ছবি : সংগৃহীত।
সমাজমাধ্যমে প্রতি দিনই শরীর ভাল রাখার নিত্য নতুন উপায়ের ডালি উপচে পড়ছে। সেখানে যেমন পুষ্টিবিদের ছড়াছড়ি, তেমনই প্রতি মুহূর্তে হাজির জীবন, স্বাস্থ্য, ফিটনেস নিয়ে পরামর্শ দেওয়ার মানুষজন। পুষ্টিবিদ, চিকিৎসক, প্রশিক্ষিত পেশাদারদের বাইরে সমাজমাধ্যম প্রভাবীরাই নানা বিষয়ে নানা রকম টোটকা বাতলে দিচ্ছেন। তেমনই এক টোটকা সম্প্রতি ইন্টারনেটে ভাইরাল হয়েছে, যেখানে এক ইনস্টাগ্রাম প্রভাবী বলছেন, ঘুমের আগে পায়ে পেঁয়াজ বেঁধে শুলে তা সারা রাত ধরে শরীর থেকে টক্সিন বার করে দিতে সাহায্য করে!
টক্সিন হল শরীরে জমা হওয়া দূষিত পদার্থ। প্রতিদিনের অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, বাতাসের দূষণ, অপরিশ্রুত জল, ইত্যাদি নানা কারণে শরীরে টক্সিন বা দূষিত পদার্থ জমা হতে থাকে। টক্সিন শরীরে যত বেশি জমে ততই অসুস্থতার ঝুঁকি বাড়ে।
টক্সিন শরীরে জমতে থাকলে কোলেস্টেরল, ফ্যাটি লিভার, প্রদাহের নানা রকম সমস্যা হতে পারে। আবার, হজমের গোলমাল, ওজন বেড়ে যাওয়া এমনকি, ক্যানসারের মতো জটিল রোগও হতে পারে। কিন্তু সেই দূষিত পদার্থ কি পায়ে পেঁয়াজ বেঁধে দূর করা সত্যিই সম্ভব?
আমেরিকায় ন্যাশনাল অনিয়ন অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি সংস্থা রয়েছে যারা আমেরিকার পেঁয়াজ চাষীদের নিয়ে কাজ করে। পাশাপাশি তারা পেঁয়াজ বিষয়ক নানা গবেষণার তত্ত্বাবধানও করে থাকে। তারা বলছে, ‘‘পেঁয়াজ নিয়ে এক প্রাচীন গল্পকথা থেকেই এই বিষয়ে বিশ্বাসটি ছড়িয়েছে। ১৫০০ সাল বা তারও আগে সেই গল্পকথায় বলা হয়েছিল কাঁচা পেঁয়াজ কেটে ঘরে রাখলে প্লেগের মতো রোগ হবে না। উনিশ শতকেও স্মল পক্স, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো ব্যাধি তাড়াতে ঘরে কাঁচা পেঁয়াজ কেটে রাখার কথা বলা হত। কিন্তু এর কোনও প্রমাণ মেলেনি।’’ একই সঙ্গে তারা জানিয়েছে, যেহেতু পেঁয়াজে সালফার, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে প্রচুর, তাই তা শরীরের ভিতরে গিয়ে শরীরকে দূষণমুক্ত করতে পারে। কিন্তু বাতাসকে জীবাণু মুক্ত করার ক্ষমতা তার নেই।
সমাজমাধ্যমে আমেরিকার এক পুষ্টিবিদ এমিলি ইংলিশ এই পদ্ধতিকে ‘হাস্যকর’ বলে দাবি করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘রাতে পেঁয়াজ কেটে রান্না করে খেয়ে নিন। তাতে কাজ হতে পারে। পায়ের ত্বকের পেঁয়াজ থেকে সালফার শোষণ করার ক্ষমতা নেই। তাই পায়ে পেঁয়াজ বেঁধে লাভ হবে না কোনও।’’