অন্ধ্রপ্রদেশের দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই বাস। ছবি: পিটিআই।
বাইকের সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর বেঙ্গালুরুগামী বাসে আগুন ধরেছিল ঠিকই, কিন্তু সেই আগুনকে আরও দ্রুত ছড়িয়ে দিতে অনুঘটক হিসাবে কাজ করেছিল বাসের মধ্যে থাকা স্মার্টফোন। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, বাসের মধ্যে ২৩৪টি নতুন স্মার্টফোন ছিল। ব্যবসার সূত্রে বেঙ্গালুরুতে পাঠানো হচ্ছিল ফোনগুলি।
ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, বাইকের সঙ্গে ধাক্কা লাগার পর আগুন ধরে যায় বাসে। তার মধ্যে বাসের তেলের ট্যাঙ্কারের ঢাকনা খুলে যায়। যেটি আগুন ছড়িয়ে পড়ার আরও একটি কারণ। তবে সেই আগুনকে আরও দ্রুত ছড়িয়ে দিয়েছে বাসে থাকা ওই বিপুল সংখ্যক ফোন। আগুনের সংস্পর্শে আসতেই ফোনগুলির ব্যাটারিতে ভয়ানক বিস্ফোরণ হয়। আর গোটা বাস আগুনের গ্রাসে চলে যায়। ফলে বাস থেকে বেরিয়ে আসার বিন্দুমাত্র সুযোগ পাননি বেশির ভাগ যাত্রীই। যাঁরা জানলার কাচ ভেঙে বেরিয়ে এসেছিলেন, বাসে আগুন লাগার পর পরই তারা বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, মঙ্গনাথ নামে হায়দরাবাদের এক ব্যবসায়ীর ছিল ওই স্মার্টফোনগুলি। বেঙ্গালুরুর একটি সংস্থায় পাঠাচ্ছিলেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাসে আগুন ধরে যাওয়ার পরে পর পর বিস্ফোরণ হয়। তা থেকেই তদন্তকারীদের ধারণা, বাসে থাকা ফোনগুলির ব্যাটারি বিস্ফোরণ হয়েছে। যার জেরে আগুন আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল বেঙ্গালুরুগামী বাসটিতে। অন্ধ্রের দমকল বিভাগের ডিজি পি বেঙ্কটরমণ জানিয়েছেন, বাসটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (এসি) ছিল। ফলে সেই ব্যবস্থাকে সক্রিয় রাখার জন্য যে ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম ব্যবহার করা হয়, সেগুলিও আগুনকে ছড়িয়ে দেওয়ার অন্যতম অনুঘটক হিসাবে কাজ করেছিল। বাসের এসিতেও বিস্ফোরণ হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আগুনের জেরে এত তাপ সৃষ্টি হয়েছিল যে, বাসের পাদানির অ্যালুমিনিয়ান শিট পুরো গলে গিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার ভোরে অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুলে বেঙ্গালুরুগামী বাসে আগুন ধরে যায়। সেই দুর্ঘটনায় জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। রাজস্থানের জৈসলমেরের বাস দুর্ঘটনার পর আবার অন্ধ্রে একই রকম ভাবে বাসে আগুন ধরার ঘটনায় যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।