পেটফাঁপার সমস্যা। ছবি: সংগৃহীত।
ডিসেম্বর-জানুয়ারি মানেই একের পর এক পার্টির পরিকল্পনা। রাতজাগা, বাইরের খাবার খাওয়া, সময় মতো খাবার না খাওয়া— অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসের ফলে এই সময়ে নানাবিধ সমস্যা হতে পারে। বদহজম, পেটফাঁপা, পেট খারাপ, গ্যাস নিয়ে ভোগান্তির শেষ থাকে না। উৎসবের মরসুমে ভারী খাওয়াদাওয়া নিয়ে তাই ভয়ে থাকেন অনেকেই, কিন্তু মাঝে মধ্যে নিয়মভঙ্গ না হলে কি চলে! তবে ভারী খাবার খাওয়ার পর কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে পেটফাঁপার সমস্যার হাত থেকে মুক্তি পেতে পারেন। তা হলে ইচ্ছে মতো খাবার খেলেও বিপাকে পড়বেন না।
১. খাওয়ার গতি হ্রাস: খাওয়ার গতি কমালে এবং ভাল করে চিবিয়ে খেলে পেটফাঁপা ও হজমের সমস্যা কমে। কারণ ধীরে ধীরে মন দিয়ে খাবার খেলে পেটে অতিরিক্ত বাতাস প্রবেশ করতে পারে না। ফলে গ্যাসে পেট ফুলবে না। তা ছাড়া ভাল করে চিবিয়ে খাবার খেলে লালারসের সঙ্গে খাবার ভাল করে মিশে যেতে পারে। তাতে হজমপ্রক্রিয়া উন্নত হয় এবং পাকস্থলীর উপর চাপ কমে, ফলে গ্যাস ও অস্বস্তি হ্রাস পায়।
২. খাওয়ার পর হাঁটা: পেট ভরে খাবার খাওয়ার পর দুর্দান্ত এক ঘুমের আকাঙ্ক্ষা থাকে সকলের। অনেকেই খাবার খেয়েই কম্বল টেনে শুয়েও প়়ড়ছেন। কিন্তু সেখানেই ভুল হয়ে যাচ্ছে। খাবার খাওয়ার পরেই অন্তত ১০-১৫ মিনিট হেঁটে আসা উচিত। খাওয়ার পর না হাঁটলে রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যেতে পারে, তাতে ডায়াবিটিসের ঝুঁকি বাড়তে পারে। এ ছাড়া হজমের সমস্যা, পেটফাঁপা, গ্যাস, অম্বল এবং ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। কারণ, শরীর সচল না থাকলে হজমক্রিয়া সক্রিয় হতে পারে না।
খাওয়ার পর হাঁটার অভ্যাস করুন। ছবি: সংগৃহীত।
৩. সোডা নয়: সোডাজাতীয় পানীয় পেটে গিয়ে অতিরিক্ত গ্যাস তৈরি হতে পারে। পেটফাঁপার সমস্যা কমাতে হলে এই ধরনের পানীয় থেকে দূরে থাকতে হবে। কেবল জল পান করতে হবে। এর ফলে সারা দিনে জলশূন্যতার ঝুঁকি কম থাকবে। তা ছাড়া শরীরে জল জমে যাওয়ার সমস্যা থেকেও মুক্তি মিলবে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খেলে।
৪. পরিমাপ বুঝে খাওয়া: উৎসবের সময়ে পেট ভরে গেলেও খিদের শখ কমে না। পছন্দের খাবার সামনে পেয়ে অনেকেই অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন। কিন্তু এর ফলে পেটফাঁপার সমস্যা দেখা দিতে পারে। হজমের সমস্যা হওয়া, গ্যাস তৈরি হওয়া এবং অন্ত্রে অস্বস্তি বৃদ্ধি পাওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়। তাই পুষ্টিবিদেরা এ সব সময়ে বড় থালার বদলে ছোট থালায় খেতে বলেন। আগে সব্জি ও স্যালাড খাওয়ার পর প্রোটিন খেতে বলা হয়। ভারী খাবার অল্প পরিমাণে খেলেই ভাল। বেশি নুন মেশানো খাবার, দুগ্ধজাত পণ্য, ফুলকপি-ব্রকোলি-মুলোর মতো সব্জি বেশি খেলে পেটে গ্যাস জমতে পারে। তাই খাওয়ার আগে বাছাই করে নিতে পারেন।
৫. পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান: পর্যাপ্তে পরিমাণে জল পান করলে হজমের ক্রিয়া উন্নত হয়। সারা দিন ধরে অল্প অল্প জল খেয়ে মোট ৩-৪ লিটারের চাহিদা মেটানো দরকার। তা ছাড়া খাওয়ার আগে খানিকটা জল পান করে নিতে পারেন, এর ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে।