Fever in Children

ঘন ঘন জ্বরে পড়ছে শিশু, সঙ্গে হাত-পায়ে ব্যথা, কী থেকে হচ্ছে? বাবা-মায়েদের জন্য রইল কিছু পরামর্শ

শিশুর ঘন ঘন জ্বর হলে এবং সেই সঙ্গে ডিহাইড্রেশন বা ডায়েরিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে বাবা-মায়েদের কী করতে হবে তা জেনে রাখা ভাল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৫ ১০:২৪
Share:

ঘরে ঘরে জ্বর,ডায়েরিয়ায় ভুগছে শিশুরা,বাবা-মায়েরা কী ভাবে সামলবেন? ফাইল চিত্র।

আবহাওয়ার বদলের সময় ভাইরাল জ্বরে বেশি ভোগে শিশুরা। গত কয়েক বছর ধরে অজানা জ্বরে শিশুদের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন জেলা থেকে। পরীক্ষা করিয়ে ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়া ধরা পড়ছে না। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, উপসর্গ দেখে বোঝা যাচ্ছে, ছোঁয়াচে রেসপিরেটরি ভাইরাসের সংক্রমণেই ঘন ঘন জ্বর, সর্দিকাশি, এমনকি শ্বাসের সমস্যাও হচ্ছে অনেক শিশুর। সঙ্গে গা, হাত-পায়ে ব্যথা। শিশুর ঘন ঘন জ্বর হলে এবং সেই সঙ্গে ডিহাইড্রেশন বা ডায়েরিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে বাবা-মায়েদের কী করতে হবে, তা জেনে রাখা ভাল।

Advertisement

শিশুর জ্বর হলেই আতঙ্কিত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতেই বলছেন ‘ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেল্‌থ’-এর শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল। তাঁর মতে, মরসুম বদলের সময়ে সর্দিকাশি, জ্বর ঘরে ঘরেই হয়। যদি দেখা যায় জ্বর তিন দিনের বেশি রয়েছে তা হলে কিছু পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি। আর শুরু থেকেই চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খেতে হবে। অনেক অভিভাবকই নিজে থেকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়াতে থাকেন শিশুদের। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।

আসলে খামখেয়ালি আবহাওয়াই যত অসুখবিসুখের কারণ। গরমের ছুটিতে স্কুল বন্ধ থাকায় বাড়ির পরিবেশেই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল শিশুরা। হঠাৎ করেই গরমের মধ্যে পরিবেশের বদল ঘটায় শরীরেও তার প্রভাব পড়ছে। মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি হচ্ছে, কিন্তু ভ্যাপসা গরমও রয়েছে। এমন আবহাওয়া অ্যাডিনোভাইরাস, রেসপিরেটারি ভাইরাসদের বংশবৃদ্ধির জন্য আদর্শ। আবার টাইফয়েডের সংক্রমণও ঘটছে। এমনটাই জানালেন সংক্রামক রোগ বিষয়ক চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার। বাইরে যাওয়া মানেই কোল্ডড্রিংক, চিপ্‌স, আইসক্রিম, রঙিন ঠান্ডা পানীয়ের মতো বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ার প্রবণতাও বাড়ছে শিশুদের মধ্যে। ফলে জ্বরের পাশাপাশি পেটখারাপের সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে।

Advertisement

বর্ষার হাত ধরে ডেঙ্গির সমস্যাও দেখা দিচ্ছে। এর উপসর্গ এখন সাধারণ মানুষের জানা। তবে চিকিৎসক জানাচ্ছেন, ডেঙ্গি কখনও কখনও প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। তাই সতর্ক থাকা এবং ঠিক সময়ে চিকিৎসা জরুরি। ডেঙ্গির জ্বর মোটামুটি দিন তিনেক থাকে। তার পর জ্বর কমে এলেই রক্তে প্লেটলেট কমে যেতে থাকে। সেই সময়েই বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। যদি দেখা যায়, শিশুর জ্বর তিন দিনের বেশি রয়েছে, তা হলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। কিছু রক্ত পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া জরুরি।

বর্ষার সময়ের অসুস্থতা থেকে বাঁচতে কিছু পরামর্শ

অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এখন জ্বর-সর্দি-কাশিতে তেমন ভয়ের কিছু নেই। বিশেষ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করানোরও দরকার পড়ে না। সাধারণ প্যারাসিটামলেই জ্বর কমে। সঙ্গে পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং যথেষ্ট পরিমাণ জল খাওয়া জরুরি। প্রয়োজনে উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয়।

জ্বরে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি, টাইফয়েড পরীক্ষা আগে করানো জরুরি। বাকি অন্যান্য ভাইরাসের প্রাথমিক চিকিৎসা একই ধরনের।

অ্যাসপিরিন কোনও ভাবেই দেওয়া যাবে না শিশুদের। জ্বরের সঙ্গে যদি খিঁচুনি, অজ্ঞান হওয়ার লক্ষণ দেখা যায়, তা হলে সময় নষ্ট না করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।

শিশুর গা গরম দেখলে জলপট্টি দিন, গা, হাত-পা ভাল করে স্পঞ্জ করে দিন। ফ্যান চালিয়ে রাখুন, সারা ঘরে যাতে হাওয়া চলাচল ঠিক ভাবে হয়, সেটা দেখুন।

শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসের হারে নজর রাখতে হবে। শিশু যদি দ্রুত শ্বাস নিতে শুরু করে, শ্বাস-প্রশ্বাসের সময়ে বুক দ্রুত ওঠানামা করে তা হলে দেরি করা চলবে না।

খাওয়ার পরিমাণ হঠাৎ করে কমে গেলে, দিনে পাঁচ বারের কম প্রস্রাব করলে চিকিৎসককে দেখিয়ে নিতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement