(বাঁ দিকে উপরে) উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক। ধৃত চিকিৎসক আদিল আহমেদ র্যাদার (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
দিল্লির অদূরে ফরিদাবাদ থেকে ৩০০ কিলোগ্রামের বেশি বিস্ফোরক পদার্থ উদ্ধার করল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। কাশ্মীরে ধৃত এক চিকিৎসককে জেরা করে এই বিস্ফোরকের হদিস পাওয়া গিয়েছে। উদ্ধার হয়েছে একটি রাইফেল-সহ একাধিক অস্ত্রশস্ত্র। তবে কি রাজধানীতে বড়সড় কোনও হামলার ছক কষা হচ্ছে? আর কারা এর সঙ্গে জড়িত? শুরু হয়েছে অনুসন্ধান।
হরিয়ানার ফরিদাবাদ রাজধানী সংলগ্ন এলাকার (ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়ন বা এনসিআর) অন্তর্গত। এই এলাকায় এমনিতেই নিরাপত্তার কড়াকড়ি বেশি থাকে। হরিয়ানা পুলিশ জানিয়েছে, মোট ৩৬০ কেজি বিস্ফোরক পাওয়া গিয়েছে। তা অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট হতে পারে। আরডিএক্সের মতো বিস্ফোরক তৈরিতেও এই রাসায়নিক ব্যবহৃত হয়। দেশের অন্যতম সংবেদনশীল এলাকা এনসিআরে এত বিস্ফোরক কবে সরবরাহ করা হয়েছিল, কারা করেছিল, জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। সূত্রের খবর, কিছু দিন আগে কাশ্মীরে আদিল আহমেদ র্যাদার নামের এক ব্যক্তিকে অস্ত্রপাচার সংক্রান্ত মামলায় গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তিনি পেশায় চিকিৎসক। হরিয়ানায় বিস্ফোরক সরবরাহের খবর পুলিশকে তিনিই দিয়েছেন। উপত্যকায় ওই চিকিৎসকের নামে যে লকার ছিল, সেখানে তল্লাশি চালিয়ে একটি একে৪৭ রাইফেল এবং আরও কিছু অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।
ফরিদাবাদে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক এসেছিল কাশ্মীর থেকেই, জানতে পেরেছে পুলিশ। রাজধানীর কাছে এই বিস্ফোরক সরবরাহ করার অভিযোগ রয়েছে কাশ্মীরি চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। কী ভাবে তা এত দূর পাঠানো হল, আদিল নিজেই তা নিয়ে এসেছিলেন কি না, জানার চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া, কাশ্মীর পুলিশের তদন্তে আরও এক চিকিৎসকের নাম উঠে এসেছে। মুজ়ামিল শাকিল নামের ওই চিকিৎসক পুলওয়ামার বাসিন্দা। অভিযোগ, তিনিও অস্ত্র ও বিস্ফোরক পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত। হেফাজতে নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারীরা।
জম্মু ও কাশ্মীরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে যাঁরা খবর রাখেন, তাঁদের অনেকে বলছেন, এত বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকের সঙ্গে কাশ্মীরের যোগ সাম্প্রতিক অতীতে আর কখনও পাওয়া যায়নি। গত কয়েক বছরের মধ্যে এটাই সবচেয়ে বড় ঘটনা। তবে এর সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা এখনও নিশ্চিত করেনি পুলিশ।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর থেকে কাশ্মীরের নিরাপত্তা এবং নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতেও পদক্ষেপ করেছে স্থানীয় প্রশাসন এবং সেনাবাহিনী। তার পরেও কী ভাবে এই ধরনের অস্ত্র উপত্যকা থেকে রাজধানীর কাছাকাছি সরবরাহ করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।