ধমনীর ব্লকেজ রুখতে মানতে হবে ৩টি নিয়ম। ছবি: সংগৃহীত।
এমনিতে সুস্থ-সবল মানুষ। কোনও রোগবালাই নেই। আচমকাই এক দিন বুকে ব্যথা, তার পর ধরা পড়ল হার্ট অ্যাটাক। এমন ঘটনা আকছারই ঘটছে। হৃদ্রোগ অনেক সময়েই বলেকয়ে আসে না। হার্টের ধমনীতে নিঃশব্দে রক্ত জমাট বাঁধছে কি না, তা বোঝে কার সাধ্য! বুকে ব্যথা নেই, রাতে শুয়ে ঘামও হয় না, অন্যান্য যে সব ভীতিকর লক্ষণের কথা বলা হয়, তা-ও নেই। এর পরেও ধরা পড়তে পারে হৃদ্রোগ। অথবা আচমকাই হার্ট অ্যাটাকে বিপদ ঘনাতে পারে। আমেরিকার হার্ট ফাউন্ডেশনের মতে, ধমনীতে ব্লকেজ হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম বড় কারণ। ধমনীর ব্লকেজ মানেই শরীরে রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়া, যার ফলে হৃদ্যন্ত্রে অতিকিক্ত চাপ পড়ে, আর সে কারণেই সমস্যা বাড়ে।
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি রুখতে তাই ধমনী পরিষ্কার রাখা জরুরি। গুজরাতের বডোদরাবাসী চিকিৎসক সুমিত কাপাডিয়া বলেন, ‘‘জীবনধারায় স্বাস্থ্যকর বদল এনে, সঠিক ডায়েট আর শরীরচর্চার মাধ্যমে ধমনীর ব্লকেজের সমস্যা প্রতিরোধ করা সম্ভব। এ ছাড়া ৩টি উপায় রয়েছে, যার মাধ্যমে ধমনী পরিষ্কার হয়, ব্লকেজের ঝুঁকি কমে।’’
১) পর্যাপ্ত ভিটামিন কে ২ খাওয়া: ধমনীতে ব্লকেজের অন্যতম কারণ হল ক্যালসিফেকেশন অর্থাৎ ক্যালশিয়াম জমাট বাঁধা। ডায়েটে পর্যাপ্ত মাত্রায় ভিটাামিন কে ২ থাকলে এই সমস্যা হওয়ার কথা নয়। এই ভিটামিন ক্যালশিয়ামকে রক্ত থেকে হাড়ের দিকে নিয়ে যেতে সাহায্য করে, ফলে ধমনীতে আর ক্যালশিয়াম জমাট বাঁধতে পরে না। ডিমের কুসুম, মুরগির মেটে, পালংশাক, ব্রকোলির মতো খাবারে ভিটামিন কে ২ থাকে।
২) ডায়েট থেকে অতি পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট বাদ দেওয়া: অনেকেরই ধারণা, ফ্যাটজাতীয় খাবার খেলেই বুঝি হার্টের সমস্যা বাড়ে। তবে চিকিৎসকের মতে, অত্যধিক পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট খেলেও কিন্তু ধমনীতে ব্লকেজ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। সাদা পাউরুটি, চিনিযুক্ত খাবার, নরম পানীয় স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের তুলনায় হার্টের বেশি ক্ষতি করে। অত্যধিক চিনিজাতীয় খাবার শরীরে প্রদাহের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, এর পাশাপাশি ধমনীতে ব্লকেজও তৈরি করে। তাই এ ধরনের খাবার এড়িয়ে চলাই ভাল।
৩) সারা দিনে অন্তত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা: ধমনীর ব্লকেজের অন্যতম কারণ হল বাড়তি ওজন। ওজন ঝরাতে হলে শরীরচর্চা করতে হবে। চিকিৎসকের মতে, সারা দিনে অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি, সাঁতার, সাইক্লিং কিংবা জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করা জরুরি। হৃদ্যন্ত্র ভাল রাখতে হলে শরীরচর্চা করতে হবে নিয়ম মেনে।