অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।
হন্তদন্ত হয়ে থানায় ঢুকলেন এক যুবক। থানার কর্তব্যরত অফিসারের কাছে গিয়ে তিনি বললেন, ‘স্যর আমার গুরুত্বপূর্ণ জিনিস চুরি হয়ে গিয়েছে! খুঁজে দিতে হবে।’ অফিসার অভিযোগ লেখার ডায়েরিটা বার করে ‘কী হারিয়েছে। কোথা থেকে হারিয়েছে’ ইত্যাদি জানতে চান ওই যুবকের কাছে। কিন্তু যে উত্তর অভিযোগকারীর কাছ থেকে এল, তা শুনেই প্রায় ভিরমি খাওয়ার অবস্থা হয় ওই পুলিশ অফিসারের!
পুলিশকে কী বলেছিলেন ওই যুবক?
থানায় ঢুকেই ওই যুবক বলেন, “স্যর, আমার হৃদয় চুরি হয়ে গিয়েছে! একটি মেয়ে চুরি করেছে সেই হৃদয়। সেই হৃদয় ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে আপনাদেরই!” এমন অভিযোগের জন্য প্রস্তুত ছিলেন না কর্তব্যরত পুলিশ অফিসার। ফলে যুবকের কথার কী উত্তর দেবেন ভেবেই পাচ্ছিলেন না তিনি। অভিযোগটাই বা কী করে দায়ের হবে? এমন হৃদয়হরণ সংক্রান্ত কোনও ধারাই তো নেই ভারতীয় দণ্ডবিধিতে! তা হলে? উত্তরের খোঁজে আর বিন্দুমাত্র দেরি না করে উর্ধ্বতন অফিসারদের কাছে ফোন করেন থানায় কর্তব্যরত ওই পুলিশ অফিসার।
আরও পড়ুন: বলিউডের এই নায়িকার এখনকার ছবি দেখে চমকে যাবেন
অভিযোগের ধরন শুনে তাঁরাও তাজ্জব হয়ে যান। কিন্তু অভিযোগ যখন এসেছে একটা সমাধান তো বার করতেই হয়। অফিসাররাও ব্যস্ত হয়ে পড়েন সমাধানের খোঁজে। নাহ! অনেক ভেবেও কোনও উপায় বার করতে পারেননি দুঁদে অফিসাররাও। শেষমেশ ঘুরেফিরে তাঁরা সেই সিদ্ধান্তেই আসেন যে, এ ধরনের অভিযোগের জন্য ভারতীয় দণ্ডবিধিতে কোনও ধারাই নেই। অভিযোগকারী ওই যুবককেও তা জানিয়ে দেওয়া হয়। ফলে অভিযোগও দায়ের হয়নি আর। হৃদয় ফিরে পেতে এসে শেষমেশ খালি হাতেই ফিরতে হয় ওই যুবককে। ফলে ‘চুরি যাওয়া হৃদয়’ আর উদ্ধারও হয়নি।
আরও পড়ুন: এক সময়ে এত প্রেম করেছি যে, এখন আর প্রেম আসে না
ঘটনাটি নাগপুরের একটি থানার। সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে নাগপুরের পুলিশ কমিশনার ভূষণকুমার উপাধ্যায় নিজে এই অদ্ভুত অভিযোগের কাহিনি শুনিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমের সামনে মৃদু হেসে তিনি বলেন, “চুরি যাওয়া সামগ্রী আমরা ফিরিয়ে দিতে পারি, কিন্তু চুরি যাওয়া হৃদয় কি ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব। তাই এ ধরনের অভিযোগ এলে সমাধানের পথ খুঁজতে হাতড়ে বেড়াতে হয় পুলিশকে। যেমনটা ঘটেছে ওই যুবকের করা অভিযোগের ক্ষেত্রে!”
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরাবাংলা খবরপেতে পড়ুন আমাদেরদেশবিভাগ।)