কোন কোন তেলে ডিপ ফ্রাই করে খেলে ক্ষতি কম হবে? ছবি: এআই।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাইরের খাবার কম খান অনেকেই। তবে বাঙালি ভোজনরসিক। স্বাস্থ্যসচেতন বাঙালির হেঁশেলেও বৃষ্টি-বাদলার সন্ধ্যায় মাঝেমধ্যে পকোড়া, ফিশফ্রাইয়ের মতো মুখরোচক খাবার তৈরি হয়। এই ধরনের খাবার সাধারণত ডুবো তেলে ভাজা হয়। এই ভাবে ডুবো তেলে ‘ডিপ ফ্রাই’ করে খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে অনেকেরই। তাই সে ক্ষেত্রে কোন তেলে ভাজছেন, তা মাথায় রাখতে হবে। বাঙালির হেঁশেলে সর্ষের তেলেই মূলত ভাজাভুজি বেশি হয়। এখন সাদা তেলের ব্যবহারও হয়। কিন্তু দিল্লির এমস, আমেরিকার হার্ভার্ড ও স্ট্যানফোর্ডের চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন এমন কিছু তেল আছে, যাতে ভাজাভুজি করলে ক্ষতি কম হতে পারে।
কোন কোন তেলে ভাজা খেলে ক্ষতি কম হবে?
পরিশোধিত নারকেল তেল
ভাজা খেলে রিফাইন্ড বা পরিশোধিত নারকেল তেল ব্যবহার করাই ভাল। নারকেল তেল সাধারণত দু’ধরনের হয়। পরিশোধিত এবং অপরিশোধিত। রান্নার কাজে দু’ধরনের তেলই ব্যবহার করা হয়। তবে পরিশোধিত তেল এবং অপরিশোধিত তেলের ‘স্মোক পয়েন্ট’ বা ধূমাঙ্ক কিন্তু আলাদা। পরিশোধিত তেলের ধূমাঙ্ক ৪০০ থেকে ৪৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। যা অপরিশোধিত তেলের চেয়ে অনেকটাই বেশি। তাই ভাজাভুজির জন্য পরিশোধিত তেল ব্যবহার করাই ভাল।
পরিশোধিত অলিভ অয়েল
পরিশেধিত অলিভ অয়েলে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকে, এই তেলের ধূমাঙ্ক ৪৬৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড, অর্থাৎ উচ্চ তাপে ভাজাভুজি করলে খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট হবে না। তেলও পুড়বে না। ক্ষতি কম হবে। তবে একস্ট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েলে কখনওই ডিপ ফ্রাই করতে যাবেন না।
ঘি
ঘি-এর ধূমাঙ্ক প্রায় ২৪৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৪৮০ ডিগ্রি ফারেনহাইট), যা বেশির ভাগ সাধারণ রান্নার তেলের চেয়ে অনেক বেশি। এর অর্থ হল, উচ্চ তাপে ভাজলে ক্ষতিকর রাসায়নিক তৈরি হয় না। ঘি মূলত স্যাচুরেটেড ফ্যাট দিয়ে তৈরি, যা উচ্চ তাপেও স্থিতিশীল থাকে, ভেঙে গিয়ে বিষাক্ত যৌগ তৈরি করে না। ঘি-তে থাকা ভিটামিন এ, ডি, ই ও কে উচ্চ তাপেও অক্ষত থাকে।
সয়বিন তেল, সানফ্লাওয়ার বা ক্যানোলা অয়েল ভাজাভুজির জন্য একেবারেই ঠিক নয়। এই সব তেলের ধূমাঙ্ক কম, তা ছাড়া পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট বেশি থাকে। উচ্চ তাপে ভেঙে গিয়ে বিষাক্ত যৌগ তৈরি করে। বেশির ভাগ বাড়িতেই এই সব তেলে ভাজাভুজি করা হয়। ভাজার পরে সেই তেল রেখে দিয়ে পুনর্ব্যবহারও করা হয়। এতে তেল বার বার পুড়ে গিয়ে এমন রাসায়নিক তৈরি করে, যা হজমের গুরুতর সমস্যার কারণ হয়ে ওঠে।