মানবজীবনে শনিদেবের প্রভাব কেমন হতে পারে।
বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ ও পুরাণে শনিদেবকে নিয়ে নানা কাহিনি প্রচলিত আছে। ছায়াপুত্র, যমের অগ্রজ এবং রবির পুত্র হিসেবে শনিদেব সকলের কাছে জ্ঞাত। রাশিচক্রে দশম ও একাদশ ভাবের পতি হিসেবে শনি গ্রহকে জ্যোতিষে গ্রহণ করা হয়। রবির উচ্চস্থান সে কারণে শনির নীচস্থান এবং রবির নীচস্থানে শনির উচ্চস্থান।
কর্ম ও আয়ের ক্ষেত্রে শনির প্রভাব -
এর কারক গ্রহ শনি। শনি দুর্বল, পীড়িত, অশুভ হলে কর্মলাভ সম্ভব নয়, ফলে উপার্জন হ্রাস পায়। মানুষের জীবনে নানা বিপত্তির সৃষ্টি হয়। সৌরজগতে শনি পৃথিবী থেকে বহু আলোকবর্ষ দূরত্বে থাকে। তাই পৃথিবীর জীব তার প্রভাব খুবই কম পায়। রাশিচক্রে শনি ত্রিশ বৎসরে এক বার পরিক্রম করে। এক একটি রাশিতে প্রায় আড়াই বৎসর শনি থাকে। বক্রগতিকালে সেটা হ্রাস-বৃদ্ধি হয়।
যে কোনও গ্রহ পরিক্রমার সময় যে কোনও জাতকের লগ্ন থেকে দ্বাদশ ভাবে একটি নির্দিষ্ট সময় থাকে এবং নির্দিষ্ট বছর পর পর বিভিন্ন ভাবে আসে। দ্রুততম গ্রহ বুধ, এর পর শুক্র, তার পর রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতি, রাহু বা কেতু এবং শেষে শনি। লগ্ন ও চন্দ্র রাশিতে, দ্বিতীয়ে, দ্বাদশে সকল গ্রহই আসে তা সকলেই জানেন। তবে কেবল শনির ক্ষেত্রেই মানুষ একটু ভীত হয়। জন্ম সময় থেকে শুরু করে তিনবার শনি লগ্ন, দ্বাদশ ও দ্বিতীয়ে আসে। একবার বাল্যকালে,পরে যৌবনে এবং বার্ধক্যে।
প্রত্যেক রাশিতে আড়াই বছর করে অবস্থান করে শনি। সে ক্ষেত্রে মোট সাড়ে সাত বছর দ্বাদশ, লগ্ন, ও দ্বিতীয়ে শনির প্রভাব থাকে, যাকে সাড়ে সাতি বলে।
শনি তমোগুণী, তপস্যার দ্বারা লব্ধ জ্ঞান, শনি দান করে। বুধ ও শুক্র, শুভ ভাবে শনির সঙ্গে যুক্ত হলে সুখ ও ধন লাভ হয়। শনি যা দান করে, তা ফিরিয়ে নেয় না। শুভ শনির কৃপায় কোনও জাতক-জাতিকা জীবনে যে স্তরে পৌঁছন, সেখান থেকে পতনের কোনও সম্ভবনা থাকে না।