পুলিশের হাতে গ্রেফতার অভিযুক্ত দীপ শুভম (মাঝে)। ছবি: সংগৃহীত।
২০২১ সালে ব্যাঙ্কে পর পর চুরির ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল দিল্লি এবং বিহারে! জোরকদমে তদন্ত করেও সে সময় চুরির কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। কে ‘চোর’ জানতে পেরেও তাঁকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। কোথায় তিনি গা ঢাকা দিয়েছিলেন, তা হাজার অনুসন্ধানেও সূত্র মেলেনি। এত দিন পর, সেই ‘চোর’কে গ্রেফতার করল পুলিশ। জানা গিয়েছে, ধৃত দীপক শুভম রসায়নের স্কলার। কেন তিনি ব্যাঙ্কে চুরি করেছিলেন, তা-ও জানিয়েছেন পুলিশকে।
কী ভাবে পুলিশের জালে ধরা পড়লেন দীপক? সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে দিল্লি পুলিশের হেড কনস্টেবল অজয়ের কাছে খবর আসে হরিয়নার সোহনা এলাকায় দীপককে দেখা গিয়েছে। সেই খবরের সূত্র ধরে সোহনা এলাকায় নজরদারি বৃদ্ধি করে পুলিশ। নানা ধরনের প্রযুক্তির সাহায্যে অভিযুক্তের গতিবিধির উপর নজর রাখা হয়। তার পরেই তাঁকে বাগে পেয়ে গ্রেফতার করা হয় দীপককে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ৩২ বছর বয়সি দীপের আদি বাড়ি বিহারের সীতামঢ়ী জেলায়। পরে পড়াশোনার কারণে দিল্লি চলে যান। দিল্লির একটি কলেজ থেকে রসায়নে স্নাতক হন। তার পরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে রসায়নে এমফিল ডিগ্রিও লাভ করেন। রসায়নের পর তিনি আইন নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। তবে এলএলবি পড়ার সময়ই তাঁর পরিবারে আর্থিক সঙ্কট দেখা দেয়। বাধ্য হয়ে আইনের পড়াশোনা মাঝপথেই ছেড়ে দিতে হয়।
অভিযুক্ত পুলিশকে জানিয়েছেন, পড়াশোনার খরচ চালানোর মতো আর সামর্থ্য ছিল না পরিবারের। তার পরেই পড়াশোনা ছেড়ে চাকরির সন্ধান শুরু করেন দীপ। কিন্তু সহজে চাকরি না-পাওয়ায় বেছে নেন চুরির পথ। ২০১৭ সালে বিহারে প্রথম ব্যাঙ্কচুরির ঘটনা ঘটান দীপ। বিভিন্ন রাসায়নিক দ্রব্য মিলিয়ে ধোঁয়ার বোমা তৈরি করেন তিনি। নিজের জেলারই এক ব্যাঙ্কে সেই বোমা ব্যবহার করে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ নগদ চুরি করে পালান। সেই ঘটনায় গ্রেফতার হন। পরে জামিনে মুক্তিও পান।
জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেরও নতুন ভাবে রোজগারের পথ খোঁজেননি দীপ। রীতেশ ঠাকুর নামে এক অপরাধীর সঙ্গে জোট বেঁধে ২০২১ সালে দিল্লিতে পর পর দু’মাসে দু’টি ব্যাঙ্কে চুরি করেন তিনি।
ওই চুরির ঘটনায় নাম জড়াতেই পালিয়ে যান দীপ। পুলিশ তাঁর নাগাল না-পাওয়ায় তিনি ভেবেছিলেন মিটে গিয়েছে মামলা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতার করল পুলিশ।