Harmful effects of Cold Shower

গরমের সময়েও কেন ঠান্ডা জলে স্নান করবেন না? কোন বিপদের ইঙ্গিত দিলেন গবেষকেরা

ঠান্ডা মানে ঠিক কতটা ঠান্ডা জলে স্নান করেন, সেটাই হল আসল ব্যাপার। যদি বরফ জলে স্নান করেন, তা হলে বিপজ্জনক। আর যদি ততটা না হলেও বেশ কনকনে ঠান্ডা জল হয়, তা হলেও ক্ষতিকর। কেন?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৫ ১৬:৩৩
Share:

গরমে ঠান্ডা জলে স্নান করা কেন উচিত নয়? ছবি: ফ্রিপিক।

গরমের সময়ে ঠান্ডা জলে স্নান করতেই ভাল লাগে। অনেকেই আবার জলে কয়েকটি বরফ ফেলে তা আরও ঠান্ডা করে নেন। হাঁসফাঁস করা গরমে এমন ঠান্ডা জল মাথায় ঢাললেই আরাম হয় বেশি। রাতের বেলা বালতিতে জল ভরে রেখে দিলে, সকালে তা বেশ ঠান্ডা হয়েই থাকে। এমন জলেও স্নান করার অভ্যাস আছে অনেকেরই। যদি আপনারও এমনই অভ্যাস থাকে, তা হলে বদলে ফেলুন আজই। গরমের দিনেও ঠান্ডা জলে স্নান করতে নিষেধই করছেন গবেষকেরা। কিন্তু কেন?

Advertisement

ঠান্ডা মানে ঠিক কতটা ঠান্ডা জলে স্নান করেন, সেটাই হল আসল ব্যাপার। যদি বরফ জলে স্নান করেন, তা হলে বিপজ্জনক। আর যদি ততটা না হলেও বেশ কনকনে ঠান্ডা জল হয়, তা হলেও ক্ষতিকর। ঠান্ডা জলে স্নান করা কেন ভাল নয়, তা নিয়ে পাবমেড থেকে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছিল কয়েক মাস আগে। গবেষকেরা জানিয়েছিলেন, প্রত্যেক মানুষের শরীরই একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা সইতে পারে। শরীরের জন্য সহনশীল তাপমাত্রা হল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর বেশি গরম সহ্য করার মুশকিল হয়ে পড়ে। যদি ৩৯ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কেউ ঘণ্টার পর ঘণ্টা থাকেন, তা হলে শরীর খারাপ হতে পারে। ওই সময়ে যদি শরীর ঠান্ডা করতে কেউ ঠান্ডা জল হুড়হুড় করে মাথায়-গায়ে ঢালেন, তা হলে রক্তচাপ আচমকা বেড়ে যাবে, রক্তজালিকাগুলিতে রক্ত জমাট বাঁধতে থাকবে, ফলে হৃৎস্পন্দনের হার বাড়বে।

এমন হওয়ার কারণ কী?

Advertisement

প্রচণ্ড গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে কেউ স্নান করেন, আবার কেউ শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র চালিয়ে দেন। কিন্তু এগুলিতে কি আদৌ কাজ হয়? গবেষকেরা জানাচ্ছেন, ঠান্ডা জলে স্নান করলে বা ঠান্ডা ঘরে থাকলে, ত্বক ঠান্ডা হয় বটে, কিন্তু শরীরের ভিতরের অংশ মোটেই ঠান্ডা হয় না। কারণ, শরীরের নিজস্ব ‘কুলিং’ পদ্ধতি আছে। একে বলে হয় ‘ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন’। শরীর তাপ ছাড়ে এবং নিজে থেকেই ঠান্ডা হয়। ৬০ শতাংশ তাপ নির্গত হয় ঘামের মাধ্যমে। গরমে থাকলে যে দরদর করে ঘাম হয়, সেটা কিন্তু আসলে শরীরের ওই ‘কুলিং’ পদ্ধতি। ওই সময়ে রক্তজালিকাগুলির আয়তন বাড়ে। আরও বেশি পরিমাণে রক্ত শরীরের ‘সারফেস’ বা ত্বকের দিকে প্রবাহিত হয়। ওই সময়ে যদি বরফ ঠান্ডা জল বা অতিরিক্ত ঠান্ডা জল ত্বকের সংস্পর্শে আসে, তা হলে শরীর মনে করে যে, তার নিজস্ব ঠান্ডা হওয়ার পদ্ধতির আর প্রয়োজন নেই। ফলে তাপ নির্গত হওয়ার প্রক্রিয়াটি আচমকা থেমে যায়। এতে রক্ত চলাচলের প্রক্রিয়া বাধা পেয়ে রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষণ দেখা দিতে থাকে। রক্তচাপ আচমকা বেড়ে যায় এবং হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে যেতে পারে।

গবেষকেরা জানাচ্ছেন, গরম লাগছে মানেই যে ঠান্ডা জলে স্নান করতে হবে, তা নয়। আগে শরীরকে নিজে থেকেই ঠান্ডা হতে দিন। এর পরে ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করুন। জলের তাপমাত্রা ২৬ থেকে ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেই ভাল। এর বেশি গরম হলে চলবে না। এতে শরীরের ক্লান্তিও কাটবে, ত্বকের স্বাস্থ্যও ভাল হবে। গরমের সময়ে শরীরে যে অস্বস্তি হয়, তা-ও দূর হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement