সর্বজিৎ কৌর। পাকিস্তানে গিয়ে লাহৌরের এক বাসিন্দাকে বিয়ে করেছেন তিনি। — ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানে গিয়ে বিয়ে করে থেকে যাওয়া ভারতীয় মহিলাকে ঘন ঘন হেনস্থা করছে পাকিস্তানি পুলিশ। তাঁর পাকিস্তানি স্বামীকেও হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। দম্পতিকে বিয়ে ভাঙার চাপ দিতে যখন-তখন বিনা কারণে তাঁদের বাড়িতে পুলিশ হানা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠে এসেছে। তা নিয়ে মামলা গড়িয়েছে লাহৌরের হাই কোর্টে। সেখানে আদালত পুলিশকে সতর্ক করে নির্দেশ দিয়েছে, কোনও ভাবেই ওই ভারতীয় মহিলাকে হেনস্থা করা চলবে না।
সম্প্রতি গুরুনানকের জন্মজয়ন্তী উদ্যাপনের জন্য ভারত থেকে প্রায় ২০০০ পুণ্যার্থীর একটি দল ওয়াঘা সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে গিয়েছিল। ওই পুণ্যার্থীদের দলে ছিলেন ৪৮ বছর বয়সি সর্বজিৎ কৌরও। তবে গত ১৩ নভেম্বরে অন্যেরা দেশে ফিরে এলেও সর্বজিৎ আর ফেরেননি। তাঁর কোনও খোঁজও পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে জানা যায়, তিনি এক পাকিস্তানিকে বিয়ে করে সে দেশেই রয়ে গিয়েছেন। কিন্তু এ বার পাকিস্তানি পুলিশি হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে সর্বজিৎকে।
বর্তমানে লাহৌর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে শেখপুরা নামে একটি জায়গায় বাস করছেন সর্বজিৎ। শেখপুরারই বাসিন্দা নাসির হুসেনকে বিয়ে করেছেন তিনি। লাহৌরের পুলিশের দাবি, পাকিস্তানে আসার এক দিন পরেই তিনি চলে যান শেখপুরায়। ভারত থেকে যাওয়া অন্য পুণ্যার্থীরা ওই দিন নানকানা সাহিব ঘুরতে গেলেও সর্বজিৎ সেখানে যাননি। পরিবর্তে নাসিরের সঙ্গে তিনি চলে যান শেখপুরায়। তার পর থেকেই বিভিন্ন ভাবে পুলিশ ওই দম্পতিকে হেনস্থা করছে বলে অভিযোগ উঠে এসেছে।
এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার সর্বজিৎ এবং নাসির দ্বারস্থ হন লাহৌর হাই কোর্টের। পুলিশ শেখপুরার ফারুকাবাদে তাঁদের বাড়িতে বেআইনি ভাবে হানা দিচ্ছে বলে আদালতে অভিযোগ জানান দম্পতি। শুধু তা-ই নয়, বিয়ে ভাঙার জন্যও তাঁদের চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। আদালতে জমা দেওয়া ওকালতনামায় সর্বজিৎ জানান, তাঁর স্বামী পাকিস্তানি নাগরিক। তিনি নিজেও ভারতীয় দূতাবাসের কাছে আবেদন করেছেন ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করার জন্য। তিনি পাকিস্তানি নাগরিকত্ব নিতে চান, তা-ও জানান আদালতে। লাহৌর হাই কোর্টের বিচারপতি ফারুক হায়দার পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন, কোনও ভাবেই ওই দম্পতিকে হেনস্থা করা চলবে না।