কোন কৌশলে ওই কর্মীদের কীর্তি ধরা পড়েছে, তা নিয়ে নিজস্ব তত্ত্ব খাড়া করেছেন শেয়ার বাজারের এক বিনিয়োগকারী। প্রতীকী ছবি।
বাড়ি থেকে কাজের ফাঁকে অন্য তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার চাকরি করা ৩০০ কর্মীদের ছাঁটাই করেছে উইপ্রো। তবে এ হেন কীর্তি কী ভাবে তাদের গোচরে এল, তা খোলসা করেনি বহুজাতিক সংস্থাটি। যদিও কোন কৌশলে ওই কর্মীদের কীর্তি ধরা পড়েছে, তা নিয়ে নিজস্ব তত্ত্ব খাড়া করেছেন শেয়ার বাজারের এক বিনিয়োগকারী। সে তত্ত্ব নিয়েই বিস্তর হইচই শুরু হয়েছে সমাজমাধ্যমে।
রাজীব মেহতা নামে ওই বিনিয়োগকারী টুইটারে নিজের তত্ত্ব তুলে ধরেছেন। ভাইরাল হওয়া ওই টুইটে রাজীব লিখেছেন, ‘‘উইপ্রো-র ৩০০ কর্মী বাড়ি থেকে কাজের সুযোগ নিয়ে তার পাশাপাশি অন্যত্র চাকরি করতেন। সে জন্য তাঁদের ছাঁটাই করা হয়েছে।’’ উইপ্রো অবশ্য ওই কর্মীদের ‘প্রতারক’ তকমা দিয়েছে। সেই সঙ্গে জানিয়েছে, উইপ্রো-য় কাজের পাশাপাশি তাদের প্রতিপক্ষ সংস্থায় চাকরির জন্য কর্মীদের ছাঁটাই করা হয়েছে। এ নিয়ে রাজীবের কটাক্ষ, ‘‘একই দক্ষতা দ্বিগুণ ডেলিভারি! একই ওয়াই-ফাই ব্যবহার করে দু’টো আলাদা ল্যাপটপে ২টি ভিন্ন খদ্দেরের কাজ করা— সবই নিজের শহরে বাড়ির আরামে বলে চলছিল।’’ এর পর প্রশ্ন তুলেছেন রাজীব। ‘‘ওঁদের ধরা তো অসম্ভব ছিল। তা হলে কী ভাবে তাঁরা ধরা পড়লেন?’’ টুইটারে নিজের প্রশ্নের জবাবও তিনি দিয়েছেন— ‘‘এটি হল সবচেয়ে নিরীহ চেহারার প্রভিডেন্ট ফান্ডের অবদান।’’
প্রসঙ্গত, সরকারি-বেসরকারি সংস্থায় যে কর্মীরা প্রভিডেন্ট ফান্ড (পিএফ)-এর আওতায় রয়েছেন, তাঁদের বেতনের একাংশ জমা পড়ে এই খাতে। সেই তহবিলে সংস্থা এবং কর্মীর সমান অবদান বাধ্যতামূলক। এর অন্যথা হলে তাতে আইনত অপরাধ।
রাজীবের তত্ত্ব অনুযায়ী, ‘‘বেতন জমা করার জন্য স্যালারি অ্যাকাউন্ট খোলার সময় কর্মীর প্যান, আধার নম্বর জেনে নেয় সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক। পিএফ জমা দেওয়ার জন্য একই কাজ করা হয়। ফলে এই কর্মীদের পক্ষে নিজের ২টি আর্থিক ও ভৌগোলিক পরিচয় তৈরি করা প্রায় অসম্ভব।’’ তাঁর দাবি, ‘‘পিএফ কর্তৃপক্ষ দৈনিক ‘ডি-ডুপ্লিকেশন অ্যালগরিদ্ম’ চালিয়ে খতিয়ে দেখতে থাকেন, কারও নামে ভুল করে দ্বিগুণ (অর্থ) জমা দেওয়া হয়েছে কি না। ওই কর্মীদের খাতে একাধিক অর্থরাশি জমা পড়ায় তাঁরা ধরা পড়ে গিয়েছেন।’’
রাজীবের এই তত্ত্ব নিয়ে মুখ খোলেননি পিএফ কর্তৃপক্ষ। তবে তাঁর ভাইরাল টুইট নিয়ে আড়াআড়ি ভাগ হয়ে গিয়েছে সমাজমাধ্যম। প্রশংসার পাশাপাশি কটাক্ষের শিকারও হয়েছেন রাজীব। অভিষেক মোরে নামে এক জনের মতে, ‘‘ওই ৩০০ কর্মী দ্বিগুণ কাজ করছেন... তাঁদের পরিবার সামলাতে অতিরিক্ত আয় করার চেষ্টা করছেন।’’
কর্মী-ছাঁটাইয়ের পর তোপের মুখে পড়েছিলেন উইপ্রো-র চেয়ারম্যান রিশাদ প্রেমজি। তবে তাঁর দাবি, গানের দলের সদস্য হিসাবে সপ্তাহান্তে গানবাজনা করার তুলনায় একই চাকরির সঙ্গে গোপনে অন্যত্র কাজ করাটা ‘সহজ ভাষায় প্রতারণা করা’।