ছবি: সংগৃহীত।
ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি মেটাতে ওষুধ খান, দিনের নির্দিষ্ট সময়ে সূর্যালোকের সংস্পর্শেও আসেন। তা-ও অভাব মেটে না। এই সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ-এর (আইসিএমআর) তরফে ২০২৪-এ এক সমীক্ষা প্রকাশিত হয়। সেখানে দেখা গিয়েছে, ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭৬ শতাংশই ভিটামিন ডি-এর ঘাটতিতে ভোগেন। স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকই নীচে। পুরুষদের মধ্যে ৭৯ শতাংশ এবং মহিলাদের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশের শরীরে এই সমস্যা রয়েছে। কিন্তু কারণ বুঝে ওঠা সম্ভব হয় না অনেক ক্ষেত্রে। সূর্যালোক পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়ার পরেও, সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পরেও, ভিটামিন ডি-এর মাত্রা হ্রাস পাওয়ার আরও বেশ কয়েকটি কারণ থাকতে পারে। এমন কয়েকটি কারণ রয়েছে, যা নিয়ে সচরাচর কথা হয় না খুব বেশি।
অন্ত্রের সমস্যা: ভিটামিন ডি চর্বিতে দ্রবণীয়। অর্থাৎ ভিটামিন ডি শোষণের জন্য সঠিক ভাবে চর্বি হজম করা এবং সুস্থ অন্ত্রের প্রয়োজন। সিলিয়াক ডিজ়িজ়, ক্রোন’স ডিজ়িজ়, এমনকি আইবিএসের মতো অবস্থার ক্ষেত্রে অন্ত্রে ঠিক ভাবে শোষিত হয় না ভিটামিন ডি। ‘পাবমেড’-এ প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে দেখা গিয়েছে, পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার খেলেও অন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগের কারণে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা কম হতে পারে। এমনকি সবচেয়ে পুষ্টিকর খাবারও যদি অন্ত্র ভাল ভাবে হজম না করতে পারে, তা হলে এই ভিটামিনের মাত্রা বাড়ে না। কোন খাবার খাচ্ছেন, তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হল, সেই খাবার ঠিক ভাবে শরীরে শোষিত হচ্ছে কি না।
নির্দিষ্ট ওষুধ: কর্টিকোস্টেরয়েড (অ্যাজ়মা বা আর্থ্রাইটিসে ব্যবহৃত) ক্যালসিয়াম শোষণ কমাতে পারে এবং ভিটামিন ডি-র কার্যকলাপকে ব্যাহত করতে পারে। ফেনাইটোইন বা ফেনোবারবিটালের মতো মৃগীর ওষুধ লিভারে ভিটামিন ডি-এর মাত্রা কমিয়ে দেয়। ওজন কমানোর ওষুধ, যা চর্বির শোষণ কমায়, তা-ও ভিটামিন ডি-এর মাত্রা কমিয়ে দিতে পারে। গবেষণায় জানা যায়, এই ওষুধগুলির দীর্ঘ ব্যবহার ভিটামিন ডি-এর ঘাটতির কারণ হতে পারে।
অতিরিক্ত মেদ: যাঁদের শরীরে চর্বির পরিমাণ বেশি, তাঁদের ক্ষেত্রে ভিটামিন কম থাকে। ‘পাবমেড’-এ প্রকাশিত আর একটি গবেষণাপত্রে দেখা গিয়েছে, স্থূলকায় ব্যক্তিদের রক্তে স্বাভাবিক মাত্রা বজায় রাখার জন্য ২-৩ গুণ বেশি ভিটামিন ডি প্রয়োজন হতে পারে।
লিভার-কিডনির সমস্যা: সূর্যের আলো থেকে ত্বকে ভিটামিন ডি তৈরি হওয়ার পর সেটি লিভারে যায়। তার পর কিডনিতে যায়। সেখানে শরীরের প্রয়োজনে সক্রিয় হয়ে ওঠে। লিভারের (ফ্যাটি লিভার, অ্যালকোহল সেবন, বা হেপাটাইটিসের কারণে) অথবা কিডনিতে (বয়স-সম্পর্কিত অবক্ষয় বা অন্তর্নিহিত রোগ) যে কোনও রোগ থাকলে এই ভিটামিনের জোগান কমে যায়।