অন্য বেলায় হালকা খাবার খাওয়া দরকার। এতে হজমের সমস্যা এড়ানো যাবে। শরীর খারাপ হওয়ার ঝুঁকিও কমবে।
শরীরচর্চা: উৎসব মিটলে বেশি ক্ষণ ধরে শরীরচর্চা করে বাড়তি ক্যালোরি ঝরিয়ে ফেলবেন— এমন মানসিকতা বিশেষ কাজের নয়। ফিটনেস প্রশিক্ষকেরা বলেন, একবারে অতিরিক্ত শরীরচর্চা স্বাস্থ্যের জন্য ভাল নয়। তার চেয়ে প্রতিদিন অল্প করে হলেও হালকা শরীরচর্চায় শরীর ভাল থাকবে। প্রতি দিন খানিক ক্ষণ ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ় করলে বা সকাল-বিকাল হাঁটাহাটি করলে শরীর সুস্থ থাকবে। বাড়তি ক্যালোরি কিছুটা হলেও ঝরে যাবে এতে।
ঘুম: সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত ঘুম জরুরি। ঘুম ঠিকমতো না হলে হরমোনের ভারসাম্য বিগড়ে যায়। তার প্রভাব পেটের স্বাস্থ্যে, মস্তিষ্কেও পড়ে। ঠিক সেই কারণে রাতে ঘুম না হলে হজমের সমস্যা হয়। শরীর ক্লান্ত লাগে। উৎসবের দিনেও খুব বেশি রাত না করে ঘুমোনোই ভাল।
খাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ: চা, কফি, মিষ্টি, মদ— উৎসবের দিনে যেটাই খাওয়া হোক না কেন, তাতে নিয়ন্ত্রণ থাকা জরুরি। পরিমিত আহারই সু্স্থতার চাবিকাঠি। কার্বনযুক্ত পানীয়, অতিরিক্ত চা-কফি এড়িয়ে স্বাস্থ্যকর মকটেল, ভেষজ চায়ে চুমুক দেওয়া যায়। মিষ্টি খেলেও তার মাত্রা থাকা জরুরি।
শুধু উৎসবের দিনে নয়, সারা বছরই এই অভ্যাসগুলি মানলে শরীর সুস্থ থাকবে।