PM Modi advice on Obesity

স্থূলত্ব কমাতে কী করা উচিত? দেশবাসীকে দু’টি বিষয় মাথায় রাখতে বললেন প্রধানমন্ত্রী মোদী

ভারতে ডায়াবিটিস আক্রান্তদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বাড়ছে স্থূলত্ব এবং তজ্জনিত হৃদ্‌রোগের সমস্যাও। বয়স্ক নাগরিকদের পাশাপাশি ২০-৩০ বছরের তরুণ-তরুণীর শরীরেও বাসা বাঁধছে হৃদ্‌রোগ, ডায়াবিটিস।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৫ ২১:২৫
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

অনুরাগীরা বলেন তিনি জনতার মন দারুণ বোঝেন। পর পর তিন বার দেশের শাসক হিসাবে নিজেকে টিকিয়ে রাখা সেই বুঝদার মনেরই প্রতিফলন। সমালোচকেরা আবার বলেন, তিনি প্রচারও করতে পারেন ভাল। বোঝেন বাজার কী চায়। সেই মতো অঙ্ক কষে চমক দেন। ঘুরিয়ে দেন খেলা। বৃহস্পতিবার দেখা গেল, তিনি ফিটনেস এবং পুষ্টিতত্ত্বেরও বিষয়েও জানেন। কারণ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীকে শিখিয়ে দিলেন স্থূলত্ব থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়। বললেন, কী ভাবে নিষ্কৃতি পাওয়া যায় ডায়াবিটিস বা হৃদ্‌রোগের মতো সমস্যা থেকে। কী সেই উপায়? দেশবাসীকে মোদী বললেন, ‘‘তেল খাওয়া কমান!’’

Advertisement

ভারতে ডায়াবিটিস আক্রান্তদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বাড়ছে স্থূলত্ব এবং তজ্জনিত হৃদ্‌রোগের সমস্যাও। বয়স্ক নাগরিকদের পাশাপাশি ২০-৩০ বছরের তরুণ-তরুণীর শরীরেও বাসা বাঁধছে হৃদ্‌রোগ, ডায়াবিটিস। বিভিন্ন সমীক্ষাতেই সেই সব সংখ্যা প্রকাশ্যে আসছে বার বার। মোদীও বলেছেন, ‘‘দেশে স্থূলত্বের সমস্যা বাড়ছে, ছোট থেকে বড় সবাই স্থূলত্বের সমস্যায় ভুগছেন। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের। কারণ, স্থূলত্ব ডায়াবিটিস এবং হৃদ্‌রোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয়!’’

তথ্যে ভুল নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবও বলছে, ভারতে ১৮ বছর বয়সিদের মধ্যে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার হার উদ্বেগজনক। ওই বয়সি রোগীর সংখ্যা ৭ কোটি ৭০ লক্ষ। এ ছাড়া ১৮ বছর বয়সি প্রি-ডায়াবিটিক ভারতীয়ের সংখ্যাও আড়াই লক্ষ। ভারতে ডায়াবিটিস পরিস্থিতি যে সত্যিই উদ্বেগজনক, তা আরও কয়েকটি সমীক্ষার উল্লেখ করলে বোঝা যাবে। একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, গোটা বিশ্বে ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হওয়ার হারে প্রথম চিন এবং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারত। গোটা বিশ্বের মোট ডায়াবিটিস রোগীর ১৭ শতাংশই রয়েছেন ভারতে। তাই ভারতকে বিশ্বের ডায়াবিটিসের রাজধানী বলেও অভিহিত করা হয়। অন্য দিকে ভারতে হৃদ্‌রোগের পরিসংখ্যানও উদ্বেগের। ২০২৩ সালের অক্টোবরের একটি সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে ভারতে ৪০-৬৯ বছর বয়সিদের মোট মৃত্যুর ৪৫ শতাংশই হৃদ্‌রোগজনিত কারণে। ওই সব সংখ্যা দেখে যখন স্বাস্থ্যবিদেরা দেশের জনগণের সার্বিক ভাল থাকা নিয়ে উদ্বিগ্ন, তখন মোদী সুস্থ থাকার দু’টি সহজ ওষুধ বলেছেন।

Advertisement

দেহরাদূনে ন্যাশনাল গেমসের উদ্বোধনে ‘ফিট ইন্ডিয়া’ সংক্রান্ত বক্তৃতায় মোদী বলেছেন, ‘‘আমি দেশবাসীকে দু’টি বিষয় মাথায় রাখতে বলব। এক, প্রতি দিন নিয়ম করে কিছুটা সময় শরীরচর্চা করুন। হয় হাঁটুন নয়তো যোগব্যায়াম করুন। যেটা করতে প্রাণ চায়। দুই, কী খাচ্ছেন সে দিকে মন দিন। সারা দিনের খাবার থেকে অস্বাস্থ্যকর স্নেহ পদার্থ বা তেলের পরিমাণ কমান।’’ কতটা তেল কমানো দরকারি, তা-ও জানিয়ে দিয়েছেন মোদী। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রতি মাসে খাবারে যে পরিমাণ তেল ব্যবহার করেন, হিসাব করে তা থেকে ১০ শতাংশ কমিয়ে দিন। এ রকম ছোট ছোট পদক্ষেপ করলেই দেখবেন জীবনে বড় বদল এসেছে।’’

মোদী তেল খাওয়া কমাতে বলছেন। কিন্তু চিকিৎসকেরা কী বলছেন? হৃদ্‌রোগের চিকিৎসক বলবীর সিংহ বলছেন, ‘‘তেল আমাদের খাবারে জরুরি। কারণ তেলে কিছু জরুরি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভাল রাখে। একই সঙ্গে ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে যাতে শরীর ভাল ভাবে গ্রহণ করতে পারে, তাতেও সাহায্য করে।’’ তবে একই সঙ্গে চিকিৎসক এ-ও বলছেন, ‘‘অতিরিক্ত তেল খেলে এবং শারীরিক শক্তি ক্ষয় নিয়মিত না করলে, তা হৃদ্‌রোগের সমস্যা তৈরি করতে পারে।’’ পুষ্টিবিদ ঋতু সমাদ্দার বলছেন, ‘‘এক জন সুস্থ মানুষের দিনে ২০-২৫ মিলিলিটার তেল লাগে। অর্থাৎ, ৩০ দিনে ৭৫০ থেকে ৯০০ মিলিলিটার তেল এক জনের প্রয়োজন। কিন্তু ভারতে সাধারণত এক জন সাধারণ নাগরিক এক লিটারের বেশি তেল খান। যদি ডায়াবিটিসের রোগী বা হার্টের রোগী হন তবে তাঁদের এক মাসে ৫০০ মিলিলিটারের বেশি তেল খাওয়া উচিত নয়।’’ আর যেটা খাওয়া উচিত নয় তা হল বাইরের ভাজাভুজি খাবার বা প্যাকেটজাত খাবারের তেল। ঋতু বলছেন, ‘‘ওই সমস্ত তেল অস্বাস্থ্যকর এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তার মধ্যে ট্রান্সফ্যাট এবং স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement