মাথার বালিশ থেকেও হতে পারে জটিল ফুসফুসের রোগ, কত সময় অন্তর বদলানো জরুরি? ছবি: ফ্রিপিক।
রাতে শুয়ে শ্বাসকষ্ট। কখনও টান উঠছে হাঁপানির। সকালে উঠে মাঝেমধ্যেই দেখেন, হাঁচি থামতেই চাইছে না। সেই সঙ্গে গলায় প্রচণ্ড ব্যথা। এ সবের কারণ শুধু ঠান্ডা লাগা না-ও হতে পারে। আসল খলনায়ক হয়তো আপনারই মাথার বালিশ। শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি। সাম্প্রতিক নানা গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, দীর্ঘ সময় ধরে একই বালিশ ব্যবহার করতে থাকলে এবং তা ঠিক মতো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করলে, তার থেকেও হতে পারে জটিল ফুসফুসের রোগ।
বালিশ থেকে কী ধরনের রোগ হতে পারে?
বালিশের কভার যদি অপরিচ্ছন্ন থাকে, তা হলে সেখানে ধুলোময়লা জমে তা ছত্রাক ও অন্যান্য জীবাণুর আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠে। সেগুলি শ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে ঢুকে সংক্রমণ ঘটাতে পারে।
হাঁপানি বা সিওপিডির সমস্যা যাঁদের আছে, তাঁদের ক্ষেত্রে পুরনো বালিশ দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করে যাওয়া ঠিক নয়। ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ’ থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, বালিশে জন্মানো ছত্রাক বা ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণে ‘হাইপারসেনসিটিভ নিউমোনাইটিস’ হতে পারে। এটি ফুসফুসের প্রদাহজনিত রোগ। এর থেকে শ্বাসকষ্টের সমস্যা, অ্যালার্জিক রাইনাইটিসও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ক্রমাগত হাঁচি হতে থাকবে, নাক দিয়ে জল পড়বে, চোখে চুলকানি ও সংক্রমণও হতে পারে।
অপরিচ্ছন্ন ও খুব পুরনো বালিশে অ্যাসপারজিলাস নামে এক ধরনের বিষাক্ত ছত্রাক জন্মায়। এই ছত্রাক নাক-মুখ দিয়ে ফুসফুসে ঢুকলে শ্বাসনালিতে ‘অ্যাসপারজিলোসিস’ নামে এক ধরনের সংক্রমণ হতে পারে।
কত দিন অন্তর বালিশ বদলানো উচিত?
সাধারণত প্রতি ৬ মাস থেকে ১ বছর অন্তর বালিশ বদলানো উচিত। পলিয়েস্টার বা সিন্থেটিক বালিশ হলে তা ১ থেকে ২ বছর অন্তর বদলালে ভাল। ফোমের বালিশ হলে ২ বছর অন্তর বদলে ফেলুন। তুলোর বালিশ হলে ১-৩ বছর অন্তর তা বদলানো জরুরি।
তা ছাড়া বালিশের ঢাকাও প্রতি সপ্তাহে বদলাতে পারলে ভাল হয়। বিশেষ করে, যাঁদের হাঁপানি বা অ্যালার্জিজনিত রোগ আছে। বালিশে মাথার তেল, মুখের মেকআপ, ঘাম জমে তা থেকে সোরিয়াসিস বা এগ্জ়িমার মতো চর্মরোগও হতে পারে। বহু বাড়িতে পোষ্যেরা বিছানায় ওঠার ছাড়পত্র পায়। এ ক্ষেত্রে সারমেয় বা বিড়ালের লোম চারদিকে ছড়িয়ে যায়। বালিশে লেগে যায়। স্বাস্থ্যের কথা ভেবে পোষ্য থাকলে বালিশের ঢাকা নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।