ভিটামিন ডি, ডি২ এবং ডি৩ কি এক? তফাত কোথায়? ছবি: ফ্রিপিক।
ভিটামিন ডি এর সঙ্গেই ভিটামিন ডি২ ও ভিটামিন ডি৩-এর নাম শুনে থাকবেন। বিশেষ করে ভিটামিন ডি৩-এর নাম প্রায়ই শোনা যায়। ট্যাবলেট বা সাপ্লিমেন্ট কেনার সময়ে, ডি৩ নেওয়ার পরামর্শ দেন অনেকেই। কিন্তু ভিটামিন ডি৩ আসলে কী, সে নিয়ে অনেকেরই ধারণা নেই। সাধারণত, ভিটামিন ডি-এর নামই পরিচিত। ডি২ ও ডি৩ আসলে কী, এদের মধ্যে কী কী তফাত রয়েছে তা জেনে নেওয়া যাক।
ভিটামিন ডি২ ও ডি৩ আসলে ভিটামিন ডি-এরই দু’টি প্রকার। তবে এদের উৎস আলাদা। ভিটামিন ডি৩ শরীরেই তৈরি হয়। এই ভিটামিনই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এর অভাব হলেই হাড় ভঙ্গুর হতে পারে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। আর ভিটামিন ডি২ শরীরে তৈরি হয় না। এটি মূলত উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে পাওয়া যায়।
শরীরে তৈরি হয় ভিটামিন ডি৩
ভিটামিন ডি-এর এই প্রকারটি সূর্যের আলোয় ত্বকে তৈরি হয়। একে বলা হয় কোলেক্যালশিফেরল। ক্যালশিয়াম ও ফসফেট শোষণে সাহায্য করে এই ভিটামিন। এটিই হাড়ের গঠন মজবুত করে। এই ভিটামিনের অভাব হলে হাড় ভঙ্গুর হতে থাকে, পেশির শক্তি কমে, স্নায়বিক রোগও দেখা দিতে পারে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে এই ভিটামিনের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে।
মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতেও ভিটামিন ডি৩-এর ভূমিকা রয়েছে। এই ভিটামিনের অভাব হলেও মনমেজাজ খিটখিটে হয়ে যেতে পারে, অতিরিক্ত ক্লান্তি ও দুর্বলতা আসতে পারে। চিকিৎসকেরা অনেক সময়েই সাপ্লিমেন্ট হিসেবে ভিটামিন ডি৩ খেতে দেন।
সূর্যালোক ছাড়াও প্রাণিজ খাবার থেকে ভিটামিন ডি৩ পাওয়া যায়। যেমন চর্বিযুক্ত মাছ, ডিমের কুসুম, মাংসের মেটে। উদ্ভিজ্জ খাবারের মধ্যে দুধ, ওট্স, ডালিয়ার মতো দানাশস্য, মাশরুমে ভিটামিন ডি৩ থাকে।
ভিটামিন ডি২ কী?
ভিটামিন ডি২-কে বলা হয় আর্গোক্যালশিফেরল। বিভিন্ন রকম শৈবাল, ছত্রাক থেকে মূলত এই ভিটামিন পাওয়া যায়। সূর্যের অতিবেগনি রশ্মিতে গাছপালায় তৈরি হয় এই ভিটামিন। খাবার থেকে এবং সাপ্লিমেন্ট হিসাবেই এই ভিটামিন নিতে হয়। ভিটামিন ডি৩-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ না হলেও এই ভিটামিন ক্যালশিয়াম শোষণে বিশেষ ভূমিকা নেয়। হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে এই ভিটামিনেরও অবদান আছে। নিরামিষ বা ভিগান ডায়েটে যাঁরা অভ্যস্ত, তাঁদের জন্য খুবই উপকারী এই ভিটামিন। মাশরুম, ছত্রাক, উদ্ভিজ্জ দুধ, যেমন আমন্ড মিল্ক, সয়া মিল্ক, নারকেলের দুধ, কমলালেবুর রসে এই ভিটামিন থাকে।
শরীরের জন্য ভিটামিন ডি২ ও ডি৩ দু’টিই জরুরি। খাবার থেকে ভিটামিন শরীরে গেলে ভাল, আর যদি সাপ্লিমেন্ট নিতে হয়, তা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।