প্রায় সকল হিন্দু বাড়িতেই মহাদেবের আরাধনা করা হয়। অনেকে
তাঁকে শিবলিঙ্গ রূপে বাড়িতে এনে পুজো করেন। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে শিবলিঙ্গ হল
প্রভূত শক্তির আধার। তাই বাড়িতে এটি প্রতিষ্ঠিত করার নানা নিয়ম রয়েছে। যেহেতু শিবলিঙ্গে
প্রচুর শক্তি রয়েছে, তাই সঠিক নিয়ম মেনে বাড়িতে শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা না করলে
বাস্তুর উপর এর কুপ্রভাব পড়তে পারে। শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠার নিয়মগুলি জেনে নিন।
নিয়ম:
- বাড়ির যে কোনও দিকে শিবলিঙ্গ
প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে সেটির মুখ পশ্চিম দিকে থাকে। আপনি যখন সেটিকে পুজো করবেন, তখন আপনার মুখ থাকতে হবে পূর্ব
দিকে। এই দুই দিক সঠিক রেখে শিবলিঙ্গ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
- বড় আকৃতির শিবলিঙ্গ বাড়িতে রাখা
উচিত নয়। বুড়ো আঙুলের আকৃতির শিবলিঙ্গ বাড়িতে রাখা যেতে পারে। অর্থাৎ, ছোট
আকৃতির শিবলিঙ্গই বাড়ির জন্য শ্রেষ্ঠ।
- বাড়িতে কখনও একাধিক শিবলিঙ্গ রাখতে নেই। শিবলিঙ্গ প্রচুর
শক্তির আধার। একই বাড়িতে অনেকগুলি শিবলিঙ্গ রাখলে তাঁর থেকে নির্গত হওয়া শক্তি
সামলানোর ক্ষমতা সাধারণ গৃহস্থের নেই। ফলত কোনও ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। একটাই
শিবলিঙ্গ রাখতে হবে।
- পাথরের তৈরি শিবলিঙ্গ বাড়িতে রাখা যেতে পারে। এ ছাড়া তামা
বা রুপোর তৈরি শিবলিঙ্গও রাখতে পারেন। এই শিবলিঙ্গের চারপাশে রুপো বা তামার সাপ
জড়িয়ে থাকা জরুরি। তবে কালো পাথরের শিবলিঙ্গ আনতে হবে। সাদা পাথরের শিবলিঙ্গ বাড়িতে রাখা উচিত নয়।
- শিবলিঙ্গে ভুল করেও হলুদ ও সিঁদুর লাগানো যাবে না। এই দুটি জিনিস মহাদেব মোটেই পছন্দ করেন না।
- শিবলিঙ্গটিকে বাড়িতে আনার পর প্রথমে সেটিকে পঞ্চামৃত (দুধ,
দই, ঘি, মধু ও চন্দন) দিয়ে অভিষেক করতে হবে। তার পর সেটিকে গঙ্গাজল দিয়ে পরিষ্কার
করে সিংহাসনে তুলতে হবে।
- বাড়িতে শিবলিঙ্গ রাখলে নিয়মিত সেটির পুজো করা আবশ্যিক। সেটির
মাথায় একটা ছিদ্রযুক্ত ঘট ঝোলাতে পারেন। এতে শিবলিঙ্গটির মাথায় টপটপ করে জল পড়তে
থাকবে। এ ছাড়া সেটিকে প্রতি দিন ফুল-বেলপাতা সহযোগে পুজো করতে হবে ও চন্দনের তিলক
লাগাতে হবে। মাথায় জল বা দুধও ঢালতে হবে।