—প্রতীকী ছবি।
অলক্ষ্মী দুর্ভাগ্যের দেবী। তিনি নিস্ক্রিয়তার প্রতিমূর্তি। অলসতা, লঘু মস্তিষ্ক, জড়তার উপর অলক্ষ্মীর প্রভাব রয়েছে। শাস্ত্রমতে অলক্ষ্মী হলেন দেবী লক্ষ্মীর বড় বোন। সমুদ্রমন্থন কালে দেবী লক্ষ্মীর পূর্বে আবির্ভাব হয় অলক্ষ্মীর। পুরাণমতে, অলক্ষ্মী কৃষ্ণবর্ণা। তাঁর দু’টি হাত রয়েছে এবং তিনি লোহার গয়না পরেন। অলক্ষ্মীর বাহন গাধা। অলক্ষ্মী জ্যেষ্ঠা নামেও পরিচিতা। অলক্ষ্মী আবির্ভাবের পরে দেবতা এবং অসুরকুলের কেউই তাঁকে গ্রহণ করতে রাজি ছিলেন না। অবশেষে ঋষি দুহসাহা অলক্ষ্মীকে স্ত্রী রূপে গ্রহণ করেন।
অলক্ষ্মী কেন বিদায় করা হয়? নিষ্ক্রিয়তা, অলসতা, লঘু বা জড় মস্তিস্ক কারওরই কাম্য না। কারণ কোনও মানুষই এগুলি কাটিয়ে জীবনে উন্নতি সাধন করতে পারে না। কালো রং অশুভ এবং তামসিক, এটি অন্ধকার এবং শোকের প্রতীক। লোহার গয়না তামসিক এবং গয়নার ধাতু হিসাবে লোহা নিকৃষ্ট।
যেখানে অলক্ষ্মী বাস করেন, দেবী লক্ষ্মী সেখানে থাকতে পারেন না। কারণ, দেবী লক্ষ্মী নিষ্ক্রিয়তা, অলসতা, অন্ধকার, কালো এবং তামসিক গুণ সহ্য করতে পারেন না। ‘দেবী লক্ষ্মী চঞ্চলা’ এই প্রবাদবাক্যটি বাংলায় খুবই প্রচলিত। যেখানে অলসতা, অন্ধকার এবং তামসিকতা থাকে না, দেবী লক্ষ্মী সেখানেই অবস্থান করেন। অলসতা, অন্ধকার এবং তামসিক গুণের উদয় হলেই দেবী লক্ষ্মী সেই স্থান ত্যাগ করেন।
বাড়িতে অলক্ষ্মীর মূর্তি পূজা করা হয় না, তাঁর কোনও প্রতীক নির্মাণ করে ঘরের বাইরে পূজা করা হয়। দীপান্বিতা অমাবস্যায় ঘরের বাইরে অলক্ষ্মীর প্রতীককে পূজা করে কুলো বাজিয়ে বাড়ির বাইরে বার করে ঘরে দেবী মহালক্ষ্মীর পূজা করা হয়। দীপান্বিতা অমাবস্যার দিন সন্ধ্যাবেলা এই পুজো করতে হয়। সূর্যাস্তের পরবর্তী সময়ই এই পুজোর জন্য শ্রেষ্ঠ। সূর্যের আলো থাকাকালীন এই পুজো না করাই শ্রেয়।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুসারে–
অমাবস্যা আরম্ভ–
বাংলা– ৩ কার্তিক, সোমবার।
ইংরেজি– ২০ অক্টোবর, সোমবার।
সময়– সকাল ৩টে ৪৬ মিনিট।
অমাবস্যা শেষ–
বাংলা– ৪ কার্তিক, মঙ্গলবার।
ইংরেজি– ২১ অক্টোবর, মঙ্গলবার।
সময়– বিকেল ৫টা ৫৫ মিনিট।
গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকা অনুসারে–
অমাবস্যা আরম্ভ-
বাংলা– ২ কার্তিক, সোমবার।
ইংরেজি– ২০ অক্টোবর, সোমবার।
সময়– দুপুর ২টো ৫৫ মিনিট ৫৬ সেকেন্ড।
দীপাবলি, দেবগৃহাদিতে দীপদান।
অমাবস্যা শেষ–
বাংলা– ৩ কার্তিক, মঙ্গলবার।
ইংরেজি– ২১ অক্টোবর, মঙ্গলবার।
সময়– বিকেল ৪টে ২৫ মিনিট ২৩ সেকেন্ড।