প্রতীকী চিত্র। ছবি: সংগৃহীত।
ধূমপান স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকারক। কিন্তু তা সত্ত্বেও দিনের বিভিন্ন সময়ে ধূমপায়ীদের নিকোটিনের উপর নির্ভরতা তৈরি হয়। তবে চিকিৎসকদের মতে, দিনের একটি বিশেষ সময়ে ধূমপানের ফলে শারীরিক ক্ষতির মাত্রা দ্বিগুণ হতে পারে।
চিকিৎসকদের মতে, ঘুম থেকে ওঠার পর সকালে দিনের প্রথম সিগারেটটি থেকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকারক হতে পারে। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ফুসফুস এবং হৃৎপিণ্ড খুবই সংবেদনশীল থাকে। এই সময় সিগারেটের ধোঁয়া শরীরে প্রবেশ করলে ক্ষতির আশঙ্কা আরও বৃদ্ধি পায়। তবে এ ক্ষেত্রে কেবল খুব বেশি ধূমপান করন তাঁরাই শুধু নন, যাঁরা কম ধুমপান করেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে যায়।
রাতে ঘুমের সময় ফুসফুসে সারা দিনের নানা ধরনের ক্ষতিকারক পদার্থ প্রবেশ বন্ধ থাকে। তার ফলে ফুসফুস নতুন করে সেরে ওঠার সময় পায়। কিন্তু সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর ধূমপান করলেই সেই প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। তার ফলে শ্বাসনালী এবং ফুসফুসের দেওয়ালে ক্ষতিকারক পদার্থ অ্যালার্জি তৈরি করে।
ঘুম থেকে ওঠার পর অনেকেই চা-কফির সঙ্গে ধূমপান করেন। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, ঘুম ভাঙার ৩০ মিনিটের মধ্যে যাঁরা ধূমপান করেন, তাঁদের ক্ষেত্রে ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়। কারণ, ঘুম থেকে ওঠার পর যত দ্রুত দেহে নিকোটিন প্রবেশ করে, ক্ষতির পরিমাণ ততটাই বৃদ্ধি পায়। দীর্ঘ দিন এই অভ্যাসের ফলে শরীরে অধিক মাত্রায় ক্ষতিকারক রাসায়নিক প্রবেশ করে এবং হার্টের সমস্যা তৈরি করে। পরিস্থিতি জটিল হলে, ফুসফুসে ক্যানসারও হতে পারে।
সারা রাত ঘুমের পর শ্বাসনালীর গায়ে মিউকাসের আস্তরণ খুব পুরু থাকে না। তার ফলে ক্ষতি হয় বেশি। নিকোটিন এবং টার খুব সহজেই তাই ফুসফুসে প্রবেশ করতে পারে। সময় লাগে মাত্র ১০ থেকে ২০ সেকেন্ড। তার ফলে দ্রুত প্রদাহ তৈরি হয় এবং ক্ষতির আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়। তার ফলে সঙ্গে সঙ্গে হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ এবং স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পায়। তার পর সারা দিন শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহের সমস্যা হতে পারে। ব্যক্তি অনেক বেশি ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন। এ ছাড়াও সকালে ঘুম থেকে উঠে ধূমপান করলে তা মস্তিষ্কে যে সঙ্কেত পাঠায়, তার ফলে ধূমপান থেকে দূরে থাকাও কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়।