কত বছরের পুরনো ঘিয়ের গুণ বেশি? ছবি: ফ্রিপিক।
কথায় বলে পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। আর পুরনো ঘি কিন্তু গুণে বাড়ে। চিকিৎসকমহলে পুরনো ঘিয়ের দোষ-গুণ নিয়ে নানা মত রয়েছে। যদিও ভারতীয় পরম্পরাগত চিককিৎসা পদ্ধতিতে পুরনো ঘিয়ের নানা গুণের বর্ণনা আছে। ১০ বছরের পুরনো ঘিকে ভিটামিন ও প্রোটিনের আকর বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর ১০০ বছরের পুরনো ঘি হল মৌহষধি। তা যেমন সৌন্দর্য চর্চায় ব্যবহার করা যায়, তেমনই রোগের নিরাময়েও তার বহু ব্যবহার রয়েছে। এই বিষয়ে দেশের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ’-এর একটি গবেষণাপত্রও আছে। সেখানে ঘিয়ের উপকারিতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পুরনো ঘিয়ের প্রসঙ্গও এসেছে।
পুরনো ঘি গুণে বাড়ে
ঘি কত পুরনো হলে তার গুণ বাড়ে, তা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। কেউ বলেন ১০ বছরের পুরনো ঘি মানে তা শরীরে লাগালে ব্যথা-বেদনা উধাও হবে, আবার অনেকের মত, ১০০ বছরের পুরনো ঘিয়ের উপকারিতা বেশি। সেই ঘি থেকে ওষুধ বানিয়ে খেতে পারলে অথবা মলম হিসেবে লাগাতে পারলে, যে কোনও রোগেরই নাকি উপশম হওয়া সম্ভব।
আগেকার দিনে ঘিয়ের শিশি মাটির নীচে অথবা কোনও ঠান্ডা জায়গায় বছরের পর বছর রেখে তা থেকে ওষুধ তৈরি করা হত। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, পুরনো ঘিয়ে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকে। এই ঘি ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে-তে সমৃদ্ধ। যত বেশি পুরনো হয়, ততই ঘি-তে স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের পরিমাণ বাড়ে। পাশাপাশি, এর প্রদাহনাশক গুণও বাড়ে। তখন সেই ঘি খেলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে পারে।
কী ভাবে ব্যবহার হয় পুরনো ঘি?
ওষুধ হিসেবে- আধ চামচের মতো পুরনো ঘি রোজ সকালে খালি পেটে খেলে তা পেটের যে কোনও সমস্যার সমাধান করতে পারে বলে দাবি।
রূপচর্চায়- ময়েশ্চারাইজ়ারের মতো পুরনো ঘি ব্যবহার করা যেতে পারে। ত্বকের যে কোনও ক্ষত নিরাময়ে এই ঘি ব্যবহার করা যেতে পারে।
মলম হিসেবে- বাতের ব্যথা, পিঠ-কোমরের ব্যথাবেদনায় মলম হিসেবে পুরনো ঘি ব্যবহার করা যেতে পারে।
নাকের ড্রপ- পুরনো ঘি গলিয়ে নাক দিয়ে টানলে সর্দি-কাশি, সাইনাস, কাশি, বুকে ব্যথার সমস্যা দূর হতে পারে বলে দাবি।
সতর্কীকরণ
পুরনো ঘি ব্যবহার করতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই করা উচিত। কারণ ঘি যত পুরনো হবে, ততই তাতে ছত্রাক জন্মাবে। এমন ঘি খেলে বা রান্নায় ব্যবহার করলে, তার নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে। অম্বলের ধাত থাকলে, পুরনো ঘি সরাসরি খাওয়া যাবে না। এতে বদহজম বাড়বে। যদি কোনও ক্রনিক রোগ থাকে, তা হলে পুরনো ঘি ব্যবহার করা উচিত হবে কি না, তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নিতে হবে।