Warm Water Vs. Cold Water

গরম না ঠান্ডা, সকালে উঠে কোন জল খাওয়া উচিত? হজমের সমস্যা মিটবে কোন তাপমাত্রায়

গরম না কি ঠান্ডা, কোন তাপমাত্রার জল খাচ্ছেন, কোনটিতে কী উপকারিতা, সেটিও ভেবে দেখতে হবে। এই ছোট্ট সিদ্ধান্তই শরীরের ভিতরের কাজকর্মের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দিতে পারে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:৪৯
Share:

গরম বনাম ঠান্ডা জল। ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।

সকালে ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস জল— বড়ই স্বাস্থ্যকর এক উপায়। চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ, মা থেকে ঠাকুরমা, সকলেই এমন অভ্যাসকে বাহবা দেন। কিন্তু গরম না কি ঠান্ডা, কোন তাপমাত্রার জল খাচ্ছেন, কোনটিতে কী উপকারিতা, সেটিও ভেবে দেখতে হবে। এই ছোট্ট সিদ্ধান্তই শরীরের ভিতরের কাজকর্মের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দিতে পারে। দিনটি কেমন যাবে, তার ধারক বললেও অত্যুক্তি হবে না। যে কোনও রকম তাপমাত্রার জলেরই সুবিধা রয়েছে বটে, কিন্তু দিনের শুরুতে কোনটি বেছে নেবেন, সেটি জেনে নেওয়া জরুরি। আর সে সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে শরীরের প্রকৃতির উপর।

Advertisement

হজমে

দিনের শুরুতে গরম জল খেলে অন্ত্র ধীরে ধীরে জেগে উঠতে পারে। জমে থাকা বর্জ্য নরম হয়ে বেরোতে সুবিধা হয়, ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেকখানি কমে। গরম জলে খাদ্যনালিগুলি হালকা প্রসারিত হয়, ফলে রক্তপ্রবাহও স্বস্তি পায়। অন্ত্রে তরঙ্গের সৃষ্টি হয়, যার কারণে খাবার সহজে প্রবাহিত হতে পারে। এই গতিবিধিকেই বলা হয় পেরিস্টলসিস। অন্য দিকে ঠান্ডা খানিক ক্ষণের জন্য অন্ত্রে জড়তা নিয়ে আসতে পারে, যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে হজম প্রক্রিয়া। যাঁরা সকালে পেট ভার বা গ্যাসে ভোগেন, তাঁদের জন্য গরম জল বেশি কার্যকরী।

Advertisement

সকালে উঠে কোন তাপমাত্রার জল খাওয়া উচিত? ছবি: সংগৃহীত।

সতেজতায়

সকাল সকাল ঠান্ডা জল খেলে শরীর নিমেষে চাঙ্গা হয়ে উঠতে পারে। ঘুমের ঘোর কাটিয়ে মাথা কাজ করে বেশি। বিশেষত রাতে ঘুম কম হলে বা খুব ক্লান্তি নিয়ে ঘুম ভাঙলে, ঠান্ডা জল খেয়ে দিন শুরু করা যায়। গ্রীষ্মে যেমন সকালে ব্যায়ামের পরে ঠান্ডা জল আরও কার্যকর। শরীরের তাপমাত্রা দ্রুত কমিয়ে হাইড্রেশন বাড়ায়। শরীরের স্নায়ুগুলিকে দ্রুত জাগিয়ে তোলে।

জলের চাহিদা মেটাতে

বিভিন্ন তাপমাত্রার জলে শরীর আলাদা আলাদা প্রতিক্রিয়া দেয়। কিন্তু এ কথা মানতেই হবে, ঠান্ডা হোক বা গরম, শরীরকে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়াতেই হবে। গরম জল মানেই নির্দিষ্ট গতিতে শরীর জলের চাহিদা মেটাচ্ছে। ঠান্ডা জল মানে চট করে পিপাসা মেটানো। কেউ তৃষ্ণা পেলে গরম জল খেয়ে আরাম পান, কেউ আবার বিপরীতধর্মী। দু’ধরনের জলেই চাহিদা মিটবে। যে তাপমাত্রায় আপনি স্বচ্ছন্দ বোধ করবেন, সে জল দিয়েই দিন শুরু করা উচিত, যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়া হয়।

উন্নত রক্তপ্রবাহে

সকালে গরম জল খেলে রক্তনালীগুলি সামান্য প্রসারিত হতে পারে। এর ফলে রক্তপ্রবাহ উন্নত হয় এবং নালীগুলির শিথিলতা বৃদ্ধি পায়। ঠিক উল্টো কাজটি করে ঠান্ডা জল। রক্তনালীগুলি শক্ত হয়ে ওঠে খানিক ক্ষণের জন্য। তাতে আরামের বদলে সতেজতা বৃদ্ধি পাবে সকাল সকাল। প্রয়োজন অনুযায়ী তাপমাত্রা বেছে নেওয়া উচিত।

দূষিত পদার্থ নিঃসরণে

সকালে উঠে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করলে শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যেতে পারে। এই পদ্ধতিকেই বলা হয় ডিটক্সিফিকেশন। কোন তাপমাত্রার জলে সেই কাজটি বেশি ভাল হয়? এই বিতর্কে জিতে যাবে গরম জল। কারণ মল সৃষ্টি থেকে ত্যাগের কাজে গরম জলের কার্যকারিতা বেশি। রক্তপ্রবাহ উন্নত করে, অন্ত্রে তরঙ্গের সৃষ্টি করে, হজমক্রিয়া উন্নত করে দূষিত পদার্থ বার করে দিতে পারে গরম জল। তবে ঠান্ডা জলও হাইড্রেশন বৃদ্ধি করে ডিটক্সের কাজে আসতে পারে, কিন্তু বিপাকের কাজে আসে না।

তা হলে গরম না ঠান্ডা?

এই বিতর্কে কোনও একটি জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। গরম ও ঠান্ডা দু’রকম জলেরই প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, দু’টিরই কার্যকারিতা রয়েছে। নিজের শরীর যা চাইছে, তা বুঝে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। তবে সবচেয়ে ভাল হয় যদি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যায়। রোগীর ধরন বুঝে চিকিৎসকেরা বলে দিতে পারেন কোন তাপমাত্রার জল কার খাওয়া উচিত, কোনটি উচিত নয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement