৩টি মন্ত্রে দিল্লি জয় বিজেপির

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ দিনের প্রথম টুইটটি করেন দিল্লি পুভোটের ভোটের ফল বেরনোর পরে, বেলা ১টা ২১ মিনিটে। লেখেন, ‘‘দিল্লির মানুষ বিজেপি উপরে আস্থা রাখায় কৃতজ্ঞ।

Advertisement

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:২১
Share:

অভিনন্দন: কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নায়ডুর সঙ্গে দিল্লির বিজেপি সভাপতি মনোজ তিওয়ারি। পুরভোটে বিপুল জয়ের পরে বুধবার নয়াদিল্লিতে এক সাংবাদিক বৈঠকে। ছবি: পিটিআই।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ দিনের প্রথম টুইটটি করেন দিল্লি পুভোটের ভোটের ফল বেরনোর পরে, বেলা ১টা ২১ মিনিটে। লেখেন, ‘‘দিল্লির মানুষ বিজেপি উপরে আস্থা রাখায় কৃতজ্ঞ। বিজেপি-ফর-দিল্লি টিমের যে কঠোর পরিশ্রম দিল্লি পুরভোটে এমন জবরদস্ত জয় সম্ভব করেছে, আমি তার প্রশংসা করছি।’’ আর কলকাতায় অমিত এই জয়ের কৃতিত্ব দেন মোদীকেই। কেজরীকে নিশানা করে বলেন, ‘‘এটা নেতিবাচক রাজনীতির পরাজয়।’’ হেরে গিয়ে অরবিন্দ কেজরীবাল দুষছেন সেই ইভিএমকেই। আর দল থেকে ছিটকে যাওয়া যোগেন্দ্র যাদব বলছেন, ইভিএমকে দোষ দেওয়াটা মোটেই দায়িত্বশীল আচরণ নয়। অতীতের আন্দোলনে কেজরীর গুরু অণ্ণা হজারের মতে, আগে থেকেই ঘুণ ধরেছে আপের বিশ্বাসযোগ্যতায়।

Advertisement

কিন্তু বড় প্রশ্ন হল, দশ বছর দিল্লিতে পুরসভার ক্ষমতায় থেকেও কী করে আগের চেয়েও বড় জয় মুঠিতে পুড়ল মোদীর দল?

বিজেপি নেতাদের মতে, জয় এসেছে তিনটি মন্ত্রে।

Advertisement

মন্ত্র এক, পুরভোট হলেও প্রধানমন্ত্রী মোদীই বিজেপির মুখ। ভোটের আগে কেজরীবাল যতই সাফসাফাই, জল ও বিদ্যুৎ বিল মাফ, চিকিৎসার মতো বিষয়গুলিকে সামনে আনার চেষ্টা করুন, বিজেপি ভরসা জাগিয়েছে শুধুই মোদী-নামে। তাঁর স্বচ্ছতা অভিযান থেকে নোটবন্দির সিদ্ধান্ত, জাতীয়তাবাদ ও উন্নয়ন বার্তার মিশেল— এই সবই বড় হয়ে ওঠে রাস্তাঘাট বা পুর স্বাছ্যন্দের চেয়ে। যার সুরটি বাঁধা হয়ে গিয়েছিল উত্তরপ্রদেশে বিপুল জয়ের পরেই। দলের সব নেতাদের নিয়ে মোদীর পথে নামা, হেঁটে দলের সদর দফতরে যাওয়া, মঞ্চে দাঁড়িয়ে উত্তরপ্রদেশ বিজয়ের জন্য অভিনন্দন কুড়োনোর মধ্যে দিয়েই। এর পরেই গোটা দিল্লি ছেয়ে যায় মোদীর পোস্টারে।

আরও পড়ুন: দিল্লিতেই আর জনপ্রিয় নয় আপ

মন্ত্র দুই, নতুন মুখ, নতুন স্লোগান। এই ভোটে সব প্রার্থীকে বদলে ফেলেছিলেন মোদী, অমিত শাহরা। দশ বছরে বিজেপির বিরুদ্ধে তৈরি হওয়া প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হাওয়া তাঁরা এক ধাক্কায় মুছে ফেলেন নতুন মুখ এনে। সঙ্গে তোলা হয় স্লোগান ‘নয়ে চেহরে, নয়ে উর্জা, নয়ে উড়ান, দিল্লি মাঙ্গে কমল নিশান’। মোদী বোঝাতে চান, এই নতুন মুখ তাঁর টিম, তাঁর বিজেপি। দিল্লির উন্নয়ন হবে এ বারে তাঁর হাতেই। গুজরাতে মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ও মোদী প্রতি বার বিধানসভা ভোটে এক চতুর্থাংশ প্রার্থী বদল করতেন।

মন্ত্র তিন, মাইক্রো-ম্যানেজমেন্ট। আপ-কংগ্রেসের গড়ে ওয়ার্ড ধরে ধরে থাবা বসানোর অঙ্ক কষেছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। মনোজ তিওয়ারির মতো তারকাকে রাজ্য সভাপতি করে পূর্বাঞ্চলীয়দের মন জয়ের চেষ্টা করেছেন। রাজধানী এলাকায় যাঁদের সংখ্যা ৩২ শতাংশ। মোদীর গরিব-কল্যাণ কর্মসূচি নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন বস্তিতে, যে ভোটব্যাঙ্ক আগে ছিল কংগ্রেসের। পরে যা ছিনিয়ে নেন কেজরীবাল।

জয়ে উচ্ছ্বসিত বিজেপির এক নেতা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধে বলেছেন, ‘‘কেজরীবালই একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী যাঁর হাতে কোনও দফতর নেই। আর খালি মাথা শয়তানের বাসা। ঘুম থেকে উঠে ও ঘুমোনোর আগে মোদী-মোদী করাই তাঁর একমাত্র কাজ। লোক তাই মোদীকেই দু’হাত ভরে ভোট দিয়েছেন।’’

ভোটে হারলে ইটের জবাব পাথরে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন কেজরী। দিল্লির এক বিজেপি নেতা আজ এক জোড়া ইট পাঠিয়ে দিয়েছেন কেজরীবালকে!অনলাইনে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন