মোমো খাওয়া কি উচিত? ছবি: সংগৃহীত।
শহর থেকে মফস্সলের গলি বা রেস্তরাঁ, মোমো সর্বত্র জনপ্রিয়। গরম ভাপে সেদ্ধ নরম ডাম্পলিং, পাশে ঝাল লাল চাটনি, সঙ্গে গরম ধোঁয়া ওঠা স্যুপ। এক প্লেটেই মন ভরে যায়। রাস্তার ভাজাভুজির তুলনায় স্বাস্থ্যকর বলে নামডাক রয়েছে মোমোর। আর তাই জনপ্রিয়তাও বরাবর তুঙ্গে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এই খাবার কি আদপেই স্বাস্থ্যকর?
এক কালে তিব্বতি এবং হিমালয় অঞ্চলের বিশেষ খাবার এখন গোটা ভারতের যত্রতত্র পাওয়া যায়। কখনও কেবল ভাপে তৈরি হওয়া, কখনও বা ভাজা। কোথাও কোথাও আফগানি বা তন্দুরি মোমোও পাওয়া যায়। এক এক অঞ্চলে এক এক রকম। কিন্তু মূলে রয়েছে কেবল সামান্য ময়দা, সব্জি, মাংস এবং ভাপ। শুনে স্বাস্থ্যকরই মনে হয়।
মোমো নিয়ে জানালেন পুষ্টিবিদ রুজুতা দিবেকর। ছবি: সংগৃহীত।
কিন্তু পুষ্টিবিদ রুজতা দিবেকর তেমন মনে করেন না। তাঁর দাবি, মোমো আসলে পাহাড়ি অঞ্চলের খাবার। ঠান্ডা আবহাওয়ায়, স্থানীয় পরিবেশে, স্থানীয়দের হাতে বানানো মোমো শরীরের জন্য ভাল। কিন্তু কলকাতা বা অন্য শহরে রাস্তায় যা পাওয়া যায়, সেটি কেবলই ‘স্ট্রিট ফুড’-এর দলে পড়ে। তাকে স্বাস্থ্যকর বলা ঠিক নয়।
তবে মোমো নিয়ে আতঙ্কেরও কিছু নেই বলে দাবি রুজুতার। তাঁর মতে, যদি দৈনন্দিন খাবার আর জীবনযাত্রা সঠিক থাকে, তা হলে সপ্তাহে এক দিন মোমো খেলে ক্ষতি নেই। মাঝেমাঝে মোমোর স্বাদ উপভোগ করাই যায়। রুজুতা সব সময়ে ঘরে তৈরি খাবার, মরসুমি খাবার, এবং সুস্থ জীবনযাত্রার প্রচার করেন। তিনি মনে করেন, প্রত্যেকের বাড়ির হেঁশেলেই সুস্থ থাকার চাবিকাঠি রয়েছে। অন্য ভূগোলের খাবারের চেয়ে একেবারে স্থানীয় খাবারে ভরসা রাখলে স্বাস্থ্য ভাল থাকবে বলে দাবি রুজুতার।
মোমো নিয়ে অনেকের ধারণা, ময়দা নাকি পেটে আটকে থাকে। রুজতা স্পষ্ট বলছেন, ‘‘এটা একেবারেই ভুল ধারণা। শরীর ঠিক মতো কাজ করলে ময়দাও হজম হয়ে যায়।’’ তবে সপ্তাহে এক বার খাওয়ার ক্ষেত্রেও সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। স্টল বা ক্যাফেতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা অত্যন্ত জরুরি। রাস্তা ধারের যে মোমো খাচ্ছেন, দোকানটি কতটা পরিষ্কার, জল কেমন ব্যবহার হচ্ছে, উপকরণ কতটা ভাল, এসব খেয়াল না করলে ঝুঁকি থেকেই যায়। বিশেষ করে বর্ষাকালে, যখন আর্দ্রতার কারণে ব্যাক্টেরিয়া ও জীবাণু দ্রুত ছড়ায়, তখন অসতর্ক ভাবে খাওয়া মোমো শরীর খারাপের কারণ হতে পারে।