Feeding Disorder in Children

খাওয়াতে গেলেই কান্নাকাটি, খাবার খেতেই চায় না শিশু, ‘ফিডিং ডিজ়অর্ডার’-এর লক্ষণ নয় তো?

‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’-এর একটি সমীক্ষা জানাচ্ছে, অনেক শিশুই ‘পেডিয়াট্রিক ফিডিং ডিজ়অর্ডার’-এ ভোগে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২৫ ১৪:২৭
Share:

শিশু নিজে থেকে খেতে চায় না, ফিডিং ডিজ়অর্ডারে ভুগছে কি? ছবি: এআই।

খুদেকে খাওয়াতে গিয়ে বাবা-মায়েদের এক প্রকার যুদ্ধ চলে বলা যায়। বেশির ভাগ শিশুই মুখে খাবার নিয়ে বসে থাকে। চিবোতে চায় না। বকুনি দেওয়ার পর হয়তো জল দিয়ে গিলে ফেলে। অনেক সময় ভর্তি টিফিন কৌটোই বাড়িতে ফেরত আসে। বাবা-মায়েদের অভিযোগ, সন্তান কিছু খেতে চায় না। দীর্ঘ দিন এমন চলতে থাকলে পুষ্টির ঘাটতি থেকে যাবে শিশুর শরীরে। তবে এমন হলে জোর করে খাওয়ানো নয়, বরং শিশু ঠিক কী কারণে খেতে চাইছে না, খাবার গেলার সময় কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না, তা জানতে হবে। কিছু লক্ষণ খেয়াল করতে হবে বাবা-মাকে।

Advertisement

‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ’-এর একটি সমীক্ষা জানাচ্ছে, অনেক শিশুই ‘পেডিয়াট্রিক ফিডিং ডিজ়অর্ডার’-এ ভোগে। এর কিছু লক্ষণ রয়েছে। সেই লক্ষণগুলি দেখা দিলে বুঝতে হবে, খাবারে অনীহা নয়, বরং সমস্যা অন্য জায়গায়।

কোন কোন লক্ষণ দেখলেই চিকিৎসার প্রয়োজন?

Advertisement

শিশুকে খাওয়ানোর চেষ্টা করলে সে কান্নাকাটি করে।

খাওয়ানোর পরেই বমি করে দেয় বা খাবার দেখলে বমি আসে।

খাবার মুখে দিলে ফেলে দেয়।

খাবার চিবিয়ে খেতে ও গিলতে সমস্যা হয়। শিশু যদি বলে, খাবার গেলার সময়ে গলায় ব্যথা করছে, তা হলে সতর্ক হতে হবে।

খাওয়ার সময়ে বারে বারে হেঁচকি উঠলে, কাশি হলে, গলায় খাবার আটকে গেলে সাবধান হতে হবে।

খাবার খাওয়ার সময় ঘাম হওয়া, শ্বাসকষ্ট বা অস্থিরতা দেখা দেওয়া।

সব সময়েই যদি খাবার বিস্বাদ লাগে শিশুর বা খাবারের স্বাদ না পায়, তা হলেও সতর্ক হতে হবে।

কেন হয় ফিডিং ডিজ়অর্ডার?

শিশুদের ক্ষেত্রে ফিডিং ডিজ়অর্ডার খুবই জটিল সমস্যা। এর সঠিক চিকিৎসা না হলে শিশুর শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি ঢুকবে না, ফলে শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ ব্যাহত হবে। এই বিষয়ে শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পালের বক্তব্য, ফিডিং ডিজ়অর্ডার যে কোনও শিশুরই হতে পারে। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এর ঝুঁকি বেশি থাকে, যেমন শিশুর যদি গ্যালাক্টোসেমিয়া বা বিপাকক্রিয়া জনিত রোগ অথবা অন্যান্য জেনেটিক রোগ থাকে, জিভে ঘা বা আলসার হয়, দীর্ঘ সময় ধরে কড়া অ্যান্টিবায়োটিক খায়, তবে এমন সমস্যা হতে পারে। তা ছাড়া, ডিসফ্যাগিয়া রোগ থাকলে এমন হতে পারে। শিশুর ডিসফ্যাগিয়া আছে কি না, তা অনেক সময়েই বুঝতে পারেন না বাবা-মায়েরা। তার জন্য কিছু লক্ষণ খেয়াল করতে হবে, যেমন— শিশুর খাবার গিলতে সমস্যা হওয়া, ঢোঁক গিলতে গেলে গলায় ব্যথা হওয়া, খাওয়াতে গেলেই খাবার গলায় আটকে যাওয়া, ঠান্ডা না লাগলেও গলায় ব্যথা হওয়া, গলার স্বরের বদল ঘটা। এই সব ক্ষেত্রে বুঝতে হবে, লক্ষণ ভাল নয়। সে ক্ষেত্রে নিজে থেকে ওষুধ না খাইয়ে, চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে ঘন ঘন কাশি হবে, শ্বাসের সমস্যা ও বুকে ব্যথাও হতে পারে।

শিশুর সেরিব্রাল পলসি বা অটিজ়ম স্পেকট্রাম ডিজ়অর্ডার থাকলেও এমন হতে পারে। আবার যদি অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা রক্তাল্পতার সমস্যা থাকে, তার থেকেও ফিডিং ডিজ়অর্ডার হতে পারে। তাই লক্ষণ দেখা দিলেই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। কারণ, এর চিকিৎসা শিশুর শারীরিক অবস্থা দেখেই হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement