সারা পৃথিবীতে উপাসনার দু’টি পদ্ধতি আছে। একটি সাকার অপরটি নিরাকার। যারা সাকার পদ্ধতিতে বিশ্বাসী তারা বিভিন্ন দেবমূর্তি, প্রতিমা বা বিগ্রহ স্থাপন করে তাদের উপাসনা করেন। ঈশ্বর-উপাসনা-পূজা তো মিথ্যা নয়। পূজা-উপাসনার ফলপ্রাপ্তিও নিশ্চিত। তা হলে কোথাও কি কোনও ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে যাচ্ছে? অথবা ভুল হচ্ছে কোথাও? এখন দেখে নেওয়া যাক, গৃহ-প্রতিমা খণ্ডিত হলে কি করা উচিত?
শাস্ত্রমতে খণ্ডিত দেবপ্রতিমার পূজা নিষিদ্ধ। তবে শাস্ত্রে দেবপ্রতিমার অঙ্গ প্রতিস্থাপন অর্থাৎ প্রতিমার কোনও অঙ্গ ভঙ্গ হলে পুনরায় তা নির্মাণ করে মূল প্রতিমার সঙ্গে সংযুক্ত করার বিধিও আছে। সাধারণত প্রতিমার পাঁচটি অঙ্গ- যথা নাসিকা, কর্ণ, চক্ষু, হস্ত এবং অঙ্গুলি প্রতিস্থাপন বা পুননির্মাণ করা যেতে পারে। তবে প্রতিমার অঙ্গ সংস্থাপনের পূর্বে প্রতিমার শক্তিকে একটি কলসে আবাহন করে পূজাস্থলে সেই কলসটি স্থাপন করে প্রতি দিন সেই কলসটির পূজা করতে হয় এবং অঙ্গ খণ্ডিত হওয়ার এক মাসের মধ্যেই অঙ্গ পুনস্থাপন কর্তব্য।
প্রতিমার অঙ্গ পুনসংস্থাপনের সময় একথা অবশ্যই স্মরণে রাখতে হবে যে, প্রতিমা যে বস্তু বা ধাতুর এবং যে আকারে নির্মিত, পুনর্যোজিত অঙ্গটিও সেই বস্তু বা ধাতু এবং সেই আকারেরই নির্মিত হওয়া উচিত। প্রতিমার অঙ্গ পুনর্যোজন ধর্মসিন্ধু, প্রতিষ্ঠাময়ুখ, প্রতিষ্ঠামহোদধি বা প্রায়শ্চিত্তময়ুখ প্রভৃত গ্রন্থের সম্প্রোক্ষণ বিধি অনুসারে করা কর্তব্য। যদি ঘটনাচক্রে উল্লিখিত পাঁচ অঙ্গের অতিরিক্ত প্রতিমার অন্য কোনও অঙ্গ খণ্ডিত হয়, তবে কোনও পবিত্র নদী, সরোবর বা কোনও পবিত্র স্থানে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া বিধেয়। তারপর পুনরায় প্রতিমা নির্মাণ করে যথাবিধি অনুসারে গৃহে সেই নতুন প্রতিমা প্রতিষ্ঠা করাই শাস্ত্ররীতি।
আরও পড়ুন: কেতু কখন জীবনে শুভ ফল দেয় জানেন